Headlines
Loading...
পিঁয়াজের পর এবার আলুর দামের তাপে হাত পুড়ছে গৃহস্থের

পিঁয়াজের পর এবার আলুর দামের তাপে হাত পুড়ছে গৃহস্থের


ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: পিঁয়াজের পর এবার আলু নিয়ে শুরু হয়ে গেল গৃহস্থের নাভিশ্বাস ওঠার পালা। আচমকাই হু হু করে আলুর দাম বাড়তে শুরু করায় তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। 
পাশাপাশি যে হারে পিঁয়াজের দাম বেড়েছিল তা ক্রমশই নামতে শুরু করেছে। কিন্তু পিঁয়াজের দাম কমার সঙ্গেই সঙ্গেই আলুর দাম হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে। বর্ধমানের আলুর পাইকারী ব্যবসায়ী চন্দ্র বিজয় যাদব জানিয়েছেন, আলুর দাম বাড়ায় বাংলার প্রায় সমস্ত কোল্ড স্টোরেজ থেকেই পুরনো আলু বেড়িয়ে গেছে। কার্যত হিমঘরে আর পুরনো আলু নেই। আর যাদের কাছে পুরনো আলু আছে তারাই বিক্রি করছেন। 

চন্দ্রবিজয় জানিয়েছেন, পুরনো আলু রবিবার বর্ধমানের বাজারে ২১ টাকা প্রতি কেজি পাইকারী বিক্রি হয়েছে। খোলা বাজারে এদিন পুরনো জ্যোতি আলু বিক্রি হয়েছে ২৪-২৫ টাকা প্রতি কেজি। অন্যদিকে, পিঁয়াজ ছোট সাইজের এদিন পাইকারী বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৭০ টাকা। বড় পিঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭৫- ৮০ টাকা প্রতি কেজি। তিনি জানিয়েছেন, এদিন উত্তরপ্রদেশ এবং জলন্ধর থেকে নতুন আলু ঢুকতে শুরু করেছে। রবিবার এই নতুন আলু বিক্রি হয়েছে ১১০০ টাকা বস্তা, অর্থাৎ ২২ টাকা প্রতি কেজি পাইকারী বাজারে। তিনি জানিয়েছেন, তাঁরা আশা করছেন আগামী ১৫-২০ দিন পর থেকে আলুর বাজার স্বাভাবিক হবার সম্ভাবনা রয়েছে। 

অন্যদিকে, বর্ধমান সদর আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক উত্তম পাল জানিয়েছেন, এবার ডিসেম্বর মাসের আগেই পূর্ব বর্ধমান জেলার সিংহভাগ হিমঘর থেকে পুরনো আলু বেড়িয়ে গেছে। চাষীর কাছে যা আলু ছিল বাজারে আলুর দাম ভাল থাকায় তাও বিক্রি হয়ে গেছে। ফলে আলু নিয়ে এবার একটু টানাপোড়েন থাকছেই আগামী বেশ কিছুদিন। 

তিনি জানিয়েছেন, জেলার একমাত্র কালনা মহকুমার বুলবুলিতলা এলাকার কয়েকটি হিমঘরে কিছু পুরনো আলু আছে। কিন্তু তাও বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি জেলার চাষীদের কাছ থেকে এখনও নতুন আলু ওঠার পরিস্থিতি তৈরী হয়নি। ফলে আলুর বাজার আগামী কয়েকদিন চড়া থাকারই সম্ভাবনা। সেক্ষেত্রে পাঞ্জাব তথা জলন্ধর এবং উত্তরপ্রদেশ থেকে কি পরিমাণ আলু আসবে তার ওপর নির্ভর করছে বাজারে আলুর জোগান এবং দাম। 

অন্যদিকে, এব্যাপারে পূর্ব বর্ধমান জেলা কৃষি আধিকারিক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এবছর বুলবুলের প্রভাবে পূর্ব বর্ধমান জেলায় আলু চাষে দেরী এবং কিছুটা ক্ষতিও হয়েছে। বুলবুলের প্রভাবে আলু গাছের স্বাভাবিক বাড়বৃদ্ধি বেশ কিছুটা থমকে যায়। ফলে এই সময় যেখানে বাজারে নতুন আলু চলে আসে তা আসতে পারেনি। তবে আস্তে আস্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। 

তিনি জানিয়েছেন, এবছর বুলবুলের প্রভাবের আগে যেখানে গোটা জেলায় ৬২-৬৩ হাজার হেক্টরে আলু চাষ হয়েছিল সেখানে বুলবুলের প্রভাব কাটার পর তা বেড়ে গতবারের মতই প্রায় ৭৫ হাজার হেক্টর এলাকায় আলু চাষ হচ্ছে। জগন্নাথবাবু জানিয়েছেন, সাধারণত, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই বাজারে পোখরাজ গোত্রের আলু চলে আসে। কিন্তু বুলবুলের জন্য পোখরাজ আলু গাছে ক্ষতি হওয়ায় এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে তাঁরা আশা করছেন আগামী কিছুদিনের মধ্যেই বাজারে নতুন আলু চলে আসবে।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});