Headlines
Loading...
 এবার শীতে ভ্রমণ পিপাসু দর্শকদের কাছে তুলে ধরা হবে বর্ধমান রমনা বাগানের ইতিহাস।

এবার শীতে ভ্রমণ পিপাসু দর্শকদের কাছে তুলে ধরা হবে বর্ধমান রমনা বাগানের ইতিহাস।


অদিতি চট্টোপাধ্যায়,বৰ্ধমান : শীত আসছে। রমনা বাগানে ভ্ৰমণ পিপাসুদের আগমনের সংখ্যাও  বাড়ছে। রমনা বাগান জুয়োলজিক্যাল ফরেস্ট আধিকারিক দেবাশীষ শর্মা জানান, এবারে শীতকালীন ভ্রমণে যাঁরা এখানে বেড়াতে আসবেন তাঁদের সামনে তুলে ধরা হবে প্রাচীন এই রমনা বাগানের ইতিহাস।মূল ফটক দিয়ে প্রবেশের পর বেশ কয়েকটি জায়গায় চিত্র সহকারে থাকবে এখানের নানান ঐতিহাসিক বর্ণনা। তিনি আরও জানান, দর্শকদের মনোরঞ্জনের জন্য আগামী জানুয়ারি মাসে নুতুন কিছু পশু পাখিও এখানে নিয়ে আসা হচ্ছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিশেষ প্রজাতির বার্কিং ডিয়ার। স্বাভাবিকভাবেই এবারের শীতে বর্ধমানের রমনা বাগান যে আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্র হতে চলেছে তা বলাইবাহুল্য।


উল্লেখ্য, আনুমানিক ১৯৬০ সালে বর্ধমানরাজা  বিজয়চাঁদের আমলে এই রমনা বাগান নামক রিজার্ভ ফরেস্টটি গঠিত হয়। তৎকালীন রাজা বিজয়চাঁদ মোট ১৪.৩১ একর জায়গায় এই অভায়ারণ্য গড়ে তোলেন। প্রথমে এটি রিজার্ভ ফরেস্ট থাকলেও পরবর্তীকালে এটি ডিয়ার পার্ক সংরক্ষণ ফরেস্টে  পরিণত হয়। সংরক্ষিত ফরেস্টে পরিণত হবার পর প্রথম এই অরণ্যে ৬টি হরিণ ও চিতাবাঘ বন দফতরের তরফ থেকে নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে এই ফরেস্টটি  আলিপুর চিড়িয়াখানার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত। রমনা বাগানে ভাল্লুক,হরিণ,কুমির,মুয়ূর,চীনা-মুরগি,বাঁদর ,টিয়া পাখি,বাজ পাখি, ককটেল,পেলিকান  প্রভৃতি জীবজন্তু থাকার পাশাপাশি মহারাজের নিজের হাতে লাগানো শাল,সেগুন,মেহগনি গাছ এখনোও এই অরণ্যের অন্যতম আকর্ষণ।


বর্ধমানের  বিশিষ্ট  ইতিহাস গবেষক নিরদবরণ সরকারের কথায়, রমনা বাগান মূলত ব্রাহ্ম সমাজের প্রতিস্থাতা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের আমলে প্রতিস্থা করা হয়। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবাধ যাতায়াত ছিল এই রমনা বাগানে। জনশ্রুতি অনুসারে এই একই সময়ে বিজয় বাহারও স্থাপিত হয়, তবে রমনা বাগানের আকর্ষণ আজও সমান ভাবে ভ্রমণ পিপাসু মানুষদের আকৃষ্ট করে।
রমনা বাগান স্থাপিত হওয়ায় আনুমানিক ১৮ বছর পর ডিয়ার পার্ক স্থাপিত হয়।  ১৯৪৯ সালে অবিভক্ত বর্ধমান জেলার ফরেস্ট অফিসটি এখানে গঠিত হয়। পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলায় বর্তমানে মোট ২টি ফরেস্ট ডিভিশন অফিস আছে, একটি পূর্ব বর্ধমানের রমনা বাগান ফরেস্ট ডিভিশন অফিস এবং আর একটি পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর ফরেস্ট ডিভিশন অফিস।


পূর্ব বর্ধমান জেলার ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার দেবাশীষ শৰ্মা জানান, সম্প্রতি রমনা বাগান অভয়ারণ্যের প্রতি মানুষকে আরও বেশি আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে জেলা জুড়ে মোট সাড়ে তিন লক্ষ চারা গাছ জেলার বিভিন্ন প্রান্তের গ্রামবাসীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। উপলক্ষ ছিল অরণ্য সপ্তাহ পালন।


শাল,সেগুন,দেবদারু, কালো-শিরিষ,কাজু-বাদাম,জাম প্রভৃতি গাছে ঘেরা এখানকার প্রাচীন নির্জনতা, বন্য-প্রাণীদের সন্তর্পনে ঘোরাফেরা, ময়ূরের ডাক,নানান শব্দে পাখিদের কলতান মুখর রমনা বাগান অভয়ারণ্যের পরিবেশ তাই উৎসুক ভ্রমণ পিপাসুদের বারবার আসতে এখানে বাধ্য করে।   
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});