ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: একদিকে প্রসূতি যখন যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে, অন্যদিকে সেইসময় কর্তব্যরত নার্সরা মোবাইলে গেম খেলতে ব্যস্ত। নার্সদের এমনই অমানবিক কাণ্ডে শেষপর্যন্ত মৃত্যু হল প্রসূতির। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই রবিবার সকালে চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগে তীব্র উত্তেজনা ছড়াল বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। মৃতের নাম রিম্পা তালুকদার(২০)। তার বাড়ি বর্ধমানের কাঞ্চননগর বেলপুকুর এলাকায়।
মৃতের পরিবারের অভিযোগ,হাসপাতালে কর্তব্যরত নার্সদের গাফিলতির জেরেই মৃত্যু হয়েছে রিম্পার। এব্যাপারে মৃতার স্বামী পঙ্কজ তালুকদার হাসপাতালের সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে এদিন নার্স ও চিকিৎসকদের গাফিলতি এবং তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেছেন। উত্তেজনার জেরে ঘটনাস্থলে বর্ধমান থানা থেকে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। হাসপাতালের ডেপুটি সুপার অমিতাভ সাহা জানিয়েছেন, এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে অভিযোগ জানালেও মৃতদেহ ময়না তদন্ত না করেই বাড়ি নিয়ে চলে গেল রোগীপক্ষের লোকজন।
এ ব্যাপারে রিম্পার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে,শুক্রবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ প্রসব যন্ত্রনা নিয়ে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় রিম্পাকে। ঐদিনই সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ দুটি সন্তানের জন্ম হয় তার। পরিবারের অভিযোগ ,শনিবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ রিম্পার পেটে তীব্র যন্ত্রনা হতে থাকে। কিন্তু কর্তব্যরত নার্সদের এব্যাপারে বলা সত্ত্বেও তারা আমলই দেননি, উপরন্তু তারা মোবাইল ফোনে গেম খেলছিলেন বলে অভিযোগ। রিম্পার মা আলো বণিকের অভিযোগ ,রাত আড়াইটে নাগাদ রিম্পার যন্ত্রনা চরমে উঠলে তিনি বারবার ডাক্তার ও নার্সদের ডাকা সত্ত্বেও তারা আসেন নি,বরং তাদের বারবার বিরক্ত করায় তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় এক নার্স। এদিকে পরিস্থিতি বাড়াবাড়ি হলে রবিবার সকালে একজন ডাক্তার এলেও তিনি জানিয়ে যান তিনি গাইনীর ডাক্তার তাই সিজারিয়ান পেসেণ্ট তিনি দেখবেন না। এর কিছুক্ষণ পর অন্য আর একজন ডাক্তার আসেন। তিনি প্রসূতিকে অপারেশন থিয়েটার নিয়ে চলে যান। আর তার কিছুক্ষণ পরই তাঁরা
জানান প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে।
পঙ্কজবাবু জানিয়েছেন,তিনি শুক্রবার রাতে রিম্পাকে সুস্থ দেখে যান। এমনকি শনিবার সারাদিন রিম্পা ভালই ছিলেন। শনিবার রাত্রি প্রায় দশটা নাগাদ তিনি সুস্থ রিম্পার সঙ্গে কথা বলে বাড়ি চলে যান। তাঁর অভিযোগ ,কেবলমাত্র হাসপাতালের নার্সদের গাফিলতিতেই তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে।