Headlines
Loading...
বর্ধমানে যুদ্ধের ইতিহাসের স্মারককে আড়াল করে দেওয়ার অভিযোগ ঘিরে বিতর্ক

বর্ধমানে যুদ্ধের ইতিহাসের স্মারককে আড়াল করে দেওয়ার অভিযোগ ঘিরে বিতর্ক



ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমানঃ ঠিকাদারের হাতে পড়ে বর্ধমান শহরের এক ঐতিহাসিক স্মারককে আড়াল করে দেবার অভিযোগ উঠল। ১৬০৭ খ্রীষ্টাব্দের মার্চ মাসে সের আফকান (আফগান)-এর সঙ্গে তৎকালীন বাংলার সুবাদার কুতুবউদ্দিনের যুদ্ধ এবং উভয়েরই মৃত্যু সংক্রান্ত ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী স্বরূপ দুটি স্মারক স্থাপন করা হয়েছিল বর্ধমান ষ্টেশন সংলগ্ন বর্তমান বর্ধমান ভবন চত্বরে। তার মধ্যে একটি স্মারকের সামনেই একটি ঠিকাদার সংস্থা একটি ঘর তৈরী করায় ইতিহাসকে আড়াল করার অভিযোগ উঠেছে। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা নজরে আসতেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নেবার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

 বর্ধমানের বিশিষ্ট ইতিহাস গবেষক ড. সর্বজিত যশ জানিয়েছেন, বর্ধমান ষ্টেশন সংলগ্ন বর্তমান বর্ধমান ভবন এলাকাতেই দিল্লী থেকে সম্রাট জাহাঙ্গীরের নির্দেশে উদ্ধত ও বিদ্রোহী সের আফকানকে বন্দি করার উদ্দেশ্যে তাঁবু গেড়েছিলেন তৎকালীন বাংলার শাসনকর্তা কুতুবউদ্দিন খান কোকালতাল চিশতি। ১৬০৭ খ্রীষ্টাব্দের মার্চ মাসে অল্পসংখ্যক কিছু সৈন্য নিয়ে বর্ধমানে আসেন কুতুবউদ্দিন খান।সের আফকান কুতুবউদ্দিনের সঙ্গে দেখা করতে এলে তাঁকে তাঁবুতে রেখে কুতুবউদ্দিনের সৈন্যরা বেড়িয়ে যান। সেই সময় কুতুবউদ্দিন তাঁর দুই অনুচরকে নিয়ে আচমকাই সের আফকানকে আক্রমণ করেন। পালাবার উপায় না থাকায় কুতুবউদ্দিনের আক্রমণ প্রতিহত করেন সের আফকান এবং এখানেই কুতুবউদ্দিনকে খুন করেন সের আফকান। পাল্টা কুতুবউদ্দিনের সেনাপতি অম্বা খাঁ কাশ্মীরি আক্রমণ চালায় সের আফকানের ওপর। দ্বৈতযুদ্ধে দুজনেই নিহত হন। 

ড. সর্বজিত যশ জানিয়েছেন, বর্ধমানের পীরবাহারামে কুতুবউদ্দিন এবং সের আফকানের সমাধি রয়েছে। যদিও কুতুবউদ্দিনের দেহ দিল্লীতে নিয়ে চলে যাওয়া হয়। তিনি জানিয়েছেন, ইতিহাসের এই ঘটনার নির্দশন হিসাবে বর্তমান বর্ধমান ভবন এলাকাতেই দুটি স্মারকস্তম্ভ স্থাপন করা হয়। যার একটি সামনে থাকলেও অন্য স্মারকটিকে সম্পূর্ণ আড়াল করে তার সামনে একটি ঘর তৈরী করা হয়েছে। এই ঘটনাকে ইতিহাসের অপমান বলেই তিনি মনে করছেন। তিনি জানিয়েছেন, প্রশাসনের উচিত গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া।

 
এব্যাপারে বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক(সাধারণ) অরিন্দম নিয়োগী জানিয়েছেন, গোটা বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্ধমান ভবনের এলাকাটি যেহেতু জেলা পরিষদের অধীন তাই এব্যাপারে জেলা পরিষদকে জানানো হবে। অপরদিকে, এব্যাপারে জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি দেবু টুডু জানিয়েছেন, অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েই গোটা বিষয়টিকে দেখা হবে। প্রয়োজনে ওই স্মারককে সামনে নিয়ে এসে বসানোর ব্যবস্থা করা হবে। এব্যাপারে বর্ধমান ভবনের দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হবে।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});