ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,কালনাঃ মায়ের সঙ্গে রাতে ঘরে ঘুমিয়ে থাকার সময় ঘরের দরজা ভেঙে ঘুমন্ত অবস্থায় এক কিশোরীর উপর এসিড হামলা চালানোর ঘটনার প্রায় এক বছর ১০ মাস পর অভিযুক্ত কে দোষী সাব্যস্ত করলো কালনা মহকুমা আদালতের বিচারক। কালনা জেলা দায়রা আদালতের বিচারক তপন কুমার মন্ডল বৃহস্পতিবার এই রায় দেন। বুধবারই বিচারক অভিযুক্ত যুবককে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৪৮ ও ৩২৬ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেন। এদিন বিচারক পৃথক ধারার পৃথক পৃথক সাজা ঘোষণা করেন। ৪৪৮ ধারায় এক বছরের কারাদন্ড ও নগদ এক হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক মাসের জেল। পাশাপাশি ৩২৬ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, সাথে পাঁচ লক্ষ টাকা নগদ জরিমানা অনাদায়ে দুই বছরের জেলের সাজা ঘোষণা করেন বিচারক। আর এই রায় ঘোষণার পর নির্যাতিতার পরিবারের পক্ষ থেকে আদালতের এই রায়ের প্রতি সন্মান জানানো হয়েছে। আদালতের নির্দেশে এও জানানো হয়েছে যে, জরিমানার টাকা আদায় হলে সেই টাকা পাবে আক্রান্ত তরুণী।
জানা গেছে, মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটে ২০১৬ সালের ১২ ডিসেম্বর গভীর রাত্রে পূর্বস্থলী থানার নতুন দামপাল গ্রামে। এই গ্রামের যুবক গৌরব মন্ডল এদিন গভীর রাত্রে এক প্রতিবেশীর বাড়ির ঘরের দরজা ভেঙে ১৫ বছরের এক ঘুমন্ত কিশোরীর মুখ ও শরীরে এসিড নিক্ষেপ করে। কিশোরীর মা তার সাথে শুয়ে থাকায় তাঁর শরীরের বেশ কিছুটা অংশ পুড়ে যায়।হামলা চালানোর পর পালানোর সময় অভিযুক্তকে কিশোরীর মা চিনে ফেলে। শুধু তাই নয়, এরপরও যুবকটি কিশোরীকে দেখলেই উত্যক্ত করতো বলে অভিযোগ। এমনকি কিশোরীটি ভয়ে বাড়ি থেকে বার হতে পারত না বলে অভিযোগ। এই সুযোগে নির্যাতিতার কিশোরীটির বাড়িতে ঢুকে টিভি ভেঙে দিয়ে যায়। শেষে সালিশি সভা ডেকে কিশোরীটির বাবার নিকট থেকে পাঁচ হাজার টাকাও আদায় করে দুষ্কৃতিরা।
এরপর কিশোরীর মা গৌরবের নামেই পূর্বস্থলী থানায় অভিযোগ লিপিবদ্ধ করলেও, শেষে তদন্তে যুবকের বাবা গৌরাঙ্গ মন্ডল ও তার বন্ধু সুকান্ত বাগচী এই মামলায় জড়িয়ে যায়। তিন জনেরই জেল হেফাজতে থাকা অবস্থায় শুনানি শুরু হয়। শেষে গৌরব মন্ডলকে বিচারক সাজা দিলেও বাকি দুজনকে বেকসুর খালাস করে দেন। এই মামলার সরকারি আইনজীবী মলয় পাঁজা জানান, কালনা আদালতের ইতিহাসে এই প্রথম এসিড হামলার ঘটনায় কোন আসামি সাজা পেলো।