Headlines
Loading...
সম্প্রীতির অন্য নজির।হিন্দু আবীরকে বাঁচাতে মহরমের শোভাযাত্রা বাতিল, চিকিৎসার টাকা জমাচ্ছে আমজ়াদরা।

সম্প্রীতির অন্য নজির।হিন্দু আবীরকে বাঁচাতে মহরমের শোভাযাত্রা বাতিল, চিকিৎসার টাকা জমাচ্ছে আমজ়াদরা।

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,খড়্গপুর: অনেক বিরোধ সত্ত্বেও বঙ্গীয় সমাজে স্বাভাবিক সম্প্রীতির ধারা আজও প্রবল। এক ধর্মের মানুষ অন্য ধর্মের উৎসবে যোগ দেন, তাকে সার্থক করে তুলতে হাতে হাত, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজও করেন। তবে এক অন্য কথা। অন্য নিদর্শন। কারণ সম্প্রীতিতে আগে মানুষ, পরে ধর্ম।
পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুরের সমাজ সংঘ ক্লাব পুরাতন বাজারে মহরমের শোভাযাত্রার আয়োজন করেছিল। তার জন্য ৫০ হাজার টাকা চাঁদাও উঠেছিল। যদিও মহরমের শোভাযাত্রা না করে ক্লাবের সদস্যরা প্রতিবেশী এক হিন্দু ক্যানসার আক্রান্ত রোগীকে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নেন। মোবাইল দোকানের মালিক আবীর ভুঁইঞা(৩৫) ক্যানসারে ভুগছেন। ইতিমধ্যে তাঁর হাতে ৬ হাজার টাকা তুলে দিয়েছে সমাজ সংঘ ক্লাবের সদস্যরা। বর্তমানে দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে আবীর ভুঁইয়ার কেমোথেরাপি চলছে। তাঁর বোন ম্যারো প্রতিস্থাপন সহ চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন ১২ লাখ টাকা।
সমাজ সংঘ ক্লাবের সম্পাদক আমজাদ খান বলেন, “মহরমের শোভাযাত্রা প্রতিবছর করা যাবে। কিন্তু, আমাদের আগে জীবন বাঁচাতে হবে। আমরা টাকা তুলতে শুরু করেছি। শুক্রবার নমাজের পরে আমরা ইমামকে বলব এই বিষয়ে ঘোষণা করার জন্য। আমাদের শোভাযাত্রা বাজেটের থেকেও বেশি টাকা উঠবে বলে আশা করছি।”
বিষয়টি নিয়ে অভিভূত আবীর। রয়েছে প্রতিবেশীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। বলেন, “আমি অবশেষে সুস্থ হব কি না জানি না। কিন্তু, আমার প্রতিবেশীরা আমার জন্য যা করেছে তা আমার হৃদয় স্পর্শ করে গেছে।” গতবছরেই বাবা-মা ও ঠাকুমাকে হারিয়েছেন আবীর। তাঁর স্ত্রী সন্তানসম্ভবা।
আবীরের প্রতিবেশী রঞ্জন অ্যাশ জানান, এলাকার কিছু দুর্গাপুজো কমিটি রয়েছে। কিন্তু তাদের কেউ পুজোর খরচ কমিয়ে এই যুবককে সাহায্য করার বিষয়ে ভাবেনি।
খড়গপুরের পুরাতন বাজারের মহরম কমিটির সদস্য মহম্মদ বিলাল বলেন, “আমরা মানুষের সেবা করলে ঈশ্বর সন্তুষ্ট হবেন। উনি ক্যানসারে ভুগছেন এবং মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। আমাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত।”
বিষয়টি কানে যেতেই খড়গপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান বলেন, “আমরাও আবীরকে সাহায্য করার চেষ্টা করব।” এই নিদর্শনকে সেলাম জানিয়েছেন স্থানীয় কাউন্সিলর তুষার চৌধুরিও। তিনি জানান, এলাকায় একটি শীতলা মন্দির রয়েছে। মন্দিরের গেটটি এলাকার মুসলিমরা টাকা তুলে তৈরি করে দিয়েছেন। তিনি আরও জানান, মন্দিরের প্রসাদ মুসলিমদের মধ্যেও বিতরণ করা হয়।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});