Headlines
Loading...
চাকরি দেবার নামে অর্থ আদায়কারী এক প্রতারণা চক্রের পর্দা ফাঁস বর্ধমানে

চাকরি দেবার নামে অর্থ আদায়কারী এক প্রতারণা চক্রের পর্দা ফাঁস বর্ধমানে


ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: চাকরি দেবার নাম করে রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়কারী এক প্রতারণা চক্রের পর্দা ফাঁস হল বুধবার বর্ধমানে। রণজিৎ হাজরা নামে প্রতারক চক্রের পান্ডাকে আটক করেছে  বর্ধমান থানার পুলিশ। নিজেকে নাসার বিজ্ঞানী বলে পরিচয় দিয়ে রেলে চাকরি করে দেবার নাম করে বেকার যুবক-যুবতীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের  অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। আর এই অভিযোগ এনেছে খোদ এই সংস্থার সঙ্গে জড়িত সদস্যরাই। 
বুধবার বর্ধমানের গুডস শেড রোডের একটি সভাগৃহে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে নেভারল্যাণ্ডস এফডিআই পিআরডি এ্যাডমিনিষ্ট্রেশন নামে একটি সংস্থা। এই অনুষ্ঠানেই নিজেকে নাসার একজন বিজ্ঞানী বলে পরিচয় দেবার পাশাপাশি ভারত সরকার ও সার্কভুক্ত দেশগুলির অন্যতম উপদেষ্টা বলেও নিজেকে জাহির করেন রণজিত হাজরা। অনুষ্ঠানে কয়েক হাজার পুরুষ মহিলার উপস্থিতিতে নিজেকে বিশ্বপিতা বলেও দাবী করেন তিনি। তাঁর এই বক্তব্যের পরই রীতিমত শোরগোল পড়ে সভাগৃহে। 
এরপর একটি সাংবাদিক সম্মেলনে মিলিত হন রণজিৎ হাজরা সহ সংস্থার অন্যান্যরা। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে নিজেকে নাসার বিজ্ঞানী বলার স্বপক্ষে প্রমাণ দাখিল করার প্রসঙ্গে উত্তেজিত হয়ে পড়েন রণজিৎ হাজরা। এরপরই এই সংস্থার বিরুদ্ধে উপস্থিত বহু ছেলেমেয়ে অভিযোগ জানায় যে ২০১৩ সাল থেকে তাদেরকে রেলে  চাকরি করে দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সংস্থার কর্মকর্তারা লক্ষ লক্ষ টাকা দফায় দফায় নিয়েছে। 
বাঁকুড়ার জয়রামবাটির মসিনাপুরের বাসিন্দা বাপিচরণ দাস অভিযোগ করেন, তিনি তাঁর নিজের এবং বিভিন্ন আত্মীয়দের জন্য বেশ কয়েক দফায় ১ লক্ষ ৪২ হাজার টাকা দিয়েছেন এই সংস্থার কর্মকর্তা কার্তিক রুইদাসকে। এমনকি ভূয়ো ওয়েবসাইটে তাদের নামের প্যানেলও প্রকাশ করা হয়। চলতি ফেব্রুয়ারী মাসের ২৮ তারিখেই তাদের নিয়োগপত্র দেবার কথাও ছিল বলে তিনি উপস্থিত সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের জানান। আর এরপরই রণজিৎ হাজরাকে এই বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি উত্তেজিত হয়ে পড়েন। কার্যত ভণ্ডুল হয়ে যায় সংস্থার আয়োজন করা সভাও। এদিকে গন্ডগোলের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আটক করে নিয়ে যায় রণজিৎ হাজরাকে। যদিও পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে বাকি কর্মকর্তারা তড়িঘড়ি গা ঢাকা দেন। 
এদিন রণজিৎ হাজরা সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন,কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে তপশীলি জাতি, উপজাতিদের উন্নয়ন নিয়ে বিজ্ঞান সম্মতভাবে তাঁর একটি গোপন চুক্তি হয়েছে। যা ভারত সরকার গ্রহণ করেছে। যদিও তিনি এব্যাপারেও কিছু প্রমাণ দাখিল করতে পারেননি।
এদিন উপস্থিত বেকার যুবক যুবতীরা জানিয়েছেন, তাদের ভুল বুঝিয়ে এভাবেই গোটা রাজ্য জুড়ে একটি চক্র তৈরী করে প্রায় ১২ হাজার বেকার ছেলে মেয়ের কাছ থেকে চাকরী দেবার নাম করে অর্থ আদায় করেছে এই সংস্থা।এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শহরে। 
                                                                                                                   ছবি - সুরজ প্রসাদ 

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});