Headlines
Loading...
গাছ লাগান,আর কোটিপতি হয়ে যান - এমনটাই স্বপ্ন দেখাচ্ছেন বর্ধমানের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক

গাছ লাগান,আর কোটিপতি হয়ে যান - এমনটাই স্বপ্ন দেখাচ্ছেন বর্ধমানের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক


ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমানঃ  আজ শুন্য হাতে শুরু, কিন্তু আজ থেকে প্রায় ২০ বছর পর আপনি হতে পারেন কোটি টাকার মালিক। হাতে কলমে চাষী সহ সাধারণ মানুষকেও এমনটাই স্বপ্ন দেখাচ্ছেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক তথা চলতি সময়ে স্যাণ্টালাম এলবাম প্রকল্পের প্রোজেক্ট ডিরেক্টর ড. জগৎপতি তা। জগৎপতি বাবু জানিয়েছেন, ২০১৩ সালের আগে পর্যন্ত ভারতবর্ষের বৃক্ষ মানচিত্রে স্যাণ্টালাম এলবাম বা শ্বেত চন্দন গাছের তেমন কোনো নামই ছিল না। কিন্তু ২০১৩ সালে ব্যাঙ্গালোরে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক একটি সেমিনার থেকে এই বিষয়টি জানতে পারার পর পশ্চিমবঙ্গেও শ্বেত চন্দন গাছের চাষ বাড়ানোর উদ্যোগ নেন জগতবাবু।

তিনি জানিয়েছেন, শ্বেতচন্দন গাছের ঔষধি গুণের বিষয়টি কাউকে বলার অপেক্ষা রাখে না। বাজারে অত্যন্ত মূল্যবান গাছ হিসাবেই পরিচিত। কিন্তু মজার বিষয় এই শ্বেতচন্দন গাছ চাষ করা যেমন সহজসাধ্য, তেমনি অত্যন্ত লাভজনকও। উপরন্তু এই গাছ চাষে তেমনভাবে কোনো খরচও নেই। সেচও লাগে কম। প্রথম ২ বছর গাছটিকে আগলে রাখতে পারলে আর পিছন ফিরে তাকানোর ব্যাপার নেই – এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। বিশেষত, রুক্ষ্ম তথা খরাপ্রবণ এলাকাতেও এই গাছ ভাল হয়। জগৎপতি বাবু জানিয়েছেন,২০১৩ সালের পর যেখানে গোটা রাজ্যে মাত্র ৩হাজার চন্দন গাছ ছিল। ২০১৭ সাল থেকে রাজ্য সরকারের অর্থানূকূল্যে গৃহিত বর্ধমান রাজ কলেজের এই প্রোজেক্ট চালু করার পর বর্তমানে এই গাছের সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আগামী মার্চ মাস থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনেও নতুন একটি প্রকল্প শুরুও করতে চলেছেন তিনি। কেবলমাত্র বর্ধমান রাজ কলেজের প্রকল্প এলাকা থেকেই তিনি ১০ হাজারেরও বেশি চারাগাছ অন্য রাজ্যে পাঠিয়েছেন।


তিনি জানিয়েছেন, গোটা রাজ্যে শ্বেত চন্দনের গাছের চাষ বাড়াতে বিনামূল্যে চারা দিচ্ছেন তাঁরা। প্রাপক চারা পাওয়ার পর প্রতি ৩ মাস অন্তর তাদের কাছে গাছের বিষয়ে খোঁজও নেওয়া হচ্ছে। কোথাও কোনো অসুবিধা থাকলে তা দূর করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, শ্বেত চন্দন গাছ কেবলমাত্র চাষ ভিত্তিকই নয়, যে কেউ লাগাতে পারেন – জায়গা থাকলেই হল। তবে মনে রাখতে হবে শ্বেত চন্দন গাছ লাগালেই হবে না, অন্তত প্রথম দুবছর তারই সঙ্গে একটি আশ্রয়দাতা গাছ লাগাতে হবে। এই আশ্রয় দাতা গাছের মধ্যে রয়েছে অড়হর, তুলসী, নয়নতারা ,আঁকন্দ প্রভৃতি গাছ। 

জগতবাবু জানিয়েছেন, গাছের বয়স ২০ হলেই প্রায় পরিণত এই গাছ ৩০০ থেকে ৩৫০ কেজি কাঠ দেবে। মাটির উপরের ভাগের কাঠের দাম বর্তমান বাজারে যা ১৫ হাজার টাকা প্রতি কেজি তা ২০ বছর পর আরও দাম বাড়ার সম্ভাবনা। এমনকি মাটির ভেতর শিকড় ইত্যাদি কাঠও পাওয়া যেতে পারে নয়নয় করেও প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার। তবে মনে রাখা দরকার গাছের বয়স ১৫ বছর হলেই তাকে পাহারা দেবার প্রয়োজন আছে চোরের হাত থেকে বাঁচাতে। একইসঙ্গে গাছের বয়স যখন প্রায় ৬ বছর, তখন থেকেই গাছে ফুল ও ফল আসতে শুরু করে। সেই বীজ সংগ্রহ করেও চারা তৈরী করা যায় অনায়াসেই।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});