ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমানঃ বর্ধমান শহরের ১২ নং ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলার পম্পা পালের স্বামী অনন্ত পালের উপর বিজেপি আশ্রিত গুণ্ডাদের আক্রমনের প্রতিবাদে সোমবার তীব্র উত্তেজনা তৈরি হল খোদ বর্ধমান সদর থানার সামনে। রবিবার রাতে এবং সোমবার সকালে দু দুবার অনন্ত পাল সহ তৃণমূলের বেশ কয়েকজনকে শহরের বড়নীলপুর কুমোরপাড়া এলাকায় বিজেপির কিছু কর্মী ব্যপক মারধোর করে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয় শহরে। আর এরপরই সোমবার দুপুরে বর্ধমান পৌরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলার তথা জেলা তৃনমূল কংগ্রেসের সাধারন সম্পাদক খোকন দাসের নেতৃত্বে কয়েকশ তৃনমূল নেতা কর্মী বর্ধমান থানা ঘেরাও করে। অবরোধ করে দেওয়া হয় থানার সামনে ব্যাস্ততম রাস্তা বি সি রোড। এদিনের বিক্ষোভে হাজির ছিলেন প্রাক্তন কাউন্সিলার পম্পা পাল, সুশান্ত প্রামানিক, সাহাবুদ্দিন খান, প্রদীপ রহমান, আই এন টি টি ইউ সি নেতা ইফতিকার আহমেদ, ছাত্র নেতা রাসবিহারী হালদার, আব্দুর রব সহ শহরের বহু তৃনমূল নেতা।
এদিন থানায় দাঁড়িয়ে কার্যত পুলিশকে চরম হুঁশিয়ারিও দেন খোকন দাস। তিনি বলেন, 'বর্ধমান শহরকে অর্জুন সিং এর ভাটপারা হতে দেবো না। যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিজুক্তদের পুলিশ গ্রেফতার না করে, তাহলে আগামিকাল থেকে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে দল।' খোকন দাস বলেন, ' বিজেপি যদি মনে করে থাকে রাজ্যে ১৮ টা আসন পেয়ে রাজ্য দখল করে নিয়েছে তাহলে তারা মূর্খের স্বর্গে বাস করছে। তৃনমূল সংযত আচরণ করছে তার মানে এই নয় যে বিজেপি যা খুশি তাই করবে আর তারা চুপ করে বসে থাকবে।' তিনি বলেন, 'বিজেপির হার্মাদরা শহর জুড়ে তৃনমূলের কর্মী সমর্থকদের বাড়িতে দিনে রাতে হামলা চালাচ্ছে। আমরা এসব বরদাস্ত করবো না। প্রয়োজনে প্রতিরোধ গোড়ে তলা হবে।' খোকন দাস এদিন বর্ধমান থানার পুলিশেকে নিরেপক্ষ ভাবে কাজ করার জন্যও আবেদন জানান।
এদিকে তৃণমূল নেতা অনন্ত পাল জানিয়েছেন, রবিবার রাতে তাঁর এলাকায় কয়েকজন তৃণমূল নেতা কর্মী এবং মহিলা কর্মীকে মারধর করে বিজেপি সমর্থকরা। খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গেলে তাঁকেও ব্যাপক মারধর করা হয়। এরপর সোমবার সকালে তিনি যখন তাঁর ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে আসেন সেই সময় ফের বিজেপির সমর্থকরা তাঁকে বেধড়ক মারধর করে। খবর পেয়ে তাঁকে বাঁচাতে তৃণমূলের কর্মীরা এগিয়ে এলে তাঁদেরও মারধর করা হয়। এর মধ্যে সারথী দত্ত নামে এক তৃণমূল মহিলা কর্মীকে বর্ধমান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি জানান, ঘটনায় জড়িত ব্যাক্তিদের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও, পুলিশ কাউকেই গ্রেফতার করেনি।
এদিকে এদিন তৃণমূলের একাধিক নেতা থানার ভিতর দাঁড়িয়েই পুলিশকে সাফ জানিয়ে দেয় যদি দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা না হয় তাহলে তারা আইন নিজেদের হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবে। এমনকি পুলিশকে এদিন তারা কুকুরের সঙ্গেও তুলনা করেন। শহরের ৫ নং ওয়ার্ডের তৃনমূল নেতা ইফতিকার আহমেদ (পাপ্পু) তার বক্তব্যে অভিযোগ করেন, বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের তোলাবাজির কারণে সাধারন মানুষ সরকারের প্রতি বিরুপ হয়েছে। তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, বাম আমলে এই পুলিশ নেতাদের কথায় ওঠবস করতো। আর এখন তৃণমূলের নেতাদের থানার ভিতর ঢুকতে দেয় না। এইসব বরদাস্ত করা হবে না। ইফতিকার আহমেদ এদিন কার্যত বর্ধমান থানার আই সি - র আচরণের তীব্র প্রতিবাদ জানান।
অন্যদিকে, অনন্ত পালকে মারধরের ঘটনাকে সম্পূর্ণ এলাকার মানুষের রাগের বর্হিপ্রকাশ বলে জানিয়েছেন বিজেপির জেলা সহ সভাপতি প্রবাল রায়। তিনি জা্নিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই অনন্ত পালের তোলাবাজি এবং দাদাগিরিতে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন। এই ঘটনায় এলাকার মানুষই তার প্রতিবাদ করেছে। এর সঙ্গে বিজেপির কোনো সম্পর্ক নেই।