ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমানঃ সদ্য সিপিএম থকে বিজেপিতে যোগদান করার সাথে সাথেই খোদ বিজেপির যুবমোর্চার জেলা সভাপতি শ্যামল রায়ের সঙ্গে ব্যপক সংঘর্ষে জড়িয়ে পরলেন একদা সিপিএম এর ছত্রছায়ায় থাকা বিশ্বজিত সেন ওরফে খোকন সেন। আর এই সংঘর্ষের ঘটনায় রীতিমত তীব্র আতঙ্ক ও উত্তেজনা ছড়াল বর্ধমান শহরের ডিভিসি মোড় এবং নীলপুর পিরতলা এলাকায়।
জানা গেছে, এদিন সন্ধ্যেবেলায় বিজেপির জেলা অফিস ডিভিসি মোড়ের ঘোড়দৌড় চটিতে সদ্য সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া বিশ্বজিত সেন ওরফে খোকন সেন কয়েকজনকে নিয়ে যান বিজেপিতে যোগ দেওয়ানোর জন্য। খোকন সেনের অভিযোগ, কয়েকদিন আগেই বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভার সাংসদ সুরেন্দ্রজিত সিং অহলুবালিয়ার হাত ধরে তাঁর প্রায় আড়াই হাজার অনুগামীকে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু সেদিনই ওই অনুষ্ঠানে বিজেপির যুবমোর্চার জেলা সভাপতি শ্যামল রায় তাঁকে বাধাও দিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও বিজেপির জেলা নেতৃত্বের উপস্থিতিতে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। আর সোমবার সন্ধ্যেবেলায় তাঁর আরও কিছু অনুগামীকে নিয়ে বিজেপির জেলা অফিসে যান। সেই সময় শ্যামল রায়ের নেতৃত্বে বেশ কিছু বিজেপি সমর্থক তাঁদের মারধর শুরু করেন। তাঁকেও বেধড়ক মারধর করা হয় অফিসের মধ্যেই। মারধর করা হয় তাঁর কয়েকজন অনুগামীকেও। এই সময় শ্যামল রায়ের নেতৃত্বে জেলা অফিস ভাঙচুরও করা হয়। খোকন সেনের দাবী, গোটা ঘটনায় বিজেপির জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দী সহ আরও কয়েকজন জেলা নেতা পার্টি অফিসে হাজির ছিলে্ন। তাঁদের অনুরোধেই তিনি কোনো প্রতিরোধ করেননি।
অন্যদিকে, শ্যামল রায় পাল্টা খোকন সেনের অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, এদিন বিজেপির জেলা অফিস যাঁকে তাঁরা মন্দির হিসাবে পুজো করেন, সেই পার্টি অফিসে এসে খোকন সেন দাপট দেখাতে শুরু করেন। তিনিই বিজেপি যুবমোর্চার কয়েকজন কর্মী ও নেতাকে মারধর করেন। আর তাতে অপরাপর বিজেপি কর্মীরা রুখে দাঁড়ালে তিনি ৫ রাউণ্ড গুলি ছোঁড়েন। সংঘর্ষের খবর পেয়ে বর্ধমান থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে হাজির হয়। শ্যামলের অভিযোগ,জেলা অফিসে হামলা চালানোর পর খোকন সেন তাঁর বিশাল বাহিনী নিয়ে তাঁর বাড়িতেও হামলা চালায়। বাড়ির জানালা দরজা ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে সেখানে প্রায় ২০০ বিজেপি কর্মী হাজির হলে খোকন সেনের দলবল পালিয়ে যায়।
এদিকে, এই ঘটনার পরই তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে গোটা শহর জুড়ে। শ্যামল রায় দাবী করেছেন,অবিলম্বে সিপিএম থেকে আসা খোকন সেনকে দল থেকে বহিষ্কার করা না হলে তাঁরা দল ছাড়বেন। তিনি জানিয়েছেন, গোটা বিষয়টি জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। তাঁদের নির্দেশ না পাওয়ায় এখনও পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। এদিকে, খোদ বিজেপির অন্দরেই এভাবে দুটি গ্রুপের সংঘর্ষ ঘটায় গোটা ঘটনাকে অত্যন্ত দুঃখজনক বলেছেন বিজেপির জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দী। তিনি জানিয়েছেন,কোনো গুলি চালানোর বিষয় তাঁর জানা নেই। তবে বেশ কিছু ইঁট ছোঁড়া হয়। দুপক্ষের মারপিটের ঘটনা সম্পর্কে তিনি ইতিমধ্যেই এব্যাপারে রাজ্য নেতৃত্বকে সব জানিয়েছেন বলে জানান।