Headlines
Loading...
দামোদরের পাড় কেটে বালিখাদ বানানোর ঘটনায় তীব্র চাপান উতোর বর্ধমানের গৈতানপুর চরমানায়

দামোদরের পাড় কেটে বালিখাদ বানানোর ঘটনায় তীব্র চাপান উতোর বর্ধমানের গৈতানপুর চরমানায়


ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমানঃ দামোদরের পাড় কেটে বালিখাদ তৈরী করাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা দেখা দিয়েছে বর্ধমানের খণ্ডঘোষ থানার শশঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের গৈতানপুর চরমানা এলাকায়। দামোদরের পাড় কেটে বালিখাদ তৈরী করাকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীরা আড়াআড়ি ভাগও হয়ে গেছে। দুপক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছে। গোটা ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে জেলা সেচ ও ভূমি দপ্তর। গৈতানপুর চরমানা গ্রামের বাসিন্দা তথা স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচিত তৃণমূল সদস্য অশোক চৌধুরী জানিয়েছেন, বিগত কয়েকবছর ধরেই দামোদরের ভাঙনে গৈতানপুর চরমানার কয়েক হাজার বিঘে কৃষি জমি নদী গর্ভে তলিয়ে গেছে। তলিয়ে গেছে বহু বাড়িও। গ্রামের অনেক বাসিন্দাই জমি বাড়ি খুইয়েছেন নদীগর্ভে। এই ঘটনায় দীর্ঘদিন ধরেই গ্রামবাসীরা দামোদরের পাড় বাঁধানোর দাবী জানিয়ে আসছিলেন। তার জেরেই গত ২০১৩ সালে প্রায় দেড় কিলোমিটার পাড় বাঁধানো হয় বোল্ডার দিয়ে। এরপর ফের চলতি বছরে দামোদরের উপরভাগে প্রায় ৪৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে স্পার তৈরীর কাজ শুরু হয়। এর ফলে একটি বালির চরের সৃষ্টি হয়েছে। আর তারই মাঝে কিছু অসাধু ব্যক্তি বোল্ডার ও স্পারের মধ্যে দিয়ে দামোদরের পাড় কেটে বালি তোলার কাজ শুরু করেছেন।

উল্লেখ্য,বর্ষা মরশুমে নদী থেকে বালি তোলা নিষিদ্ধ হওয়ার পর গত ১ অক্টোবর থেকে পুনরায় বালি তোলার কাজ শুরু হয়েছে। এদিকে, গৈতানপুর চরমানায় দামোদরের পাড় কেটে সেখান দিয়ে বালিভর্তি গাড়ি যাতায়াত করায় বাঁধের ব্যাপক ক্ষতি শুরু হয়েছে। ফলে ফের আতংকে ভুগতে শুরু করেছেন গ্রামবাসীরা। অশোকবাবু জানিয়েছেন, এব্যাপারে গ্রামবাসীরা ওই বালি উত্তোলনকারীদের বাধা দিলে তাঁরা পাল্টা প্রাণনাশের হুমকি দিতে শুরু করেছে। অশোকবাবু জানিয়েছেন, এব্যাপারে তাঁরা জেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন।

এই ঘটনায় পূর্ব বর্ধমান জেলার ভূমি দপ্তরের অতিরিক্ত জেলাশাসক শশী কুমার চৌধুরী জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত এব্যাপারে তাঁর কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ আসলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরদিকে,দামোদর ক্যানেল ডিভিশনের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার (১) ভাস্বর সূর্য মণ্ডল জানিয়েছেন, একটা অভিযোগ তাঁরা পেয়েছেন। ইদিলপুরের এ্যাসিস্ট্যাণ্ট ইঞ্জিনিয়ারকে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। কোথাও কোনো ত্রুটি থাকলে বা অবৈধ কাজ থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, বাঁধের ক্ষতি করে বাঁধ থেকে ২০০ মিটারের মধ্যে বালি তোলা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এই নিয়ম লঙ্ঘন করলে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে এই বালিখাদ বৈধ না অবৈধ সে ব্যাপারে জেলা ভূমি দপ্তর বলতে পারবেন।

অপরদিকে,যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, অর্থাৎ গৈতানপুর চরমানার পূর্ব পাড়ার বাসিন্দা দেবব্রত আউলিয়া জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই গ্রামের পূর্ব পাড়ার বাসিন্দা তথা অশোক চৌধুরীরাই একটি ঘাট চালাচ্ছেন। আর তাই পশ্চিমপাড়ার পক্ষ থেকে গ্রামবাসীরা মিলিতভাবে বৈঠক করে নতুন এই ঘাট তাঁরা তৈরী করেছেন। গ্রামের পাঁচ-ছ'শ মানুষের কর্মসংস্থান করার উদ্দ্যেসেই এই ঘাট তৈরি করছেন তারা। কিন্তু সম্প্রতি বিবাদের জেরে পুলিশ এসে দুটি ঘাটই বন্ধ করে দিয়েছে। তবু তাঁরা ঘাট চালাবেনই বলে জানিয়েছেন দেবব্রত বাবু। যদিও ঘাটের বৈধতা সম্পর্কে তিনি জানিয়েছেন,এখনও ঘাট চালানোর বিষয়ে তাঁরা কোনো বৈধ অনুমতি না পেলেও এব্যাপারে প্রক্রিয়া চলছে।এবং তাঁরা তা পেয়েও যাবেন।

অপরদিকে, পাল্টা অশোকবাবু জানিয়েছেন, তিনি কোনো ঘাট চালান না। মঞ্জুশ্রী মণ্ডলের নামে পূর্ব পাড়ার ঘাটটির অনুমোদন রয়েছে। তাঁর কাছ থেকে গ্রামের পূর্ব পাড়ার মানুষ লিজ নিয়ে ওই ঘাট চালাচ্ছেন।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});