ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: রবিবার বর্ধমানের কেশবগঞ্জ চটির একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসার গাফিলতিতে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল এলাকা। জিটিরোড অবরোধ, নার্সিংহোম ভাঙচুর, উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশের লাঠি উঁচিয়ে তাড়াকে ঘিরে এলাকার পরিস্থিতি উত্তাল হযে ওঠে। শেষে বর্ধমান থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনায় আটক করা হয়েছে প্রায় ১৬জনকে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বর্ধমানের কেশবগঞ্জ চটি এলাকার সিটি নার্সিংহোমে রবিবার সকালে মৃত্যু হয় সুমিত কুমার ঠাকুর (২৮)নামে এক যুবকের। তার বাড়ি বর্ধমান শহরের দিঘীরপুল এলাকার পাশিখানায়।মৃত সুমিত বর্ধমান পুরসভার নির্মল ঝিল শ্মশানের গ্যাস চুল্লীর অপারেটর হিসাবে কাজ করত । তার প্রতিবেশী সৃজন কুণ্ডু জানিয়েছেন, সুমিত বেশ কিছুদিন ধরেই পেটের ব্যাথায় ভুগছিল। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন সুমিতের এ্যাপেনডিক্স অপারেশন করতে হবে। সেইমত গত শুক্রবার সুমিতকে বর্ধমান শহরের কেশবগঞ্জ চটি এলাকায় সিটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। ওইদিনই তার এ্যাপেনডিক্স অপারেশন করা হয়। রবিবার সকালে নার্সিংহোমের কোনো কর্মী কাছে না থাকায় সুমিত নিজেই বাথরুমে যায়। আর সেখানেই নাকি সে পরে গিয়ে জ্ঞান হারায়। এরপর তার বাড়ির লোকদের খবর না দিয়েই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ কোনো ডাক্তারী কাগজপত্র ছাড়াই সুমিতকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দিলে হাসপাতালের চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এই সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে অবরোধ চলাকালীন পুলিশের সামনেই ক্ষিপ্ত জনতা নার্সিংহোমে ভাঙচুর শুরু করে। অপারেশন থিয়েটার সহ অফিস ঘরেও ব্যাপক ভাঙচুর চালান হয়। এরই মধ্যে নার্সিংহোমের দোতলা ও তিনতলায় কয়েকজন রোগীকে আটকে থাকতে দেখেন জনতা।তারা জানতে পারেন রোগীদের ভেতরে রেখেই বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ।
বর্ধমান থানার আইসি তুষারকান্তি কর জানিয়েছেন, ভাঙচুর, অবরোধের ঘটনায় কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে।
এদিকে সুমিতের মৃত্যুর ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে তার বাড়ি সহ গোটা এলাকায়। বর্ধমান ডিস্ট্রিক্ট স্পোর্টস এসোসিয়েশন সূত্রে জানা গেছে,সুমিতের বাবা সুনীল ঠাকুর বর্ধমান জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য। শনিবার অনুর্দ্ধ ১৬ জেলা ফুটবল টিম নিয়ে তিনি কোচবিহার রওনা হয়েছিলেন। ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে তিনি নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ফিরে আসেন।
ছবি - সুরজ প্রসাদ