
ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান:ফের বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসকের গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠলো। আর বুধবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ালো বর্ধমান হাসপাতাল চত্বরে। মৃতের নাম আজিম সেখ (৬২) ।বাড়ি বর্ধমানের বাজেপ্রতাপপুরের মালিরবাগানের ঘোষপাড়ায়। মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে,বুধবার সকাল সাড়ে দশটার সময় পরিবারের লোকজন বুকে ব্যাথা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে আজিম সেখকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। অভিযোগ কর্তব্যরত চিকিৎসকরা রোগীর কোন চিকিৎসা না করেই তাকে আউটডোরে টিকিট করে রাধারাণী ওয়ার্ডের বক্ষ বিভাগে ভর্তির পরামর্শ দেন। এমনকি মৃতের ছেলে শেখ মনিরুলের অভিযোগ,কর্তব্যরত ডাক্তার (EMO) তার বাবাকে ছুঁয়েও দেখেনি। বারবার বলা সত্ত্বেও জরুরি ভিত্তিতে অক্সিজেন দেবারও ব্যবস্থা করেনি কেউ। এরপর টোটোয় করে রুগীকে বক্ষ বিভাগের সামনে নিয়ে গিয়ে ডাক্তারকে পরিস্থিতির কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বললেও বক্ষ বিভাগে কর্তব্যরত ডাক্তার তাদের অপেক্ষা করতে বলেন। এরই মধ্যে ইমার্জেন্সিতে নিয়ে আসা ও সেখান থেকে আবার অন্যত্র নিয়ে যাওয়ায় প্রায় আধ ঘন্টা অতিবাহিত হয়ে যায়। এরপর যখন চিকিৎসক এসে রুগীকে দেখেন তখন আজিম সেখকে মৃত বলে জানান। কার্যত আধঘন্টা বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরী বিভাগে বুকে ব্যাথা নিয়ে রুগী আজিম সেখ বিনা চিকিৎসায় পড়ে থাকেন। শেষে খোদ সরকারী হাসপাতালেই বিনা চিকিৎসায় মারা যায় আজিম সেখ।

এই ঘটনার পরই পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে। তারা বক্ষ বিভাগের সামনেই বিক্ষোভ দেখতে শুরু করেন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্প থেকে সদর থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হাসপাতালের সুপারের ঘরের সামনেও বিক্ষোভ দেখায় মৃতের পরিবারের লোকজন। চিকিৎসকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় ডেপুটি সুপার অমিতাভ সাহার কাছে।
ডেপুটি সুপার জানান, শ্বাসকষ্ট জনিত কারণে এক রোগী এদিন হাসপাতালে মারা গিয়েছেন। মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়েছি।গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে জরুরি বিভাগ থেকে সরাসরি কেন রাধারানী ওয়ার্ডে রোগীকে পাঠানো হলো না তা খতিয়ে দেখা হবে।
উল্লেখ্য ,গত কয়েক মাস ধরে বার বার বর্ধমান হাসপাতালের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে ।কখনও কর্তব্যে অবহেলা তো আবার কখনো ভুল চিকিৎসা আবার কোনো রোগী বা পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কর্তব্যরত ডাক্তার বা নার্সদের দুর্ব্যবহার। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রতিবারই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু ওই পর্যন্তই। বাস্তবে বদলায়নি হাসপাতালের আসল চিত্র। প্রশ্ন উঠেছে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে মুমূর্ষু রোগীকে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা আগে চিকিৎসা না করে কেন আউটডোরে টিকিট করার পরামর্শ দিলো তা তদন্ত করে দেখা হোক।
ছবি - সুরজ প্রসাদ
