ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: রেশনে খাদ্য সামগ্রী না পেয়ে দিনের পর দিন হয়রানির শিকার হয়ে চলতি লকডাউনের মাঝেই পূর্ব বর্ধমানে জেলা খাদ্য ভবনের সামনে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন বর্ধমান শহরের প্রায় শতাধিক মানুষ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। তাঁরাই অবরোধকারীদের হঠিয়ে দেয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয় বর্ধমান স্টেশন সংলগ্ন এলাকায়।
বর্ধমান শহরের রবীন্দ্রপল্লীর বাসিন্দা গৃহবধু সন্ধ্যা রায় এদিন অভিযোগ করেছেন, তাঁর একটি ছোট্ট দোকান রয়েছে। লকডাউনের জেরে তা একমাস ধরে বন্ধ। এদিকে রেশনও পাচ্ছেন না। তিনি আবেদন করেছেন। আবেদনের প্রমাণ হিসাবে তাঁর কাছে বারকোডও রয়েছে। কিন্তু সরকারী নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত তাকে রেশনের মাল দেওয়া হচ্ছে না। তিনি জানিয়েছেন, দিনের পর দিন তিনি আসছেন খাদ্য ভবনে। কখনও তাঁকে বলা হচ্ছে তাঁকে পুরসভায় যেতে আবার কখনও বলা হচ্ছে তাঁর নাম অনুমোদন করে এখনও পোর্টালে নেই। তাই তিনি রেশন পাবেন না।
শুধু সন্ধ্যা রায়ই নন, বিশ্বজিত ঘোষ বর্ধমান শহরের বাসিন্দা। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর নাম পোর্টালে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কিন্তু তিনি যখন ফুড কুপন আনতে যাচ্ছেন তাঁকে বলা হচ্ছে ফুড কুপন দেবার ব্যাপারে সরকারী কোনো নির্দেশ আসেনি। চৈতালী হাজরা নামে এক গৃহবধু এদিন জানিয়েছেন, তাঁর পরিবারের ১০জন সদস্যের মধ্যে ৫জনের ডিজিটাল কার্ড এসেছে। বাকিদের এখনও আসেনি। তিনি একবছর ধরে ঘুরছেন খাদ্য দপ্তরে। তিনি নিজে পরিচারিকার কাজ করেন। স্বামী রিক্সাচালক। এই অবস্থায় গোটা সংসার নিয়ে অথৈ জলে পড়েছেন।
এদিকে, খোদ খাদ্য ভবনের গেটেই ঝোলানো হয়েছে সরকারী নির্দেশিকা। যেখানে বলা হয়েছে ডিজিটাল কার্ড যাঁরা পেয়েছেন তাঁরা রেশনের মাল পাবেন। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে যাঁরা কার্ড পাননি কিন্তু আবেদন করেছেন, যাঁদের আবেদন ৩১ মার্চের মধ্যে মঞ্জুর হয়েছে তাঁরা ফুড কুপন পাবেন। বলা হয়েছে, যে সমস্ত দরিদ্র মানুষ যাঁরা ডিজিটাল কার্ড বা ফুড কুপন কোনোটাই পাননি তাঁরা স্পেশ্যাল জি আর-এর কুপন পাবেন। এই ফুড কুপন ও জিআর-এর কুপন পুরসভা সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেবে।
কিন্তু এদিন বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেছেন, সরকারী এই নির্দেশই মানা হচ্ছে না। এমনকি খাদ্য ভবনের গেটে তালা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা কিছু জানতেই পারছেন না। উল্লেখ্য, আগামী ১ মে থেকে রেশনে বিভিন্ন ডিজিটাল কার্ড অনুসারে রেশনের মাল দেওয়া শুরু হচ্ছে। এবার বিনামূল্যে মাথাপিছু ৫কেজি করে চাল দেবার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে চলতি পরিস্থতিতে সাধারণ মানুষের দাবীও জোড়ালো হয়ে উঠেছে।