Headlines
Loading...
বর্ধমানের দুই ডাক্তারের অন্তকর্লহে কার্যত প্রসবের আগেই মৃত্যু হলো গর্ভস্থ সন্তানের।প্রশাসনের দ্বারস্থ পরিবার।

বর্ধমানের দুই ডাক্তারের অন্তকর্লহে কার্যত প্রসবের আগেই মৃত্যু হলো গর্ভস্থ সন্তানের।প্রশাসনের দ্বারস্থ পরিবার।

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: দুই ডাক্তারের অন্তকর্লহে কার্যত প্রসবের আগেই মৃত্যু হলো গর্ভস্থ সন্তানের। আর এই অমানবিক ঘটনার অভিযোগও দায়ের করা হল জেলা প্রশাসনের কাছে। আউশগ্রাম ২ ব্লকের ব্লক ভূমি সংস্কার দপ্তরের আধিকারিকের দায়ের করা এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে প্রশাসনিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ব্লক ভূমি আধিকারিক দীপংকর কুমার রায় জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং জেলাশাসকের কাছে মঙ্গলবার লিখিত অভিযোগে জানান, বর্ধমান শহরের উপকণ্ঠে একটি বেসরকারী হাসপাতালের এবং সেটির কর্ণধারের উদাসীনতায় তার স্ত্রীর গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। এমনকি দুই ডাক্তারের বৈরতায় তার স্ত্রীর জীবনও বিপন্ন হতে বসেছিল। দীপংকরবাবু জানান, তার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হবার পর বর্ধমানের ওই বেসরকারী হাসপাতালে ডাক্তার প্রীতম পালের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা শুরু করেন। দীর্ঘ প্রায় ৮ মাস ধরে লাগাতার পরীক্ষা নিরীক্ষার পর গত ৩ অক্টোবর ডা. প্রীতম পাল তাকে ২০ তারিখ প্রসবের জন্য নির্দিষ্ট দিন দিয়ে দেন।
এরপর ৫ অক্টোবর সকালে স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে ওই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে গিয়ে তারা জানতে পারেন ডা. প্রীতম পাল ওই হাসপাতালে আর চিকিৎসা করেন না, তিনি খোসবাগানের একটি সেণ্টারে বসছেন। এরপর তার সঙ্গে তিনি যোগাযোগও করেন। পরে ওই হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক এ. চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে ভর্তিও হন। কিন্তু ডা. চৌধুরী তাদের
জানিয়ে দেন, শিশুর কোনো হার্টবিট পাওয়া যাচ্ছে না।দীপঙ্করবাবুর অভিযোগ, রোগীর অবস্থা সংকটজনক হয়ে পড়লেও তাদের প্রায় ৫ কিমি দূরে খোসবাগান পাঠানো হয় ইউএসজি করাতে। অথচ সেই পরিস্থিতিতে ৫ - ৬ কিলোমিটার দূরে গুরুতর অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে গেলে মা ও শিশুর জীবন সংশয় হতে পারে জানিয়ে তিনি বারবার সিজার করার আবেদনও করেন। কিন্তু তাতে রাজী না হয়ে কার্যত দুই ডাক্তারের বিরোধের জেরে তাদের হয়রানির মধ্যে ফেলা হয়।

তিনি জানান, এরপর ওই অবস্থায় তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে খোসবাগানে আসেন এবং ইউএসজি করানোর পর স্ত্রী জুলি রায়কে খোসবাগানেই একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করান। সেখানে ডা. প্রীতম পাল তার সিজার করেন। যথারীতি অনেক দেরী হয়ে যাওয়ায় তার মৃত পুত্র সন্তান প্রসব করান।
এই ঘটনায় দীপংকরবাবু ওই বেসরকারী হাসপাতালের কর্ণধার তথা চিকিৎসক ডা. সৌমেন্দু সাহা শিকদারের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবার এবং ভবিষ্যতে অন্য কোনো রোগীর সঙ্গে যাতে এই ধরণের ব্যবহার না করা হয় সে ব্যাপারে আবেদন জানিয়েছেন।
এব্যাপারে ডা. সাহা শিকদার জানান, তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা ঠিক নয়। ওই প্রসূতিকে ভর্তি করানো হয়নি। এমনকি তিনি নিজে পোর্টেবল ইউএসজি মেশিন দিয়ে জুলি রায়ের ইউএসজি করেও দেখেন। তখনই তিনি জানিয়ে দেন শিশুর কোনো হার্টবিট পাওয়া যাচ্ছে না। এরপরই মেডিকেল নিয়ম অনুযায়ী তিনি দীপংকরবাবুকে একটি ইউএসজি করিয়ে আনার জন্য বলেন, যার ভিত্তিতে তারা সিজার করতে পারবেন। এরপরই দীপংকরবাবু চলে যান। আর আসেননি তাদের কাছে। ফলে তাদের বিরুদ্ধে উদাসীনতা বা নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ ঠিক নয়। পাশাপাশি তিনি জানান, এই হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের জন্য সর্বক্ষণের ইউএসজি চালু থাকলেও বহিরাগতদের ক্ষেত্রে বাইরে থেকেই করিয়ে আনতে হয়। ডা. সাহা শিকদার জানান, শুধু তিনিই নন, ডা. পালও দীপংকরবাবুকে ৩ অক্টোবর জানিয়ে দিয়েছিলেন বেবির অবস্থা ভাল নয়, ইউএসজি করে দেখে নেওয়ারও পরামর্শ দেন ডা. পাল। কিন্তু দীপংকরবাবু তা করেননি। ফলে এক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সঠিক নয়

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});