সুব্রত চক্রবর্তী,মেমারী: মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষায় মোট ২৪৬ জন ছাত্রীর মধ্যে ১১০জন ফেল। আর তাদের পাস করিয়ে দেবার দাবিতে বৃহস্পতিবার মেমারী রসিকলাল স্মৃতি বালিকা বিদ্যালয়ের অকৃতকার্য ছাত্রীদের আন্দোলনে তীব্র উত্তেজনা ছড়াল। আন্দোলনের জেরে এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত স্কুল থেকে বেরোতেই পারলেন না স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নীলিমা ভট্টাচার্য্য। যদিও স্কুলে বিক্ষোভের খবর পেয়ে মেমারী পৌরসভার পৌরপতি স্বপন বিষয়ী বিদ্যালয়ে পৌঁছে ফেল করা সমস্ত ছাত্রীদের পাস করিয়ে দেবার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
নীলিমা দেবী জানিয়েছেন, এদিনই দশম শ্রেণীর টেস্টের ফল প্রকাশ করা হয়। দুপুর ২টা১০ মিনিটে নোটিস বোর্ডে সেই লিস্ট টাঙিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এরপরেই যে সমস্ত ছাত্রীরা পাস করতে পারেনি তারা দাবি করতে শুরু করে যে তাদের পাস করিয়ে দিতে হবে। নীলিমা দেবী জানিয়েছেন, তিনি ছাত্রীদের দ্বিতীয় লিস্টের জন্য অপেক্ষা করতে বলেন। কিন্তু ছাত্রীরা তা মানতে চায়নি। নীলিমা দেবী জানান, এরপর তিনি ছাত্রীদের অভিভাবকদের তার সঙ্গে দেখা করতে বলেন।
ছাত্রীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা প্রধান শিক্ষিকা কে তুইতকারি করে অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলে। প্রধান শিক্ষিকার ঘর লক্ষ্য করে ইট,পাটকেল ছোঁড়ে। এমনকি বিদ্যালয়ের ফুলের টব গুলিকে ভাঙচুর করে। কয়েকজন অভিভাবক ছাত্রীদের এইসব কাজে উৎসাহ দেন বলেও এদিন প্রধান শিক্ষিকা অভিযোগ করেছেন।
যদিও এদিন ছাত্রীরা প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে যে প্রধান শিক্ষিকা তাদের জানিয়েছেন, তাদের অভিভাবকরা যেন তার কাছে এসে হাতে পায়ে ধরে ক্ষমা চায় তারপর তিনি ভেবে দেখবেন তাদের পাস করানো যায় কিনা।
উল্লেখ্য, মেমারী রসিকলাল স্মৃতি বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর তিনটি সেকশনে মোট ২৫৬ জন ছাত্রী থাকলেও টেস্ট পরীক্ষায় বসেছিল ২৪৬ জন।তার মধ্যে ১৩৮ জন পাস করলেও ১১০ জন পাস করতে পারেনি। এর মধ্যে শুধু সি-সেকশনের ৬৭জন আছে। ছাত্রীরা জানিয়েছে, কি ভাবে ৭ টা বিষয়ে একজন ফেল করতে পারে তা জানতে পরীক্ষার খাতা দেখানোর আবেদনও প্রধান শিক্ষিকা নাকচ করে দিয়েছে।
নীলিমা দেবী অবশ্য সংবাদ মাধ্যমের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করে স্বীকার করে নিয়েছেন যে তাঁর স্কুলের মান দিন দিন তলানিতে ঠেকছে। আর এর জন্য তিনি সহ অন্যান্য শিক্ষিকারাও কম বেশি দায়ী। তবে এদিন ম্যানেজিং কমিটির চেয়ারম্যানের সকল কে পাস করিয়ে দেবার সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি।