ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দালাল রাজ যে এখনো সক্রিয় মঙ্গলবার তা আরো একবার প্রমাণিত হলো। রোগীদের ভুল বুঝিয়ে বেসরকারি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়ার সময় খোদ কর্তব্যরত সিভিক ভলেন্টিয়ারদের হাতে ধরা পড়লো এক দালাল। যথারীতি দালাল ধরা পড়ার ঘটনা পাঁচ কান হতেই অন্য রোগীদের পরিজনেরা হাসপাতাল চত্বরেই উত্তম মধ্যম দিয়ে দেয় ধৃতকে। সিভিক ভলান্টিয়াররা পাবলিকের হাত থেকে বাঁচিয়ে দালালকে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। পরে বর্ধমান থানার পুলিশ এসে শেখ নাজির নামে ওই দালালকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে,মঙ্গলবার সকালে এক রোগীকে বর্ধমান হাসপাতাল থেকে বেসরকারি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল অভিযুক্ত ওই ব্যাক্তি। সন্দেহ হওয়ায় সিভিক ভলান্টিয়াররা ধরে ফেলেন ওই ব্যাক্তিকে। জিজ্ঞাসাবাদের পর তার কাছ থেকে অনেকগুলি ভিজিটিং কার্ড উদ্ধার হয়। ভিজিটং কার্ডে মোবাইল নম্বর ছাড়াও বর্ধমানের যে কোনও নার্সিংহোমে চোখের রোগী ও যে কোনও রোগী নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হয় বলে লেখা ছিল।
এদিকে দালাল ধরা পড়ার ঘটনায় আবার বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। একসময় বর্ধমান হাসপাতালে দালালদের খপ্পরে পরে অনেক রোগীর পরিবার সর্বশান্ত হয়েছে। রোগীকে ভুল বুঝিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটতো প্রায়ই। রোগীদের হাসপাতালের বাইরে প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরিতে রক্ত-সহ অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর জন্যও দালালচক্র সক্রিয় ছিল। দালালরাজ নির্মূল করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করে। গোটা হাসপাতাল চত্বর জুড়ে বাড়ানো হয় নজরদারি। তারই ফলশ্রুতি হিসাবে কিছুদিন দালালদের দাপট বাস্তবে অনেকটাই কমেছিল। কিন্তু কয়েকমাস যেতে না যেতেই বর্ধমান হাসপাতাল যে দালালদের নিশ্চিন্ত ঠিকানা,তা আজকের ঘটনা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো বলে হাসপাতালে চিকিৎসা করতে আসা রোগির পরিবারের লোকেরা জানালেন।
হাসপাতাল সুপার উৎপল দাঁ জানান, দালালরাজ এখন এই হাসপাতালে নেই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সদা সতর্ক আছে দালালরাজ রুখতে। তাই এদিন হাতেনাতে ধরা পড়েছে এক দালাল। দালাল রুখতে সবরকম পদক্ষেপ করা হচ্ছে। এর আগেও বেশ কয়েকজন দালালকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।