Headlines
Loading...
জয়ন্তী,অশোক গাছ জোগাড়ে হিমসিম পুরোহিতরা,অসহায় উদ্যোক্তা থেকে কলাবউ।

জয়ন্তী,অশোক গাছ জোগাড়ে হিমসিম পুরোহিতরা,অসহায় উদ্যোক্তা থেকে কলাবউ।

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বাঁকুড়া: ঢাকে কাঠি পড়ে গেছে। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর রাজবাড়ী সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় বুধবার জিতাষ্টমীর দিন থেকে দূর্গাপূজা শুরু হয়ে গেছে।পূজা যত এগিয়ে আসছে ততই উদ্যোক্তাদের চিন্তা বাড়ছে।দূর্গাপূজা মানেই নবপত্রিকা। এই নবপত্রিকা নিয়েই চিন্তা উদ্যোক্তাদের।ষষ্ঠীর দিন নবপত্রিকা তৈরী ও সপ্তমীর দিন তা স্নান করিয়ে মন্দিরে স্থাপন করে দূর্গাপূজা কার্যত শুরু হয়।এই নবপত্রিকা তৈরী  করতে নয় রকম গাছ লাগে।এই গাছগুলি জোগাড় করা নিয়েই চিন্তায় পড়েছেন উদ্যোক্তা ও পুরোহিতরা।এই গাছগুলি হল বেল,হলুদ,ডালিম, মান,কলা, ধান, কচু, জয়ন্তীও অশোক।নবপত্রিকায় অনেক জায়গাতে হলুদ গাছকেও ধরা হয়। এই গাছগুলির অধিকাংশই হারিয়ে যেতে চলেছে। জয়ন্তী,মান, অশোক জোগাড় করতে তাদের হিমসিম খেতে হচ্ছে।অনেক কষ্টে অশোক ও মান গাছ পাওয়া গেলেও জয়ন্তীর দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। পুরোহিতেরা বায়না ধরার সময় বলেই দিচ্ছেন যে এই তিনটি গাছ ছাড়াই নব তৈরী করতে হতে পারে।পূজা কমিটিগুলির বক্তব্য,গতবছর জয়ন্তী গাছ ছাড়াই  নবপত্রিকা বানিয়ে পূজা করতে হয়েছে।তাই এবার তারা এ বিষয়ে বেশী গুরুত্ব দিয়েছেন।
উল্লেখ্য নবপত্রিকাকে সবাই কলাবৌ বলেও জানেন।এই কলাগাছের সঙ্গে নতুন কাপড় পরিয়ে ঘোমটা দিয়ে বউ সাজিয়ে গনেশের পাশে রাখা হয়।যে কোন পূজা শুরু হয় গনেশকে দিয়ে আর দূর্গাপূজা শুরু হয় নবপগ্রিকা বা কলাবৌকে দিয়ে।সেকারনে অনেকে নবপত্রিকাকে গনেশের বউ বলে ভুল করেন।
জেলার পরিবেশবাদী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা মাই ডিয়ার ট্রিজ এন্ড ওয়াইল্ডস-এর সম্পাদক ঝর্না গাঙ্গুলি বলেন,  এদেশে গাছকে মাতৃশক্তি হিসাবে পূজা করার বিষয়টি বৈদিক যুগ থেকে চলে আসছে।এই নটি গাছকে নটি দেবতা ধরা হয়।কলাগাছে ব্রাহ্মনী, মানকচুতে  কালিকা বা চামুন্ডা ,হলুদে দূর্গা,জয়ন্তীত কার্তিক, বেলগাছে শিব,ডালিমে রক্তদন্তিকা,অশোকে শোকরহিতা এবং ধান গাছে লক্ষ্মীদেবী থাকেন বলে বিশ্বাস এদেশের বাসিন্দাদের। কিন্তু এই সব গাছগুলির গুরুত্ব তুলে ধরতে না পারায় সেগুলি অবহেলায় হারিয়ে যাচ্ছে।
বাঁকুড়া শহরের এক পুরোহিত অমল ভট্টাচার্য বলেন যে গতবছর জয়ন্তী জোগাড় করতে না পারায় বেহালার এক পূজা কমিটি তার পারিশ্রমিক থেকে টাকা কেটে নিয়ে ছিল। বাঁকুড়া শহরের পুরেহিত দেবদাস ভট্টাচার্য ও শান্তনু গোস্বামী বলেন যে গতবছর নবপত্রিকার সবগাছ জোগাড় করতে হিমসিম হয়েছিল। সেকারনে  এবার অনেক আগে থেকেই সরবরাহকারীদের বায়না দিয়ে রেখেছেন।বাঁকুড়ার বাজারে সেসময় যে নবপত্রিকা পাওয়া যায় তাতে কমপক্ষে ২টি গাছ থাকে না।এই অসম্পূর্ন নবপত্রিকা দিয়ে পূজা করে মনে শান্তি পাওয়া যায় না। এই বুঝি কোন অঘটন ঘটল এমন একটা ভয়ে থাকতে হয়।
অন্যদিকে নবপত্রিকা যারা বিক্রি বা সরবরাহ করেন সেই ফেলা রায় ও বারিদ রায়ের বক্তব্য,বর্তমানে জয়ন্তী,অশোক ইত্যাদি গাছের ডাল কিনতে হয়।বাজারে উপযুক্ত দাম না পাওয়ায় সেগুলি আনা সম্ভব হয় না। তাছাড়া দাম দিয়েও অনেক সময় এসব গাছ পাওয়া যাচ্ছে না।তাই অসম্পূর্ন নবপত্রিকাই বিক্রি করতে হয়।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});