
বিবি মল্লিক (৬০) মঙ্গলবার সকালে বাড়ির পাশে পালুই থেকে খড় আনতে যাওয়ার সময় বাড়ির মাটির দেওয়াল তার ওপরে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ায় গুরুতর জখম হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসার পর এদিন সকাল ১০টায় তার মৃত্যু হয়। অন্যদিকে, সোমবার সারা রাত ধরে অঝোরে বৃষ্টির মাঝেই ঘরে ঘুমিয়ে থাকার সময় সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছে নবম শ্রেণীর এক ছাত্রীর। মৃতের নাম সুমিতা হাঁসদা (১৪)।বাড়ি বর্ধমান থানার ছোটবেলুন গ্রামে। সুমিতা ছোটবেলুন হাইস্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল।মৃতার মা তথা কুড়মুন ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যা মালতি হাঁসদা জানিয়েছেন,রাতে খাওয়া দাওয়ার পর মেয়েকে নিয়ে ঘুমাতে যান তিনি।হঠ্যাৎ ১১ টা নাগাদ মেয়ের চিৎকারে ঘুম ভেঙে যাওয়ার পর দেখি একটি সাপ বিছানা থেকে নেমে যাচ্ছে।মেয়ের বাঁ হাতের আঙুলে কামড়ের দাগ দেখেই সঙ্গে সঙ্গে তাকে বর্ধমান হাসপাতালে নিয়ে আসলে এদিন সকালে তার মৃত্যু হয়।

অন্যদিকে আশ্বীনের এই অকাল ঝড় বৃষ্টিতে সোমবার বিকাল থেকে পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে জায়গায় জায়গায় গাছ উপড়ে পড়ে বিদ্যুত সহ সমস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত পূর্ব বর্ধমান জেলায় প্রায় ২৫০টি কাঁচাবাড়ির আংশিক ক্ষতির হিসাব পাওয়া গেছে। গোটা জেলা জুড়েই বিদ্যুত বিপর্যয়ের ঘটনায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে। মঙ্গলবার রাতের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপন দপ্তরের আধিকারিক বামাপদ কুণ্ডু জানিয়েছেন, এদিন ডিভিসি থেকে ২০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হতে পারে। সমস্ত নদীর জল স্বাভাবিক রয়েছে। জেলা কৃষি দপ্তরের যুগ্ম কৃষি আধিকারিক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত জেলায় কৃষির কোনো ক্ষতির খবর আসেনি। তবে বৃষ্টি চলতে থাকলে জেলার আউশধানের কিছু ক্ষতি হবার সম্ভাবনা রয়েছে।

জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডু জানিয়েছেন, সমস্ত জনপ্রতিনিধিদের নিজ নিজ এলাকায় থাকতে এবং ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে তালিকা তৈরী করতে বলা হয়েছে। বর্ধমান শহরের ৪নং ওয়ার্ডে প্রায় ১৫০ জলমগ্ন পরিবারকে উদ্ধার করে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, বুধবারই নবান্নে গত জুলাই মাসে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতির বিষয় নিয়ে সমস্ত জেলাশাসকদের নিয়ে বৈঠকে বসতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
ছবি - সুরজ প্রসাদ
ছবি - সুরজ প্রসাদ
