Headlines
Loading...
বর্ধমানে বর্ষবরণের একাধিক অনুষ্ঠান ঘিরে তৈরি হল আশংকা, বিতর্ক

বর্ধমানে বর্ষবরণের একাধিক অনুষ্ঠান ঘিরে তৈরি হল আশংকা, বিতর্ক


ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: রাত পোহালেই বছর শেষের অনুষ্ঠান আর রাত বাড়তেই শুরু হবে নতুন বছরকে বরণ করে নেবার পালা। আর এই অনুষ্ঠানকে ঘিরেই এবার বিতর্ক তুঙ্গে উঠল বর্ধমানে। জানা গেছে, প্রতিবছরের মতই এবারও বেশ কয়েকটি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান বর্ষবরণের জন্য নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। কয়েকটি সংস্থা নাকি আবার তাঁদের কোনো নির্দিষ্ট লাইসেন্স না থাকলেও বছরের পর বছর তাঁরা এই বর্ষবরণের নামে বাণিজ্যিক ভাবে দেদার অর্থ লুটে চলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

এরই পাশাপাশি বর্ষবরণের নামে রীতিমত জাতীয় সড়কের ধারে বিভিন্ন রেস্তোঁরায় চলছে তারই মহড়া। বিগত বছরগুলোতে এই ধরণের অনুষ্ঠানে যাওয়ার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন যুবক যুবতীদের একাংশ  জানিয়েছেন, কুপনের মাধ্যমে বাজারের নির্দিষ্ট দামের থেকে দ্বিগুন, তিনগুন বেশি দামে এইসব অনুষ্ঠান আয়োজনকারী সংস্থা এই সব অনুষ্ঠানে মদ বিক্রি করে মুনাফা অর্জন করার চেষ্টা করে। আর এবার সেই ঘটনায় রাশ টানতে চাইছেন খোদ আবগারী দপ্তর। 

পূর্ব বর্ধমান জেলা আবগারী দপ্তরের সুপারিনটেনডেন্ট
তপন কুমার মাইতি জানিয়েছেন, প্রতিবছরই তাঁরা বিশেষ বিশেষ দিনে মোবাইল পেট্রোলিং করে থাকেন। এবারও তার কোনো ব্যতিক্রম হচ্ছে না। এরই পাশাপাশি তাঁরা কয়েকটি নামী দামী রেস্তোরাঁতেও ঢুঁ মারবেন। সেখানে কারা কারা অনুষ্ঠান করছেন, আদপেই তাঁদের কোনো মদ বিক্রির বৈধ লাইসেন্স আছে কিনা - সবটাই খতিয়ে দেখা হবে। যদিও আবগারি আধিকারিক জানিয়েছেন, এই ধরণের অনুষ্ঠানে মদ বিক্রি করার অনুমতি চেয়ে কোনো সংস্থা দপ্তরে দরখাস্ত করেনি।   

অন্যদিকে, জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ইতিমধ্যেই কয়েকটি সংস্থা বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের জন্য বর্ধমান থানায় আবেদন জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, এই ধরণের অনুষ্ঠান করার ক্ষেত্রে সরকারী নিয়ম মেনে অনুমোদন নিতে হয়। সাধারণত পিপিএলের অনুমোদন পাবার পর থানায় এবং থানার অনুমতি পাবার পর মহকুমা শাসকের কাছে মাইক বাজানোর আবেদন করতে হয়। প্রশ্ন উঠেছে, যে সমস্ত সংস্থা এই ধরণের বাণিজ্যিক অনুষ্ঠান করার জন্য অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে তাদের বৈধতা নিয়েও। এবছর এই বিষয়টিকে কড়াভাবেই দেখা হচ্ছে বলে জানা গেছে। 

আবগারী সূত্রের খবর, সংশ্লিষ্ট হোটেল বা রেস্তোরাঁয় মদ বিক্রির কোনো অনুমোদন আছে কিনা তা খতিয়ে দেখার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বর্ষবরণের আয়োজনকারী সংস্থা কিভাবে মদ ব্যবহার করছেন তাও খতিয়ে দেখা হবে। জানা গেছে, অনেক ক্ষেত্রেই আয়োজক সংস্থা সংশ্লিষ্ট রেস্তোরাঁয় এই ধরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে রেস্তোরাঁর বৈধ মদের লাইসেন্সকেই হাতিয়ার করে। অনুষ্ঠানে আসা ব্যক্তিদের কার্যত দ্বিগুণ থেকে কয়েকগুণ বেশি দামে মদ বিক্রি করে কুপনের মাধ্যমে। এর মাধ্যমেই তারা অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন করে। কিন্তু এর বিনিময়ে সরকারী কোনো রেভিন্যু আদায় হয়না। এবছর এই বিষয়টিকেই গুরুত্ব দিচ্ছে আবগারী দপ্তর। 

অন্যদিকে, গত কয়েকদিনে খোদ বর্ধমান জেলায় লাগাতার পথ দুর্ঘটনায় ব্যাপক হারেই মৃত্যুর ঘটনা ঘটায় বর্ষবরণের অনুষ্ঠানকে ঘিরে রীতিমত চিন্তা দেখা দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে সেফ ড্রাইভ সেফ লাইভের মান্যতা নিয়েও। এরই মাঝে তীব্র শৈত্য প্রবাহে অতিরিক্ত উষ্ণতা আনতে উঠতি ছেলেমেয়েরা গলা পর্যন্ত মদ খেয়ে অধিক রাতে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে সেরে জাতীয় সড়ক ধরে দুর্নিবার গতিতে গাড়ি চালালে দুর্ঘটনার মিছিল আরও বাড়ার সম্ভাবনা। 

এমনকি নিয়মানুযায়ী রাত্রি ১০টার পর মাইক বাজানো নিষিদ্ধ করা হলেও বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে অধিক রাত পর্যন্তই চলে দেদার ডিজে এবং খানাপিনা। ফলে রাত পোহালেই বর্ষবরণের অনুষ্ঠানকে ঘিরে একাধিক দুশ্চিন্তা নিয়েই নতুন বছর প্রবেশ করতে চলেছে বলে ওয়াকিবহাল মহলের মত।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});