সৌরীশ দে,বর্ধমান: বর্ধমান রমনা বাগান জুলজিকাল পার্ক থেকে বিদায় নিল শতাধিক হরিণ। আর তার পরিবর্তে আগামী মাসের মধ্যেই আগমন ঘটতে চলেছে বিভিন্ন প্রজাতির বেশ কিছু নতুন অতিথির। যদিও বর্তমানে প্রায় ১৬০টি চিতল হরিনের মধ্যে ৩০ থেকে ৩৫টি কে রেখে দেওয়া হচ্ছে এই পার্কেই। রবিবার জেলা বনাধিকারিক দেবাশিস শর্মা জানান, গত ৭দিন ধরে রমনা বাগানের হরিণ ধরার কাজ চলছিল। কলকাতা ওয়াইল্ড লাইফ অথরিরিটি এবং বর্ধমান জুলজিকাল পার্ক অথরিটির যৌথ উদ্যোগে এই 'ডিয়ার ক্যাপচারিং' এর কাজ চলছিল। যার জন্য গত ১১ফেব্রুয়ারি থেকে ১৮ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দর্শক প্রবেশ সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছিল। আগামীকাল অর্থাৎ সোমবার থেকে পুনরায় দর্শকদের জন্য এই জু - এর দরজা খুলে দেওয়া হবে।
দেবাশিস বাবু জানিয়েছেন, বর্ধমান থেকে হরিণ গুলিকে পাঠানো হল বক্সা অভয়ারণ্যে।পাশাপাশি বাকি হরিনদের রাখা হবে নতুন ভাবে সাজিয়ে তোলা এনক্লোজারে। তিনি জানান,হরিনদের পাশাপাশি এখন দর্শকরা বেশ কিছু নতুন পশু পক্ষী দেখার সুযোগ পাবেন বর্ধমানের এই পার্কে।খুব শীঘ্রই কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানা,বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প,দার্জিলিং প্রভৃতি জায়গা থেকে নিয়ে আসা হচ্ছে ঘড়িয়াল,ইমু,বাঘ,ময়ূর সহ নানান পশু পক্ষী।
বনাধিকারিক জানিয়েছেন, দর্শক মনোরঞ্জনের জন্য চিড়িয়াখানাকে গত ২ বছর ধরেই ঢেলে সাজিয়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। সম্প্রতি চিড়িয়াখানার এই কাজ খতিয়ে দেখতে এসে ৪৫দিনের নির্দিষ্ট সময়সীমাও দিয়ে যান জু অথরিটির আধিকারিকরা। বন দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বর্ধমানের এই রমনাবাগানের মিনি জু-কে পুরোপুরি ঢেলে সাজাতে ২০৩৫ সালের মধ্যে কয়েকটি ধাপে কাজ শুরু করা হয়েছে। থাকছে লেপার্ড, শ্লথ ডিয়ার, দুটি চিতাবাঘ। থাকছে প্রায় ৩০টি চিতল হরিণ, শাম্বার হরিণ,ঘড়িয়াল, ময়ূর, সারসের মত বড় পাখি। আরও থাকছে রেসার্স মাঙ্কি, লেঙ্গুর, বাঁদর, খরগোশ, সজারুও।
ইতিমধ্যেই এই নতুন অতিথিদের জন্য এনক্লোজারের কাজ প্রায় সম্পূর্ণ। এখন শুধু অপেক্ষা অতিথিদের আসার। বনাধিকারিকের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে,সম্পূর্ণ নতুন ভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে এই পার্ককে।এমনকি এখানে তৈরি করা হয়েছে দর্শকদের বিশ্রাম নেওয়ার ও বসার জন্য আলাদা জায়গা।
উল্লেখ্য, বাইরের কোলাহল বা গাড়ির আওয়াজ যাতে পশু পাখিদের বিরক্তির কারণ না হয়ে দাঁড়ায়, সেজন্য ইতিমধ্যেই বাবুরবাগ থেকে রমনাবাগানের পাশ দিয়ে যাওয়া রাস্তাকে সাধারণ মানুষের জন্য সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ তবে, সাধারণের জন্য বন্ধ হলেও বনকর্মীরা এই পথে যাতায়াত করতে পারবেন৷ আগামী মার্চ মাসের মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে চলেছে বলে বনদপ্তর সূত্রে জানা গেছে।