Headlines
Loading...
ভাতারে বোমা তৈরির মশলা উদ্ধারের ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা, গ্রেফতার দুই, অভিযোগের তীর বিজেপির দিকে

ভাতারে বোমা তৈরির মশলা উদ্ধারের ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা, গ্রেফতার দুই, অভিযোগের তীর বিজেপির দিকে


ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতারের এরুয়ার অঞ্চলের শ্রীপুর গ্রামে একটি বাড়িতে বোমা তৈরি করার সময় হাতেনাতে ধরা পরে গেলো কয়েকজন দুষ্কৃতী। এই ঘটনায় বুধবার বিকেলে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। গ্রামবাসীদের অভিযোগ দুষ্কৃতীরা সকলেই বিজেপি আশ্রিত। তাদের আরও অভিযোগ, ভাতার পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ তথা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রভাবশালী নেতা মানগোবিন্দ অধিকারীর উপর ফের আক্রমণের উদ্দেশ্যেই বোমা তৈরির মশলা মজুদ করা হয়েছিল ওই বাড়িটিতে। ভাতার থানার পুলিশ ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে আটক করেছে। 

জেলা পুলিশের ডিএসপি ক্রাইম সমরেশ দে জানিয়েছেন, ভাতারের এরুয়ার গ্রামের একটি বাড়ি থেকে বোমা তৈরির মশলা উদ্ধার হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। 

পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের প্রাক্তন কর্মাধক্ষ তথা তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা যুব নেতা সান্তনু কোনার জানিয়েছেন, বুধবার এরুয়ার অঞ্চলের শ্রীপুর গ্রামে বলগোনা-গুসকরা রাস্তার ধারে এক ব্যক্তির বাড়িতে বোম তৈরির মশলা মজুদ করে বোমা বাঁধার কাজ করছিল কয়েকজন বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতী। স্থানীয় গ্রামবাসীরা সেই ঘটনার খবর পেয়ে বাড়িটিকে ঘিরে ফেলে হাতেনাতে ধরে ফেলে চারজনকে। এদের মধ্যে কয়েকজন পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। 

তিনি জানিয়েছেন, গত লোকসভা ভোটের কিছুদিন পর এরুয়ার অঞ্চলে ভয়ংকর হামলা চালিয়েছিল বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। সেই সময় গ্রামবাসীদের হাতেই ধরা পরে গিয়েছিলো বেশ কয়েকজন সশস্ত্র দুষ্কৃতী। অনেকের বিরুদ্ধেই সুয়ো মোটো মামলা করা হয়েছিল। তাদের অনেকেই এখন ফেরার। সান্তনু বাবু জানিয়েছেন, মূলত মানগোবিন্দ অধিকারীকে হত্যা করার জন্যই এই হামলা চালানো হয়েছিল। এর আগেও ২০১১ সালের ৩০জানুয়ারি স্কুল নির্বাচন কে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সময় মানগোবিন্দ অধিকারীর উপর গুলি চালিয়েছিল সিপিএম এর হার্মাদরা। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি। 

এবার করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশের ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে ফের বিজেপির দুষ্কৃতীরা মানগোবিন্দ বাবুর উপর আক্রমণ চালানোর পরিকল্পনা করছিল। সান্তনু বাবু জানিয়েছেন, এরুয়ার অঞ্চল ভাতার বিধাসভার মধ্যে তৃণমূলের সবথেকে শক্ত ঘাঁটি। বিগত ৯৮সাল থেকে এই পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এই এলাকার প্রভাবশালী নেতা তথা দক্ষ সংগঠক মানগোবিন্দ অধিকারীকে রাস্তা থেকে সরাতে পারলে বিজেপির পথ প্রশস্ত হতে পারে, এই ভাবনায় নোংরা রাজনীতিতে নেমেছে বিজেপি। 

গ্রামবাসীদের অনেকেই জানিয়েছেন, শ্রীপুর থেকে মানগোবিন্দ বাবুর পার্টি অফিসের দূরত্ব মাত্র দেড় কিলোমিটার। প্রায় প্রতিদিন তিনি দলের কর্মীদের নিয়ে সকাল, বিকেল, সন্ধ্যা এই পার্টি অফিসেই বসে থাকেন। এই পার্টি অফিস থেকে কিছুটা গেলেই মুরাতিপুর মোড়। আর সেখান থেকে কিছুটা এগোলেই মঙ্গলকোট। সুতরাং দুষ্কৃতীরা পরিকল্পনা করেই শ্রীপুর গ্রামে বোমা তৈরির মশলা মজুদ করে বোমা বানাচ্ছিলো। যাতে সহজেই মোটরসাইকেল নিয়ে যাবার পথে পার্টি অফিসে হামলা চালিয়ে মঙ্গলকোট ঢুকে যাওয়া যায়। গ্রামবাসীদের একাংশের সন্দেহ, এই দুস্কৃতীদের অনেকের বাড়ি মঙ্গলকোটে। 

এদিকে ভাতারের এই ঘটনা সম্পর্কে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব জানিয়েছেন, এই ঘটনার সঙ্গে বিজেপির কেউ যুক্ত নয়। এটা সম্পূর্ণ তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল। কারণ ভাতারে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল সম্পর্কে কারোর অজানা নয়। 
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});