Headlines
Loading...
চোরা শিকারীদের অত্যাচারে বর্ধমানে পরিযায়ী পাখি আসা কমছে

চোরা শিকারীদের অত্যাচারে বর্ধমানে পরিযায়ী পাখি আসা কমছে


ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান:  চোরা শিকারী থেকে শুরু করে অত্যুৎসাহি কিছু ছেলেদের উৎপাতে পরিযায়ী পাখির আনাগোনা বন্ধ হয়ে যেতে বসেছে বর্ধমান ১নং ব্লকের কুড়মুন এলাকার রামনগর এলাকার একটি বিশাল জলাশয়ে। গ্রামের বারোয়ারী সম্পত্তি এই জলাশয়ে গত কয়েক বছর ধরেই পরিযায়ী পাখির ভিড় জমছিল। কিন্তু গতবছর থেকেই চোরা শিকারীদের উৎপাতে পরিযায়ী পাখিদের আসার সংখ্যা দ্রুতই কমছে। গত কয়েকদিনে মাত্র হাত গোণা কয়েকটি সাইবেরিয়ান পাখি এসেছে। কিন্তু তারা এতটাই আতংকিত যে বিশাল জলাশয়ের মাঝখান থেকে জলাশয়ের কিনারায় আসতে ভয় পাচ্ছে। এমনকি অল্প কিছু আওয়াজ হলেই তারা নিজেদের সরিয়ে নিচ্ছে। 

আর এই ঘটনায় রীতিমত মুষড়ে পড়েছেন এই জলাশয়ের দেখভালের দায়িত্ব থাকা গৌতম মালিক। নয়নয় করে তিনি এই জলাশয় দেখভাল করছেন প্রায় ৮ বছর। জানিয়েছেন, গত কয়েকবছর ধরেই তিনি হঠাতই লক্ষ্য করেন শীত বাড়তেই হরেকরকমের পাখি এসে বসছে জলাশয়ে। দারুণ সুন্দর বিশালাকার পাখিদের দেখে তিনিই জলাশয়ের বিভিন্ন জায়গায় বাঁশ পুঁতে দাঁড় করে দিয়েছেন। যাতে পাখিরা সেখানে বসে থাকতে পারে। 

গৌতমবাবু জানিয়েছেন, পাখিদের দেখভাল করার জন্য তাঁকে কেউ দায়িত্ব দেননি। কিন্তু এই পাখিদের দেখে তাঁর মায়া হয়। আর তারপরেই তিনি গতকয়েক বছর ধরে এই পরিযায়ী পাখিদের ওপর যাতে কেউ আক্রমণ করতে না পারে সেজন্য দিনভর বিনা অর্থে পাহারা দিয়ে চলেছেন। কিন্তু জলাশয়ের চারিদিকে থাকা বড় বড় গাছগুলিতে আশ্রয় নেওয়া পাখিকে গুলতি দিয়ে কিংবা অন্যভাবে গোপনে শিকার করা হচ্ছে। আর এটাকে তিনি আটকাতে পারছেন না। তবে তিনি চেষ্টা করছেন। সকলকে বারণ করছেন এই পাখিদের না মারতে। 

উল্লেখ্য, এই প্রায় ৩৫ বিঘা জলাশয়কে ঘিরে তৈরী করা হয়েছে একটি পার্ক তথা পিকনিক স্পট। শীত পড়তেই প্রচুর ভিড়ও হয় এই পার্কে। গৌতমবাবু জানিয়েছেন, আগে এখানে পিকনিক পার্টিরা উচ্চস্বরে মাইক বাজাতেন, ফটকা ফাটাতেন। কিন্তু এই পাখিদের জন্য সেসব নিষেধ করা হয়েছে। এখন আর কাউকেই মাইক বাজাতে বা আওয়াজ করতে দেওয়া হয়না। নজরদারী চালানো হয়। কিন্তু জনমানষের অত্যাচারে গতবছরের তুলনায় এবারে পরিযায়ী পাখিদের আসা কমে যাওয়ায় রীতিমত দুঃখ প্রকাশ করেছেন পাখিপ্রেমী হয়ে ওঠা গৌতম মালিক।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});