পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ ব্যাবসার ফন্দি এটেছিল ভালই, কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। বাড়ি বা রাস্তায় পিস্তল দেখিয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনা নয়, খোদ সরকারি হাসপাতালে হাসপাতাল কর্মী পরিচয় দিয়ে মহিলা ওয়ার্ডের ভেতর ঢুকে মহিলাদের ভয় দেখিয়ে মোবাইল, টাকা,গহনা ছিনতাই করছিল এক যুবক। শুক্রবার হাতেনাতে ধরা পরে প্রথমে জুটল গনপ্রহার। পরে ঠাঁই হল শ্রীঘরে। ধরা পরে কাঁচুমাচু মুখে শ্রীমান চোর জানালো, সে সকাল সকাল স্নান সেরে হাসপাতালে ঢুকে পরত। তারপর শুরু করত চুরির খেলা। গত বেশ কিছুদিন ধরে সে এইভাবেই ছিনতাই করছিল। ঘটনাটি সিউড়ি সুপার স্পেসালিটি হাসপাতালের।
পুরুষ ওয়ার্ডে নয়, বেছে নিয়েছিল মহিলা ও শিশু ওয়ার্ড গুলিকে। ভদ্র পোশাক পড়ে সরকারি কর্মীর মত হাসপাতালের ভেতর অবাধ বিচরন ছিল চোরের। নিজের নামকরন করে ফেলেছিল ওয়ার্ড সুপারভাইজার। রোগীরা যাতে মোবাইল সহ অন্যান্য জিনিস ব্যাবহার করতে না পারে তার দিকে নজর রাখাই নাকি তার কাজ বলে জানত গুনধর যুবক। মহিলা রোগীদের রীতিমতো নির্দেশ দিত সে- এখানে মোবাইল রাখা যাবে না। কারোর গলায় সোনার চেন দেখতে পেলে, তাকে বলা হত এগুলো এখানে রাখা যাবে না। ওয়ার্ডের ভেতর এসব দেখলে বকাবকি করবে হাসপাতাল সুপার।এমনকি সেগুলো তাকে দিয়ে দিতে বলত। সেই নাকি হাসপাতালে জমা দিয়ে দেবে। এরপর অধিকাংশ রোগী বকাবকির ভয়ে সেগুলো তার হাতে দিয়ে দিত। কিন্তু পরে তাকে আর দেখা পাওয়া যাচ্ছিল না। সেগুলি কে নিয়ে হাটতে হাটতে হাসপাতালের ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে চম্পাট দিত যুবকটি । ঠিক একইরকম পদ্ধতিতে মোবাইল চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে গেল এক মোবাইল চোর। গণপিটুনি দিয়ে সিউড়ি থানা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় তাকে।
কিন্তু রোগীর আত্মীয়দের প্রশ্ন পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে, পুলিশ নিয়ে যাচ্ছে, কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দিচ্ছে। তাদের কোন শাস্তি হচ্ছে না। আর সব থেকে বড় প্রশ্ন যেখানে প্রায় দু'শোর কাছাকাছি নিরাপত্তারক্ষী হাসপাতালে নিয়োগ করা হয়েছে, সেখানে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে কি করে। তাদের নজর এড়িয়ে সাধারণ মানুষ রোগীর কাছে যেতে পারে না, কিন্তু চোরের দল কিভাবে ঢুকে যাচ্ছে হাসপাতালের ভেতরে। প্রশ্নটা তুলছে রোগীর আত্মীয়রা। বিষয়টি নিয়ে বীরভূম জেলা মুখ্য সাস্থ্য আধীকারীক হিমাদ্রী আড়ি জানান, দ্রুত তদন্ত করে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে, যদি কারও গাফিলতির প্রমান পাওয়া যায় তবে সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে কড়া শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।