Headlines
Loading...
সকাল যদি আকন্দের হয় বিকেল গেল গোলাপের দখলে

সকাল যদি আকন্দের হয় বিকেল গেল গোলাপের দখলে




ফোকাস বেঙ্গল নিউজ ডেস্কঃ ১৪ ফেব্রুয়ারী দিনটি পৃথিবী জুড়ে মনের ক্যালেন্ডারে নির্দিষ্ট হয়ে আছে 'ভ্যালেন্টাইন ডে' হিসাবে। সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের আত্মত্যাগের দিনটি ভালবাসার জন্য এমন করে বার্তা দেবে তা হয়তো ভাবতে পারেননি তার মৃত্যুদাতা। বিদেশের গন্ডী ছাড়িয়ে সেই বার্তায় আজ দোলায়িত আসমুদ্রহিমাচল। বুধবার তারই নানা ঝলক চোখে পড়েছে শহর বর্ধমানের বুকেও। 
তবে এবারের ১৪ ফেব্রুয়ারী দিনটি কেবল বিদেশী 'সন্ত'-এর একার জন্য ছিলনা। দিনটি ছিল ভারত উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ সন্ন্যাসী শ্মশানবাসী শিবেরও। কারণ এদিনই ছিল মহাশিবরাত্রি।

 মৃত্যুদণ্ডের সম্ভাবনার কথা জেনেও দেশের রাজার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে ভালবাসার পাত্রপাত্রীকে বিবাহের মাধ্যমে সামাজিক বন্ধনে বেঁধে দেবার সাহস দেখিয়েছিলেন সেন্ট ভ্যালেন্টাইন। আর সমুদ্রমন্থনে ওঠা গরল নিজের গলায় ধারণ করে বিশ্ব সংসারকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন নীলকণ্ঠ মহাদেব। প্রাচ্য ও পাশ্চ্যাত্যের  প্রেমের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রতীকদ্বয় আজ মিলে গেলেন ১৪ ফেব্রুয়ারী তারিখের মাহাত্ম্যে। 

সেদিক দিয়ে দিনটি ছিল একদিকে গোলাপের অন্যদিকে আকন্দের। শিবরাত্রি উপলক্ষে বর্ধমানের বিভিন্ন শিব মন্দিরে সকাল থেকেই উপচে পড়া ভিড় ছিল ভক্তদের। ধুতুরা-বেলপাতা আর আকন্দ ফুলে শিবকে সন্তুষ্ট করার জন্য বাজারে বিপুল চাহিদা ছিল পুজোর এই উপকরণের। শহরের কিশোর- কিশোরী থেকে মাঝ বয়সী এমনকি বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, শিবের উপাসনায় বাধা নেই কারোরই। তবে যে যেভাবেই অর্চনা করুক, সদ্য যুবাদের কাছে শিবরাত্রি মানেই শিবের মত পতি পাওয়ার বাসনায় দেবাদিদেবকে সন্তুষ্ট করা। তাই ১৪ ফেব্রুয়ারীর শিবরাত্রি যেন তাদের কাছে অন্য মাত্রা নিয়ে এল এবার। সকালটা তারা উৎসর্গ করল অরুণকান্তি যোগীকেই।


অন্যদিকে ভ্যালেন্টাইন ডে-কে চুটিয়ে উপভোগ করার দৃশ্যও ধরা পড়ল শহরের নানা প্রান্তে। কৃষ্ণসায়র পার্ক থেকে শুরু করে আইনক্স,কিম্বা শহরের রেস্টুরেন্ট থেকে শপিং মল সব জায়গায় ছিল উঠতি বয়সের ছেলে মেয়েদের ভিড়। প্রেম নিবেদনের এই দিনটার কোন মুহূর্তই নষ্ট করার ইচ্ছা আজ ছিলনা প্রেমিক প্রেমিকাদের। তবে বুধবারের সকালটা যদি আকন্দের হয়,বিকেলের পর সেটা চলে যায় গোলাপের দখলে। দৃশ্যতই এদিন দেদার বিকিয়েছে গোলাপ। 


তবে আর যাইহোক, শিব আর ভ্যালেন্টাইনে আবার কবে মত্ত হতে পারবে তারা সেই প্রশ্ন আজ প্রাসঙ্গিক নয়। বরং প্রেম আজও প্রথম সকালের মতো করেই আসে। আর প্রেমিককুলের গলায় শোনা যায়, ‘সকালের কৈশরে তোমাকে চাই, সন্ধের অবকাশে তোমাকে চাই...শেষ পর্যন্ত তোমাকে চাই।’ সব প্রেম পরিণতি হয়তো পায় না, হয়তো চায়ও না। তা বলে প্রেমের সময়ে বুকের গভীরে যে ধুকপুকানি, তা চিরন্তন।
                                                                                                          ছবি - সুরজ প্রসাদ 


(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});