ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,মেমারিঃ পূর্ব বর্ধমানের মেমারি বাসস্ট্যাণ্ডের কাছে স্টেট ব্যাঙ্ক শাখার ভল্ট থেকে ৮৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনায় মেমারী থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করল ব্যাঙ্কেরই কর্মী তারক জয়সওয়ালকে। এদিন তারক জয়সওয়াল নিজেই দুপুর আড়াইটে নাগাদ ব্যাঙ্কে হাজির হন। সঙ্গে সঙ্গে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ থানায় খবর দেন। পুলিশ এবং ব্যাঙ্ক অফিসাররা প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে তাঁকে ব্যাঙ্কের মধ্যেই জেরা করেন। ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গেছে, তারকবাবু তাঁর দোষ কবুল করেছেন। এরপরই বিকাল ৫টা নাগাদ পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে,কয়েকবছর ধরেই ব্যাঙ্কের সিনিয়র এ্যাসিস্ট্যাণ্ট তারক জয়সওয়াল এই টাকা গায়েবের কাজ করে যাচ্ছিলেন সকলের অজান্তেই। গ্রাহকরা যে টাকা ও কয়েন জমা দিতেন, তা কাগজে কলমে দেখানো হলেও তিনি তার থেকেই কিছু টাকা সরিয়ে রাখতেন। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, প্রায় বছর খানেক ধরেই তারকবাবু এইভাবেই অর্থ সরাচ্ছিলেন। জমতে জমতে যার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। জানা গেছে, গত ২৭ ও ২৮ নভেম্বর ব্যাঙ্কের অডিট শুরু হয়। অডিটররা ২৯ তারিখ ব্যাঙ্কের কয়েনের হিসাব নেবার কথা বলেন। এরপরই আচমকা উধাও হয়ে যান তারকবাবু। ২৯ নভেম্বর অডিটররা দেখেন ব্যাঙ্কের ভল্টে যেখানে মোট ৮৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা থাকার কথা তা নেই।
উল্লেখ্য, তারকবাবু সিনিয়র এ্যাসিস্ট্যাণ্ট ছাড়াও তিনি ক্যাশ বিভাগের দায়িত্বেও ছিলেন। প্রাথমিকভাবে অনুমান দীর্ঘদিন ধরেই তারকবাবু এই টাকা লোপাটের কাজ করে গেছেন। এদিন দুপুরে আচমকাই তিনি ব্যাঙ্কে হাজির হওয়ার পর প্রায় আড়াইঘণ্টা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা। তারপরই তিনি তাঁর দোষ স্বীকার করে নিলে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেন। যদিও এব্যাপারে খোদ তারক জয়সওয়াল মুখ খুলতে চাননি।
উল্লেখ্য, মেমারী বাসস্ট্যাণ্ডের স্টেট ব্যাঙ্কের শাখার ভল্ট থেকে ৮৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা গায়েব হয়ে যাওয়ার এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার মেমারী থানায় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কার্যত, বৃহস্পতিবার রাত থেকে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় মেমারী শহর জুড়ে। কিভাবে ওই পরিমাণ টাকা গায়েব হয়ে গেল তা নিয়েও রহস্য দানা বাধে। পাশাপাশি ব্যাঙ্কেরই এক কর্মীর আচমকা উধাও হয়ে যাওয়ায় কৌতূহলও বাড়ে। ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গেছে, তারক জয়সওয়ালের কাছেই ছিল ওই ভল্টের চাবি। গত ২৯ নভেম্বর থেকেই তিনি অফিসে আসা বন্ধ করে দেন। এব্যাপারে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি তাঁর স্ত্রীর হাত দিয়ে ব্যাঙ্কের ওই ভল্টের চাবি পাঠিয়ে দেন। .
কিন্তু এরপরই প্রশ্ন উঠেছে এই বিপুল পরিমাণ কয়েন কিভাবে সরানো হল? টাকার বদলে কেন কয়েনই সরানো হল? প্রশ্ন উঠেছে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ একদিনে সরানো হয়েছে নাকি ধাপে ধাপে সরানো হয়েছে? সেক্ষেত্রে ব্যাঙ্কের নজরদারী নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গেছে, আদপেই তারক জয়সওয়াল কয়েন সরাননি। তিনি টাকাই সরিয়েছেন। কিন্তু ব্যাঙ্কের খাতায় দেখানো হয়েছে কয়েন জমা পড়াকেই। স্বাভাবিকভাবেই অডিটররা কয়েনের ঘাটতিকেই সামনে আনেন। যদিও পুলিশের একটি মহলের অভিমত, কিভাবে কি ঘটেছে তা তারক জয়সওয়ালকে জেরা করার পরই জানা যাবে।