ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমানঃ হাট বসেছে শুক্রবারে, বক্সীগঞ্জের পদ্মাপাড়ে - এবার বর্ধমানের তেলিপুকুর সুকান্ত স্মৃতি সংঘের পুজো মণ্ডপের থিম 'মা এলো রে মাটির বাংলায়, মানুষের হাটে।' জীবন্ত মানুষ, আলো আর শব্দধ্বনির মাধ্যমে তেলিপুকুরের এই পুজো মণ্ডপকেই সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। মণ্ডপ সজ্জা করছেন বিখ্যাত শিল্পী স্বপন পাল। তিনি জানিয়েছেন, রবীন্দ্রনাথের হাট কবিতা অবলম্বনে গড়ে তোলা হচ্ছে এই পুজো মণ্ডপ। গোটা থিমকে ফুটিয়ে তুলতে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার ১৪জন শিল্পীকে নিয়ে আসা হচ্ছে। রীতিমত অভিনয়ের মাধ্যমে এই থিমকে দর্শকদের সামনে ফুটিয়ে তুলবেন তাঁরা। খড়, হোগলা পাতা, চট আর সিমেণ্ট দিয়ে সজ্জিত করা হচ্ছে গোটা মণ্ডপকে।
স্বপন বাবু জানিয়েছেন, রবীন্দ্রনাথের এই হাট কবিতা একটা বিশ্ব মানব প্রেমের প্রতীক। যেখানে হানিফ মিঞা আর পুরোহিত ভট্টাচার্য্য সেই প্রতীকের কাণ্ডারী। যাঁরা দেখিয়েছেন, সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে বিভেদ নয়। একাত্মতা হয়ে থাকাই প্রকৃত মানব প্রেম। আর বিশ্ব এই মানবপ্রেমকে ফুটিয়ে তুলতেই রবীন্দ্রনাথের এই হাট কবিতা অবলম্বনে তেলিপুকুরে তৈরী করা হয়েছে 'বক্সীগঞ্জের হাট'। থাকছে কুমোর পাড়ার গরুর গাড়ীতে বোঝাই করা কলসী হাঁড়ি। গাড়ি চালক বংশীবদন। থাকছে সঙ্গে ভাগ্নে মদন। থাকছে উচ্ছে, বেগুন, পটল, মূলো থেকে অন্ধ কানাই, যিনি পথের ওপরে বসে ভিক্ষা করছে।
স্বপনবাবু জানিয়েছেন, গোটা পরিবেশকে দর্শকদের মনোরঞ্জনের জন্য চিত্তাকর্ষক করে ফুটিয়ে তুলতে আলোকশিল্পী বিপ্লব মল্লিক ব্যবহার করছেন লাইট এণ্ড সাউণ্ড। পদ্মানদীর ঘাট তৈরী করা হয়েছে। যেখানে পুজোর ছুটিতে শহরের মানুষ গ্রামে আসছেন। কোলাহলে ভর্তি লঞ্চঘাট। আনন্দে মাতোয়ারা বক্সীগঞ্জ। স্বপনবাবু জানিয়েছেন, গোটা থিমকে ফুটিয়ে তুলতে তৈরী করা হয়েছে রবীন্দ্রনাথের কল্পনার সেই হাট। যেখানে ধাপে ধাপে কবিগুরুর সেকালের 'হাট' কে দর্শকদের সামনে তুলে আনা হয়েছে।
থাকছে পরিবেশের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে প্রায় ১৫০ বছর পিছিয়ে গিয়ে ডাকের সাজের দুর্গা প্রতিমা। প্রতিমা তৈরী করছেন মঙ্গল পাল। ক্লাব সভাপতি রঞ্জিত হালদার জানিয়েছেন,বর্ধমানের বুকে এই ধরণের থিম প্রথম। অভিনব এই থিম দেখতে জনস্রোত নামবে তেলিপুকুরের এই সুকান্ত সংঘের পুজো মণ্ডপে - এমনটাই তাঁরা আশা করছেন। পুজোর বাজেট প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা।