Headlines
Loading...
 পূর্বস্থলীতে চোরা শিকারীদের দাপটে বিপন্ন চুপির পরিযায়ী দল, উদ্বিগ্ন জেলা প্রশাসন।

পূর্বস্থলীতে চোরা শিকারীদের দাপটে বিপন্ন চুপির পরিযায়ী দল, উদ্বিগ্ন জেলা প্রশাসন।




ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্বস্থলী:রাজ্যের পর্যটন দপ্তরের উদ্যোগে যখন পূর্ব বর্ধমান জেলার ঐতিহাসিক স্থানগুলি সহ পর্যটন ক্ষেত্রগুলিকে ঢেলে সাজানোর প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, তখন পূর্বস্থলী -২ব্লকের চুপির পাখিরালয়ে চোরা শিকারীদের দাপটে হারিয়ে যেতে শুরু করেছে পরিযায়ী পাখির দল।
প্রতিদিনই চোরা শিকারীদের হাতে অসংখ্য বিদেশী পাখির মৃত্যু ঘটতে শুরু করায় রীতিমত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জেলা প্রশাসন।আর এই ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বুধবারই কড়া নজরদারীর নির্দেশ দেওয়া হল পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

কাষ্ঠশালী বনবীথি সংস্থার সদস্য তথা পাখি বিশারদ সঞ্জয় সিংহ এবং এই সংগঠনের সভাপতি নবীবক্স
সেখ জানান, গঙ্গার গতিপথ পরিবর্তনের ফলে ১৯৯০-১৯৯১ সালে তৈরী হয়েছে ছাড়িগঙ্গা।এই ছাড়িগঙ্গার দৈর্ঘ্য প্রায় ১১ কিলোমিটার এবং এরমধ্যেই রয়েছে চুপির এই চর।বিদেশি পাখির দল প্রতি বছর শীত পড়তেই ঝাঁকে ঝাঁকে চুপিতে এসে জড়ো হয়। আর বিভিন্ন প্রজাতির,নানান রঙের পাখির দলকে দেখতে প্রায় তিন দশক ধরে পর্যটকেরা ভিড় জমান এই এলাকায়। তাঁরা জানান, প্রচুর সংখ্যক পাখির মধ্যে রয়েছে রাডি শেলডাক যা এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকার উত্তর ও দক্ষিণাংশ থেকে আসে। রয়েছে নর্দান পিনটেল, গ্রে হেরণ, ফেরুজিনিয়াস ডাক, কমন পোকার্ড প্রভৃতি।


উল্লেখ্য,২০০৫-২০০৬ সালে এই পাখিরালয়কে ঘিরেই তৈরী হয়েছে পর্যটন কেন্দ্রও। ২০০৭ সালে তৈরী হয়েছে পরিযায়ী আবাস। পাখি দেখার জন্য তৈরী করা হয়েছে টাওয়ারও।পর্যটকদের জন্য কাষ্ঠশালী বনবীথির ৬-৭ টা নৌকাও চলে। এছাড়াও ছাড়ি গঙ্গার পিকনিক স্পটে
প্রায় ২০ টা নৌকা থাকে। থাকে গাইড। কিন্তু ইদানিং চোরা শিকারিদের দাপটে প্রচুর পাখি ধরা পড়ছে,এমনকি ছাড়ি গঙ্গায় মাঝিদের জালে আটকে মারা যাচ্ছে অনেক পাখি বলে সঞ্জয়বাবুরা এদিন জানান।তাঁরা বলেন,এই দুই জোড়া ফলায় পরিযায়ীদের সংখ্যা দিনদিন কমছে। স্বাভাবিকভাবেই পর্যটকদের কাছে চুপির মূল আকর্ষণ আজ প্রায় বিপন্ন। প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্টের পাশাপাশি জেলার অন্যতম পর্যটনের মুখ্য আকর্ষণের এই কেন্দ্র গুরুত্ব হারাবে।  

অন্যদিকে, গঙ্গার ৩ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে মেড়তলার চর। গোটা এলাকাটাই পূর্বস্থলী ২ পঞ্চায়েত সমিতির তথা কাটোয়া বনদপ্তরের অধীনে রয়েছে। এখানে পাখিদের রক্ষা করার জন্য এবং পর্যটকদের গাইড করার জন্য তৈরী হয়েছে কাষ্ঠশালী বনবীথি।
সঞ্জয়বাবুরা প্রশাসনের সমস্ত পর্যায়ে ইতিমধ্যে এই অঞ্চলকে রক্ষা করার আবেদন জানিয়েছেন। এদিন বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) নিখিল নির্মল জেলা মুখ্য বনাধিকারিক এবং কালনার মহকুমা শাসককে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি জানান, কোনোভাবেই যাতে চোরা শিকারীরা এভাবে পাখি শিকার করতে না পারেন সেজন্য দ্রুত উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরই পাশাপাশি বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডুও জানান, এই ঘটনা অতি উদ্বেগজনক। এরফলে পরিযায়ী পাখিরা যেমন আসা কমিয়ে দেবে, তেমনি পর্যটকরাও আর আসবেন না। তাই পূর্বস্থলী ২ পঞ্চায়েত সমিতিকে এব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেবার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।




(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});