ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমানের রায়ান ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের মালিরবাগান মাঠপাড়া এলাকায় একটি ইমিটেশন গহনা তৈরির কারখানা থেকে বিষাক্ত গ্যাস ছড়ানোর ঘটনায় তীব্র আতংক দেখা দিল। প্রায় মাস ছয়েকেরও বেশিদিন ধরে ওই কারখানা থেকে বিষাক্ত এ্যাসিড নির্গত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকার মানুষ লাগাতার আপত্তি জানালেও কোনো হেলদোল ছিল না কারখানা কর্তৃপক্ষের। এলাকার মানুষের আপত্তি সত্ত্বেও কারখানা চালিয়ে যাওয়ায় এবং সদর মহকুমা শাসক অবিলম্বে কারখানা বন্ধ করার নির্দেশ দিলেও কারখানা চালু রাখার ঘটনাকে ঘিরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তীব্র উত্তেজনা দেখা দিল গোটা এলাকায়। এলাকার মানুষজন এদিন দূষণ ছড়ানোর অভিযোগে ওই ইমিটেশনের কারখানা বন্ধের জন্য ব্যাপক বিক্ষোভও দেখান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন বর্ধমান ১নং পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তথা বর্ধমান ১নং ব্লকের তৃণমূল সভানেত্রী কাকলী গুপ্ত, রায়ান গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য, ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলার মহম্মদ আলি প্রমুখরাও। এলাকার বাসিন্দা নজরুল মল্লিক, স্বপন রুইদাস, সঞ্জু মণ্ডল প্রমুখরা অভিযোগ করেছেন, গত প্রায় ৬ মাসেরও বেশি সময় ধরে মাঠপাড়ায় ওমর আলি সেখ এই সিটি গোল্ড এবং ইমিটেশনের কারখানা চালু করেছেন। কারখানায় এই কাজের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে বিষাক্ত এ্যাসিড। কারখানা থেকে নির্গত বর্জ্য পদার্থ গোটা এলাকায় তীব্র দূষণ ছড়াচ্ছে। কারখানা সংলগ্ন এলাকায় গাছ, ঘাস ক্রমশই এ্যাসিডের তীব্রতায় শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। এমনকি কারখানার বিষাক্ত গ্যাসে এলাকার শিশু, বৃদ্ধরা প্রতিনিয়তই অসুস্থ হয়ে পড়ছে। কার্যত গোটা এলাকাতেই ভয়াবহ মহামারীর আতংকে ভুগতে শুরু করেছেন বাসিন্দারা।
তারা জানান, এর আগেও কারখানা মালিককে এব্যাপারে জানিয়েছেন কিন্তু তিনি তাতে কান দেননি। এমনকি এব্যাপারে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছেও তারা অভিযোগ জানান। পরে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ জেলা প্রশাসনকে রিপোর্ট দেয় দ্রুত ওই কারখানা বন্ধ করে দেবার জন্য। এরপর গত ৭ আগষ্ট সদর মহকুমা শাসক জেলা পুলিশ সুপারকে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশ তুলে ধরে ওই কারখানা বন্ধ করে দেবার নির্দেশ দেন। কিন্তু তারপরেও অজ্ঞাত কারণে চলতে থাকে কারখানা। আর তাই বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু করেন এলাকার মানুষ। এরপরেই ব্লক ও পঞ্চায়েত কর্মকর্তারা এসে কারখানাটিকে বন্ধ করে দিয়ে যান।
কাকলী গুপ্ত এদিন জানান, প্রশাসন দূষণ ছড়ানোর জন্য ওই কারখানা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এদিন তারা কারখানা মালিককে পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত কারখানা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
যদিও এদিন কারখানার মালিক ওমর আলি সেখ জানান, তার কাছে কারখানা চালু রাখার জন্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সহ আনুষঙ্গিক সমস্ত অনুমতি রয়েছে। যদিও এদিন দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ছাড়পত্র তাকে দেখানোর অনুরোধ জানালে তিনি তা সংবাদ মাধ্যমের কাছে দেখাতে চাননি।


