পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ এ এক আজব গ্রামের গজব কথা। অনবরত কল থেকে বেরিয়ে আসছে জল।হাতলে হাত দেবার দরকারই পড়ে না । এমন একটা নলকূপ যার হাতল আছে, কিন্তু জল পেতে টিপতেই হয়না হাতলটি। দিনরাত কলের মুখ থেকে বেরিয়ে আসছে পানীয় জল।বীরভূম জেলার সিউড়ি থানার মল্লিকপুর পঞ্চায়েতের পলসড়া গ্রামে রয়েছে এমনই আজব এই নলকূপটি।
৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে চন্দ্রভাগা নদীর তীরে অল্প কিছু দরিদ্র পরিবার নিয়ে এই পলসড়া গ্রাম। সেখানে ২০০২ সালে গ্রামবাসীদের পানীয় জলের সুবিধার কথা ভেবে বসানো হয়েছিল একটি গভীর নলকূপ। আর নলকূপ বসাতেই আজব কান্ড। হাতল না টিপতেই বেরিয়ে আসতে থাকে জল। সেই তখন থেকে এখনও অব্দি অবিরামভাবে কলের মুখ থেকে বেরিয়ে আসছে জল। গ্রামবাসীরা এই জল অবলীলাক্রমে পানীয় হিসেবে ব্যবহারও করে আসছেন বছরের পর বছর।এমনকি সুস্বাদু এই পানীয় জলের জন্য অন্য গ্রাম থেকেও কেউ কেউ আসেন এই কলের জল নিতে।
গবেষকদের মতে, বক্রেশ্বর উষ্ণ প্রস্রবনের মত এটিও একটি আর্টেজিয় কূপ। তাই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। গ্রামবাসীরা অবশ্য এসব নিয়ে ভাবতে চান না ।এই জল নিয়ে কেউ বোতলে ভরে তৃষ্ণা মেটাচ্ছেন, কেউ মুখে দিচ্ছেন, কেউ আবার বালতিতে ভরে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। এই পানীয় জলের কলের কথা শুনে কল দেখতে ভির করছে আশপাশের গ্রামের মানুষজন। ইতিমধ্যে কলের এই অবাক কান্ডের খবর পেয়ে পূর্ত দফতর থেকে কর্মীরা ঠিক করতে গিয়েছিল কলটি, কিন্তু পলসন্ডা গ্রামের মানুষরা জানিয়ে দেন কলে কোনোরকম কিছু করা চলবে না। কল থেকে যেমন ভাবে জল পাওয়া যাচ্ছে তাতে তাদের কোনো অসুবিধা নেই। বাধ্য হয়ে পূর্ত দফতরের কর্মীরা ফিরে আসেন।
গ্রামের বাসিন্দা পাপাই বাগদী বলেন, যদি কোনোদিন কলটি জল দেওয়া বন্ধ করে তবেই কলটি ঠিক করার জন্য অনুমতি দেব আমরা, নাহলে কলটিতে কোনো ভাবেই কিছু করা যাবে না। তিনি বলেন ওটা শুধু একটি জলের কল নয়, কলটি গ্রামের মানুষের হৃদস্পন্দন।
একটি জলের কলের জন্য গ্রামের এইরকম সহনাভূতি দেখে অভিভূত সিউড়ীর সদর মহকুমাশাসক কৌশিক সাহা। তিনি বলেন জলের ওপর নাম জীবন সেটা ওই গ্রামের মানুষরা প্রমান করে দিল।