ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,মেমারী: আর কেবলমাত্র সময়ের অপেক্ষা। করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করাতে গিয়ে খোদ ডাক্তার, নার্স সহ চিকিৎসা কর্মীদের আক্রান্ত হবার আশংকা কমতে চলেছে পূর্ব বর্ধমানের মেমারী শহরের বাসিন্দা একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী দিগন্তিকা বোসের আবিষ্কারে। চলতি করোনা উদ্ভূত পরিস্থিতির মাঝেই সম্প্রতি দিল্লীর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গোটা ভারতবর্ষ জুড়েই কোভিড-১৯কে কেন্দ্র করে একটি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। আর যেহেতু লকডাউন পর্বে স্কুল বন্ধ। তাই ঘরে বসেই এবং কার্যত ঘরকেই ল্যাবরেটরী বানিয়ে মেমারির ভি এম ইনস্টিটিশন ইউনিট ২ এর একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী দিগন্তিকা এক বিশেষ ধরণের মাস্ক বানিয়ে ফেলে। যার নাম দিয়েছে সে - Air providing and virus destroying mask।
গত ২২ এপ্রিল ই-মেলে চ্যালেঞ্জ কোভিভ -১৯ কমপিটিশন (সি৩) , ন্যাশনাল ইনোভেশন ফাউণ্ডেশন – ইণ্ডিয়া বা এনআইএফের পক্ষে ড. ভিভেক কুমার দিগন্তিকাকে জানিয়ে দেন, তার এই আবিষ্কার এই প্রতিযোগিতা থেকে বাছাই করা হয়েছে এবং পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য তৈরী হতে চলেছে। এব্যাপারে দিগন্তিকার মতামত জানতে চাওয়া হয়। কারণ ভারত সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এই মাস্ককেই কোভিড -১৯ প্রতিরোধক হিসাবে গোটা ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দিতে চাইছে। ইতিমধ্যেই দিগন্তিকা সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানিয়ে দেয় নিঃশর্ত সমর্থন রয়েছে তার।
দিগন্তিকা জানিয়েছে, ভাইরোলজির মত বিষয় নিয়ে কাজ করা তাও আবার বাড়িকেই গবেষণাগার বানিয়ে এবং সর্বোপরি তার তৈরি করা মাস্ক সরাসরি করোনা যুদ্ধে অংশ নিতে চলেছে - এই ভেবে ভাল লাগছে।দেশের জন্য কিছু করতে পেরে সে রীতিমত খুব আনন্দিত। উল্লেখ্য, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে পরপর নতুন উদ্ভাবনের জন্য রাষ্ট্রপতি পুরষ্কার জয় করেছে দিগন্তিকা।
দিগন্তিকার বাবা সুদীপ্ত বোস জানিয়েছেন, এই বিশেষ ধরনের মাস্ক, যা পরে প্রশ্বাস নিলে ধূলিকণা ও ভাইরাস মুক্ত বাতাস ফুসফুসে প্রবেশ করবে। অপরদিকে নভেল করোনা পজেটিভ কোনো ব্যক্তি এই মাস্ক পরলে তাঁর ত্যাগ করা নিঃশ্বাস ,হাঁচি , কাশি থেকে নির্গত ড্রপলেট এর মধ্যে থাকা করোনা ভাইরাস বা অন্য কোন ভাইরাসকে প্রতিনিয়ত নষ্ট করে দেবার ক্ষমতা রয়েছে এই মাস্কের। ফলে সংক্রমণের সম্ভাবনা কমে যাবে। সুদীপ্তবাবু জানিয়েছেন, এই মাস্ককে ভারত সরকার সিলমোহর দেওয়ায় জরুরি পরিষেবায় যুক্ত মানুষ বিশেষ করে ডাক্তার, নার্স দের জীবন রক্ষার সহায়ক হয়ে উঠতে চলেছে দিগন্তিকার এই আবিষ্কার। তিনি জানিয়েছেন, করোনা ভাইরাস রুখতে এই মাস্ক বাজারে আসতে কেবলমাত্র সময়ের অপেক্ষা।