Headlines
Loading...
ফের বাঁধ ভাঙলো শিলাবতী নদীর ৷ আতঙ্কিত জনজীবন।

ফের বাঁধ ভাঙলো শিলাবতী নদীর ৷ আতঙ্কিত জনজীবন।

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পশ্চিম মেদিনীপুর : গত শুক্রবার থেকে টানা বৃষ্টি ও বিভিন্ন জলাধার থেকে জল ছাড়ার ফলে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অপেক্ষাকৃত নিঁচু জায়গা চন্দ্রকোণা ও ঘাটালে জল জমতে শুরু করে ৷ মূলত শিলাবতী নদীর জলস্তর বেড়ে গত দুদিন আগে কয়েকটি জায়গায় বাঁধ ভেঙে যায় এবং এলাকায় জল ঢুকতে থাকে ৷ ঘাটাল পুরসভার ১ থেকে ১৩ নম্বর ওয়ার্ড সম্পুর্ণ জলের তলায় ৷ জলের তলায় রয়েছে ঘাটাল থানাও ৷ এরপর মঙ্গলবার ডিভিসি দূর্গাপুর ব্যারেজ থেকে ক্রমাগত জল ছাড়তে  থাকে ৷ তাতে করে ঘাটালে শিলাবতী নদী ছাপিয়ে জল ঢুকতে শুরু করে বসতি এলাকায় ৷ বুধবার দূর্গাপুর ব্যারেজ থেকে রাত ৯ টা নাগাদ  দুই লক্ষ কিউসেকেরও বেশী জল ছাড়া হয় ৷ ঘাটালের হরিসিংহপুরে রয়েছে রিং বাঁধ ৷ এই বাঁধ ১৯৭৮ সালে একবার ভেঙে ছিল ৷ এটিই একমাত্র এমন বাঁধ যা প্রায় ৮১ টি মৌজাকে প্লাবনের হাত থেকে রক্ষা করে ৷ কিন্তু চলতি বছর জলাধারগুলি থেকে বিপুল পরিমাণে জল ছাড়াতে স্বাভাবিকভাবেই চিন্তায় পরে যায় ঘাটালবাসীরা ৷ তারা নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে সকাল থেকে রিং বাঁধ কে আরো শক্ত করার কাজ করেছেন ৷ রয়েছে জেনারেটরের ব্যাবস্থাও ৷ তবে বিকেলের পর রিং বাঁধ থেকে খানিকটা দূরে প্রতাপপুরে ২০ মিটার বাঁধ ভেঙে যায় ৷ এর আগে ১৯৭৮ সালে ভেঙেছিল বাঁধটি ৷ স্থানীয়দের অবস্থা নাজেহাল ৷ এর ফলে ৮১ টি মৌজায় জল ঢোকার পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে ৷ প্লাবনের আশঙ্কা রয়েছে দাসপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় ৷
অন্যদিকে ঘাটাল, চন্দ্রকোণা, কেশপুর সহ প্লাবিত একাধিক এলাকায় গত চারদিন ধরে একটানা ত্রাণ শিবির করে যাচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রাশাসন ৷ পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ নিজে এসে প্লাবিত এলাকার মানুষদের হাতে ত্রাণ সামগ্রী তুলে দেন ৷ ভারতী ঘোষ জানান পুলিশের পক্ষে থেকে প্লাবিত এলাকার মানুষদের পাশে থাকার সবরকমের চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে ৷ ত্রিপল, পানীয় জল, চাল, চিঁড়ে, গুড় সহ একাধিক ত্রাণ সামগ্রী তুলে দেওয়া হচ্ছে দুর্গতদের হাতে ৷ নৌ পরিবহন ব্যাবস্থা রাখা হয়েছে ৷ প্রতিটি নৌকায় সিভিক পুলিশ রাখা হয়েছে যাতে করে দুর্ঘটনা না ঘটে ৷ এছাড়াও বন্যা মোকাবিলা টীমও রাখা হয়েছে ৷ উল্লেখ্যে গত শনিবার থেকে পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ এবং জেলা শাসক জগদীশ প্রসাদ মীণা প্লাবিত এলাকার মানুষদের পাশে সারাক্ষণ আছেন ৷ ঘাটালেই রয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াই. রঘুবংশী ৷
অন্যদিকে দুর্গতদের সাথে দেখা করতে যান তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি ৷ তিনি কবলিতদের সাথে কথাও বলেন ৷ তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন শিবিরে ত্রাণ দেওয়ার কাজ চলছে ৷ অজিত মাইতি বলেন যে সকল বিরোধী দলনেতা মুখে বড় বড় কথা বলেন কই তারা তো এই প্লাবনের সময় এলেন না এলাকায় ৷ অথচ তৃণমূল কংগ্রেস সবসময় রয়েছে দুর্গতদের পাশে ৷
উল্লেখ্য জলাধারগুলি থেকে যে পরিমাণ জল ছাড়া হয়েছে তাতে করে জীবন ও জীবিকা দুর্বিসহ হয়েছে ঘাটাল, কেশপুর, চন্দ্রকোণার বাসিন্দাদের ৷ কয়েকশো একর জমি এখন জলের তলায় ৷ এই সব এলাকার বেশীরভাগ ঘর বাড়িগুলো এখন জলের তলায় ৷ স্কুলগুলিও জলের তলায় ৷ ফলে স্কুল এখন বন্ধ রয়েছে ৷ পুলিশের পক্ষ থেকে প্রচার করা হচ্ছে অপেক্ষকৃত উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিতে ৷ তাছাড়াও বান ভাসী মানুষদের উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরিত করেছে প্রশাসন ৷ গবাদী পশুদের জন্যও খাদ্যর ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন ৷
ইতিমধ্যে প্লাবনের জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে নবকুমার জানা (৪৫) নামের এক ব্যাক্তির ৷ এলাকায় সাপের উপদ্রব বেড়েছে ৷ এই তিন-চারদিনে সাপের কামড়ে আক্রান্তের সংখ্যাও প্রায় ১০ জন বলে সূত্রের খবর ৷ তবে একনও পর্যন্ত সাপের কামড়ে মৃত্যুর খবর নেই ৷ খবর নেই কোনো গবাদী পশুর মৃত্যুর ৷
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});