ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমানঃ মুখ্যমন্ত্রীর কাটমানির টাকা ফেরত দেবার ঘোষণার পর থেকেই জায়গায় জায়গায় চলছে শাসকদলের নেতা-কর্মীদের ওপর চাপ সৃষ্টি। গত কয়েকদিন পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রাম,গলসী, খণ্ডঘোষ, বর্ধমান সদর ১ ও ২ সহ একাধিক ব্লকেও চলছে এই চাপ সৃষ্টি। অনেক ক্ষেত্রেই বিজেপি সমর্থকরা এই চাপ সৃষ্টি করলেও বেশ কিছু জায়গায় তৃণমূল কংগ্রেসের একটি গোষ্ঠীই অপর গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এই চাপ সৃষ্টি করে চলেছে। ফলে ক্রমশই পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে উঠতে শুরু করেছে।
সম্প্রতি আউশগ্রামের দোখলগঞ্জে কাটমানির টাকা ফেরত দেবার দাবীতে পোষ্টার পরে। তা নিয়ে বিতর্ক থামতে না থামতেই গলসী থানার ভুঁড়ি এবং পারাজ গ্রাম পঞ্চায়েতের কয়েকটি জায়গায় তৃণমূলের নেতা,পঞ্চায়েত প্রধানদের বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। তৃণমূল নেতাদের বাড়ি, ঘর ভাঙচুর করারও অভিযোগ উঠেছে। এদিকে, এরই পাশাপাশি বর্ধমান সদর ব্লকের বৈকুণ্ঠপুর ১নং গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের বাড়িতেও হামলা চালানো হয়। একই অবস্থা খণ্ডঘোষ ব্লকেও। সেখানেও বেশ কয়েকজন তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্যকে রীতিমত হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলেরই একটি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। বর্ধমান সদর ব্লকের বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতার রাতারাতি ফুলে ফেঁপে ওঠা নিয়েও সরব হয়েছে বিজেপি সমর্থকরা। ইতিমধ্যেই তাঁরা সময়সীমা বেঁধে দিয়ে হিসাব চেয়েছেন সেই সব তৃণমূল নেতাদের কাছ থেকে।
স্বাভাবিকভাবেই একটু একটু করে রেশন কেলেংকারীর মতই পঞ্চায়েতের বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা নয়ছয় তথা কাটমানির টাকা খাওয়া নিয়ে পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে উঠছে। যদিও এব্যাপারে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত এব্যাপারে তাঁর কাছে কেউ কিছুই জানায়নি। কোনো পঞ্চায়েত প্রধান বা সদস্যদের হুমকি বা শাসানির কোনো অভিযোগ তাঁরা পাননি। এদিকে, এই ঘটনার মাঝেই আউশগ্রামের রামনগর গ্রাম পঞ্চায়েতে তালা ঝুলিয়ে দিল বিজেপি সমর্থকরা। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে গোটা এলাকায়। বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, পঞ্চায়েতের ১০০ দিনের কাজ পরিচালিত হচ্ছে তৃণমুলের পার্টি অফিস থেকে।
রামনগর এলাকার বিজেপি নেতা দেবব্রত মণ্ডল জানিয়েছেন, পঞ্চায়েতের কাজ পঞ্চায়েত থেকেই পরিচালিত করতে হবে, অথবা গ্রামের আটচালায় বসে সমস্ত গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনা করে সেই কাজ করতে হবে। কিন্তু পঞ্চায়েত প্রধান, সেক্রেটারী সকলকে জানানোর পরেও কোনো ইতিবাচক ব্যবস্থা না হওয়ায় বাধ্য হয়েই তাঁরা এদিন পঞ্চায়েতে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগেই ১০০ দিনের কাজ নিয়ে মাইকিং করা হয় এবং ইচ্ছুকদের স্থানীয় পার্টি অফিসে যোগাযোগ করতে বলা হয়। কিন্তু তাঁরা কেন তৃণমূল পার্টি অফিসে যাবেন? সেই প্রশ্ন নিয়েই তাঁরা বারবার পঞ্চায়েতের কর্তাদের কাছে জানিয়েছেন। যদিও এই বিষয় নিয়ে তৃণমূলের কোনো নেতাই কিছু বলতে চাননি।