ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,কালনাঃ ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করার পর মৃতদেহে আগুন লাগিয়ে প্রমান লোপের চেষ্টা করলো দুই দাদা। এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার গভীর রাত্রে কালনা থানার কল্যাণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কেলেনই গ্রামে। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কালনা মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়। পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত দুই দাদাকে আটক করে রাখা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
মৃত বিকাশ সর্দ্দারের (২৭) শ্যালক কার্ত্তিক ক্ষেত্রপাল জানান, তার জামাইবাবুরা তিন ভাই। দুই দাদা অশোক সর্দ্দার ও তাপস সর্দ্দারের সাথে জায়গার ভাগাভাগি নিয়ে জামাইবাবু বিকাশ সর্দ্দারের সঙ্গে বিবাদ দীর্ঘ দিনের। প্রায়শই তাদের মধ্যেসই ঝামেলা লেগে থাকতো। কিন্তু শুক্রবার রাত্রিতে সেই বিবাদ চরমে পৌঁছায়। কার্ত্তিক ক্ষেত্রপাল জানান,বিকাশ সর্দ্দার একজন বাজনদার শিল্পী। শুক্রবার সন্ধ্যায় সে স্থানীয় বারোয়ারী পুজোয় বাজাতে যায়। রাত্রি একটা নাগাদ সেখান থেকে বাজনার কাজ শেষ করে মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরে আসে। বাড়িতে সে চেঁচামেচি শুরু করলে দুই দাদা অস্ত্র হাতে বেরিয়ে আসে। জামাইবাবুর মাতলামোকে হাতিয়ার করে তারা জামাইবাবুকে অস্ত্র দিয়ে কোপাতে শুরু করে বলে অভিযোগ। শেষে মৃত্যু হলে বাড়িতেই মৃতদেহের উপর পাটকাঠি চাপিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। পাঁচ বছরের শিশুপুত্র অমিত সর্দ্দারকে দিয়ে জামাইবাবুর মুখাগ্নি করা হয়।
মৃতের গর্ভবতী স্ত্রী সোনালী সর্দ্দার জানান, মারার সময় আমার স্বামীর বুকের উপর শুয়ে পড়েও তাঁকে বাঁচাতে পারলাম না। মারার পর আমার একমাত্র ছেলে অমিতকে দিয়ে জোর করে মুখাগ্নি করিয়ে নেয় আমার দুই ভাসুর।
স্থানীয় কল্যাণপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান পিন্টু খামারু জানান, ওদের পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো। শুক্রবার সেই কলহ চরমসীমায় পৌঁছালে দুই দাদার হাতে বিকাশ সর্দ্দার খুন হয়। এই খুনের ঘটনাকে অন্যপথে চালিত করতেই মৃতদেহের উপরে পাটকাঠি চাপিয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। যাতে সকালে উঠে মানুষজনকে দেখানো যায় যে, বিদ্যুতের তারে আগুন লেগে তার মৃত্যু হয়েছে।