ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: প্রায় এক মাস হতে চলেছে টানা লকডাউন চলছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকান এবং অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা ছাড়া সবকিছু বন্ধ। বন্ধ মদের দোকানও। স্বাভাবিকভাবেই মদের জন্য হাহাকার চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। আর এই সুযোগ কে কাজে লাগিয়ে এবার এক শ্রেণীর প্রতারক রীতিমত টাকা আত্মসাৎ করে চলেছে। তবে সবটাই ঘটছে অনলাইনে।
এরই মধ্যে বর্ধমান শহরের বেশ কিছু মদের খদ্দের এই প্রতারণার শিকারও হয়েছেন। যদিও মদ কিনতে চেয়ে প্রতারিত হয়েছেন বুঝে ওঠার পর লোকলজ্জার ভয়ে কেউই আর অভিযোগ করেছেন না। গত কয়েকদিনে শহরের বেশ কয়েকজন যুবক বর্ধমান সদর থানায় এই প্রতারণার বিষয়ে জানতে গিয়েও নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হয় ফিরে আসেন। তাদের মধ্যে একজন জানিয়েছেন, ফেসবুক এবং হোয়াটসআপ এর মাধ্যমে বর্ধমান শহরের দুটি ঠিকানার দুটি মদের দোকানের ছবি সহ ফোন নম্বর দেখে মদের জন্য ফোন করা হয়েছিল।
ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, ফোনের ওপর প্রান্ত থেকে প্রথমে হিন্দিভাষী একজন গুগল পে অথবা ফোন পে তে টাকা পেমেন্ট করার কথা বলেন। সেই মতো মদ কোথায় ডেলিভারি করতে হবে জানিয়ে সাত হাজার দু,শ টাকা পেমেন্ট করে দেওয়া হয়। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাবার পরেও মদ না পেয়ে ফের ফোনে যোগাযোগ করা হলে উল্টো দিক থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় এই ধরণের কোন পেমেন্ট তারা পায়নি। আর এরপরই ওই ব্যক্তি বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন।
শুধুমাত্র একটি ঘটনাই নয়, এই ধরণের প্রতারণার শিকার হয়েছেন অনেকেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরো এক প্রতারিত ব্যক্তি জানিয়েছেন, ফেসবুকে 'বাদমতলা ওয়াইন শপ' নাম দিয়ে ২৪ঘন্টা সার্ভিস দেওয়া হয় জানিয়ে সেখানে একটি ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও 'লিকার ওয়াইন শপ' গ্র্যান্ড ট্র্যাংক রোড, গোদা, বর্ধমান, পশ্চিমবঙ্গ - ঠিকানা দিয়ে সেখানে হোম ডেলিভারি এবং সব ব্র্যান্ড পাওয়া যাচ্ছে বলে ফোন নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে। আর এই ফোন নম্বরে ফোন করে মদের অর্ডার দিয়ে টাকা জলে গেছে বলে ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন।
জানা গেছে, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে কিছু প্রতারক এই সময় মদ নিয়ে প্রতারণা চালাচ্ছে। পুলিশ এই ব্যাপারে আভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করেছে। তবে নির্দিষ্ট ভাবে এখনো কোন অভিযোগ পুলিশের কাছে জমা পড়েনি। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, যে ফোন নম্বরগুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে তার বেশিরভাগই ভিন রাজ্যের। ফলে মানুষ সচেতন না হলে এই ধরণের প্রতারণার শিকার অনেকেই হতে পারেন। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার ঘোষণা করা হয়েছে কোনো ধরনের গুজব, প্ররোচনা যাতে কেউ না ছড়ায়। এমনকি সামাজিক ভারসাম্য ব্যাহত হতে পারে এই ধরণের কোন পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় না দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবু মদের অভাব মেটাতে অনেকেই এই ধরণের ভুয়ো পোস্ট দেখে প্রভাবিত হয়ে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন।