ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: দেখতে দেখতে জীবনের ৭৯ টা বছর পার করে দিলেন রাজ্যের প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। একই সাথে তার বেঁচে থাকার অন্যতম রসদ খাল বিল ও চুনো মাছ উৎসব ১৯টা বছর পার করে ফেললো। নদীর মধ্যে ভাসমান মঞ্চ করে বাউল গান। নদীর পাড়ে ছবি আঁকার প্রতিযোগিতা, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের হাতের তৈরি জিনিসের মেলা - হয়তো এই মানুষটি না থাকলে পূর্বস্থলির বড় কোবলার মানুষেরা এই সুখানুভুতি কোনোদিনই পেতেন না। স্বপ্নকে বাাস্তবে পরিণত করার এক সত্যি ঘটনার নিদর্শন আজ এই উৎসব।
তৎকালীন মৎসমন্ত্রী কিরণময় নন্দ থেকে আজকের মৎসমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা এই উদ্যোগ কে সাধুবাদ জানিয়ে গেছেন। বাংলায় ছড়িয়ে থাকা খালবিল কে নিয়ে যে কোনো উৎসব করা যাবে, সেই ভাবনাটা রাজ্যবাসীর কাছে তুলে ধরে ছিলেন স্বপন বাবুই।
আর ১৯ টা বছর পর করে এবার রাজ্য সরকারের ময়না প্রকল্পের অন্তর্ভূক্ত হল রাজ্যের প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের উদ্যোগে খালবিল চুনো মাছ পিঠে পুলি উৎসব। বুধবার বর্ধমানের কালনা মহকুমার বিদ্যানগর কোবলার বাঁশদহ বিলে এই উৎসবের উদ্বোধন করতে এসে একথা জানিয়ে গেলেন রাজ্যের মৎসমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা।
উল্লেখ্য, প্রায় ২১০ হেক্টর জলাশয়কে ঘিরে গত ১৯বছর ধরে এই উৎসব করে আসছেন স্বপনবাবু। মূলত, লুপ্তপ্রায় দেশীয় বিভিন্ন চুনো মাছকে বাঁচানোর লক্ষ্য নিয়েই তিনি এই আন্দোলন শুরু করেন। পরবর্তীকালে উৎসবের চেহারা নিয়েছে এই আন্দোলন। এদিন এই উৎসব প্রাঙ্গণ থেকেই স্বপনবাবু ঘোষণা করেন, ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নির্দেশে এবং রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকের সহযোগিতায় উদ্যোগে এই বাঁশদহ বিলের ধারে পর্যটকদের জন্য একটি হলিডে হোম তৈরি করা হবে। যার জন্য ইতিমধ্যেই ২ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকা অনুমোদন করা হয়েছে ।
স্বপন বাবু এদিন জানান, ইতিমধ্যেই এব্যাপারে প্রাথমিক পর্বের নকশা অনুমোদনের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। গোটা কাজটি করবে পূর্ত দপ্তর। স্বপনবাবু জানিয়েছেন, গতবছর থেকেই এই বিলে প্রচুর সংখ্যায় পরিযায়ী পাখি আসতে শুরু করেছে। ফলে পর্যটকদের কাছে ক্রমশই আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে এই বিল। ইতিমধ্যেই একটি ট্যুরিষ্ট লজ তৈরী হয়েছে। এরপরই আগামী নতুন বছরেই গড়ে উঠতে চলেছে হলিডে হোম। স্বপনবাবু জানিয়েছেন, মাটি পরীক্ষা সংক্রান্ত একটি বিষয় আটকে রয়েছে। তাঁরা আশা করছেন খুব শীঘ্রই এই বিষয়টিও মিটে গেলে কাজ শুরু হবে।
অন্যদিকে, এদিন মৎসমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা জানিয়েছেন, প্রতিবছরই এই উৎসবকে ঘিরে এই বিলে চারাপোনা ছাড়া হয়। এবারে দুটি ভাগে মোট ৪০ কুইণ্টাল মাছ ছাড়া হবে। যার মধ্যে চুনো মাছ ছাড়াও রয়েছে বড় মাছ। এদিন আনুষ্ঠানিকভাবে ৩ কুইণ্টাল মাছের চারা ছাড়া হয়েছে। বাকি ৩৭ কুইন্টাল মাছ ধাপে ধাপে ছাড়া হবে। এদিন এই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার সভাধিপতি শম্পা ধাড়া, সহকারী সভাধিপতি দেবু টুডু, জেলাশাসক বিজয় ভারতী সহ বিশিষ্ট জনেরা।