Headlines
Loading...
বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরে ঘট প্রতিষ্ঠা দিয়ে শুরু হয়ে গেল রাঢ়বঙ্গের দুর্গাপুজো

বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরে ঘট প্রতিষ্ঠা দিয়ে শুরু হয়ে গেল রাঢ়বঙ্গের দুর্গাপুজো


ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক, পূর্ব বর্ধমান: নয়নয় করেও প্রায় ৩৫৭ বছর অতিক্রম করল বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সর্বমঙ্গলা মন্দিরের দুর্গাপুজো। তৎকালীন বর্ধমানের মহারাজা সঙ্গম রায় চুনারিদের কাছ থেকে কষ্টি পাথরের অষ্টাদশভূজা সিংহবাহিনী এই মূর্তিকে উদ্ধার করে দেবী সর্বমঙ্গলা নামে পুজো শুরু করেন। বৃহস্পতিবার রাজ আমলের প্রথা মেনেই বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সর্বমঙ্গলা মায়ের ঘট উত্তোলন ও প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়েই বর্ধমানে আনুষ্ঠানিকভাবে শারদ উৎসবের সূচনা হল।


মহালয়ার পরের দিন প্রতিপদে রূপোর ঘটে কৃষ্ণসায়র থেকে জল ভরে ঘোড়ার গাড়িতে করে ঘট নিয়ে বাদ্যযন্ত্র সহকারে শোভাযাত্রার মাধ্যমে প্রতিবারের মত এবারেও মন্দিরে আনা হয় সেই ঘট। কোভিড বিধি মেনেই এদিনের ঘট উত্তোলন উপলক্ষ্যে শোভাযাত্রায় ভক্তরা অংশ নেন। কৃষ্ণসায়রের চাঁদনী ঘাট থেকে ঘটে জল ভরা হয়। এরপর এই ঘট প্রতিষ্ঠা করা হয় মায়ের মন্দিরে। জানা যায়, ১৭০২ সালে বর্ধমানের মহারাজ কীর্তিচাঁদ টেরাকোটার তৈরি মন্দির নির্মাণ করে দেবীকে প্রতিষ্ঠা করেন। বৃহস্পতিবার কোভিড বিধি মেনে ভক্তসমাগমের মধ্যে, শোভাযাত্রা সহকারে, ঢাক, ব্যাণ্ড বাজিয়ে এক্কা গাড়িতে করে গিয়ে কৃষ্ণসায়র থেকে রুপোর ঘটে জল পুড়ে দেবীর ঘট প্রতিষ্টা হল। 


উল্লেখ্য, এর আগে বাঁকা নদী থেকে ঘট উত্তোলন করা হতো। পরে তা নিয়ে বিতর্ক দেখা দেওয়ায় রাজ আমলের প্রতিষ্ঠিত কৃষ্ণসায়র থেকে শুরু হয় ঘট নিয়ে আসা। ৯ দিন ধরে চলবে মায়ের পুজো। তার সাথে চণ্ডীপাঠ। এছাড়াও বছরের প্রতিদিনই নিয়ম মেনে দেবীর পুজা হয়। দেবীকে ভোগ বিতরণ করা হয়। রুপোর সিংহাসনে মা আসীন। আগে সন্ধি পুজোয় কামান দাগা হতো, মেষ, মহিষ ও ছাগ বলি হতো। কিন্তু ১৯৯৭ সালে সন্ধিপুজোয় কামান দাগার সময় তা ফেটে যায়। কামানের টুকরো বিঁধে মারা গেছিলেন এক মহিলা সহ ২জন। আহত হয়েছিলেন শতাধিক ব্যক্তি। এরপরই বন্ধ হয়ে যায় এই প্রথা। বর্তমানে আর কামান দাগা হয় না। 


একসময় এই সন্ধিপুজোয় কামানের আওয়াজ শুনে আশেপাশের সমস্ত জমিদার বাড়িতে সন্ধিপুজো শুরু হতো। দেবী সর্বমঙ্গলা মন্দিরে নবমীতে হয় নব কুমারী পুজো। মন্দিরের ট্রাষ্ট বোর্ডের সম্পাদক সঞ্জয় ঘোষ জানিয়েছেন, কোভিডের কারণে এবারেও মন্দিরে পুজোর সময় কোনো ভিড় করা যাবে না। এদিন এই ঘট উত্তোলনে হাজির ছিলেন জেলাশাসক প্রিয়াংকা সিংলা, বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস, সর্বমঙ্গলা মন্দিরের পুরোহিত অরুণ ভট্টাচার্য, ট্রাষ্টি বোর্ডের সম্পাদক সঞ্জয় ঘোষ সহ অন্যান্যরা।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});