Headlines
Loading...
ট্রেন থেকে বর্ধমান স্টেশনে ফের বস্তাবন্দি ৭০ টি কচ্ছপ উদ্ধার, উঠছে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন

ট্রেন থেকে বর্ধমান স্টেশনে ফের বস্তাবন্দি ৭০ টি কচ্ছপ উদ্ধার, উঠছে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমানঃ একের পর এক কচ্ছপ উদ্ধারের ঘটনায় ক্রমশই কপালে চিন্তার ভাঁজ চওড়া হচ্ছে বর্ধমান ষ্টেশনের জিআরপির পাশাপাশি জেলা পুলিশেরও। চলতি শীতের সময় এই কচ্ছপ পাচারের ঘটনা ভয়ানক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় প্রশ্ন উঠছে পুলিশী নিরাপত্তা নিয়েও। শনিবার সকালে ফের বর্ধমান স্টেশনের পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ডাউন দুন এক্সপ্রেসে জিআরপির রুটিন তল্লাশির সময় জেনারেল বগি থেকে উদ্ধার হল বস্তাবন্দী ৭০ টি কচ্ছপ। এই ঘটনায় কেউ ধরা পড়েনি। এদিনই কচ্ছপগুলিকে বনদপ্তরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ৭০ টি কচ্ছপ দুটি বস্তায় ছিল।

উল্লেখ্য, সাম্প্রতিককালে কচ্ছপ পাচারের আদর্শ ট্রেন হিসাবে পাচারকারীরা বেছে নিয়েছেন এই ডাউন দুন এক্সপ্রেসকেই। সম্প্রতি পরপর বেশ কয়েকটি ঘটনায় ডাউন দুন এক্সপ্রেস থেকে এভাবে কচ্ছপ উদ্ধার হওয়ায় যাত্রীরা মজা করে দুন এক্সপ্রেসের নাম করেছেন কচ্ছপ ট্রেন হিসাবেও। পাচারকারীরা বর্ধমান স্টেশনকে করিডর হিসাবে ব্যবহার করছে বলে মনে করছেন পুলিশ কর্তারা। যদিও কিছুদিন আগে সড়ক পথেই ৫০১টি কচ্ছপ উদ্ধার করেন বনদপ্তরের কর্মীরা। বর্ধমানের বড়শুলে দু নম্বর জাতীয় সড়কে উদ্ধার হয় ৫০১ টি কচ্ছপ। উত্তরপ্রদেশ থেকে চারচাকা গাড়িতে বস্তায় ভরে পাচার করা হচ্ছিল কচ্ছপগুলিকে। পাচারের অভিযোগে গ্রেফতারও করা হয় দুজনকে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযান চালায় ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরো ও বনদফতরের বিশেষ টীম। এছাড়াও সম্প্রতি ডাউন কালকা মেল থেকে ২৪০ টি কচ্ছপ উদ্ধার করে বর্ধমান স্টেশনের জিআরপি। বর্ধমান স্টেশনের পাঁচ নম্বর প্লাটফর্মে ডাউন কালকা মেল দাঁড়ালে কর্তব্যরত জিআরপি কর্মীরা রুটিন তল্লাশীর সময় জেনারেল বগির সিটের নীচে মোট ৬ টি বস্তা থেকে ২৪০ টি কচ্ছপ উদ্ধার হয়। এই ঘটনাতেও কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

অপরদিকে, গত ২৯ ডিসেম্বর গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মেমারী থানার পুলিশ উদ্ধার করে ১৪০০টি দেশীয় কচ্ছপ। এই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় ৫ জনকে। ধৃতদের মধ্যে ৩জন মহিলাও ছিলেন। ধৃতদের প্রত্যেকেরই বাড়ি উত্তরপ্রদেশের সুলতানপুর জেলার পিপরপুর থানার পাকড়ি এলাকায়। ধৃত ৫ জনেরই বয়স ১৮ থেকে ২৭এর মধ্যে। ২নং জাতীয় সড়কে পালসিট টোলপ্লাজার কাছে মেমারী থানার পুলিশ টহল দেবার সময় কলকাতাগামী একটি পিকআপ ভ্যান থেকে উদ্ধার হয় প্রায় ৩০টি বস্তা। এই বস্তা থেকেই উদ্ধার হয় প্রায় ১৪০০টি কচ্ছপ। কচ্ছপগুলিকে হাওড়ায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। 

ধৃত কচ্ছপ পাচারকারীরা জানিয়েছেন, উত্তরপ্রদেশ থেকে অতীব সস্তায় এই কচ্ছপ কিনে এনে তা হাওড়ায় পাঠানো হয়। কেজি প্রতি কেনা দামের তুলনায় ৪ গুণ বেশি দাম পান হাওড়ায়। গড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি প্রতি বিক্রি করতে পারছেন তাঁরা। খরচ বাদ দিয়ে এক একজন পাচারকারী মাসে প্রায় ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করছেন এই কাজে। প্রতি সপ্তাহে দুবার করে তাঁরা এই কচ্ছপ পাচার করছেন। পাশাপাশি তাঁরা জানিয়েছে্ন, হাওড়ায় পাইকারী হারে কচ্ছপ দেবার পর তা রাজ্যের অন্যান্য জেলায় চলে যাচ্ছে। বিশেষত, বিদেশীদের কাছে এবং হোটেলে কচ্ছপের মাংসের চাহিদা তুঙ্গে থাকে এই শীতের সময়। আর তাই ঝুঁকি নিয়েই অর্থের জন্য চলছে দেদার কচ্ছপ পাচার। যার নিরাপদ করিডর তৈর করা হয়েছে বর্ধমানকেই। ট্রেনে ধরপাকড় হতে থাকায় সড়কপথেও চলছে এই পাচারের কাজ।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});