পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ "অনুপ্রবেশকারীদের আমরা দেশ ছাড়া করবই। কারণ আমরা দেশের জন্য রাজনীতি করি। দেশ আমাদের কাছে আগে। যারা অনুপ্রবেশকারীদের হয়ে চিৎকার করছে তারা ভোটের রাজনীতি করছে।" মঙ্গলবার বীরভূমের রামপুরহাটে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে এসে একথা বলেলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
এদিন সকালে রামপুরহাট শহরের মহাজনপট্টি সংলগ্ন দশেরপল্লি এলাকায় ভারত মাতার পুজোর আয়োজন করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন দিলীপ ঘোষ। পুজো উপলক্ষ্যে একটি শোভাযাত্রাও বের করা হয়। তাতে অংশগ্রহণ করেন দিলীপবাবু। পরে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অখণ্ড ভারতের কথা তুলে ধরেন। বলেন, "দিনের পর দিন ভারতকে বিভাজিত করা হয়েছে। আমরা কোনও দেশকে আক্রমণ করিনি। আমাদের উপরেই আক্রমণ হয়েছে। সেকারণে আমাদের দেশকে দুর্বল ভাবা হচ্ছে। তাই আশপাশের দেশ আমাদের অশান্ত করার চেষ্টা করছে। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাজন হয়েছে একবার। পাকিস্তান কাশ্মীরের কিছুটা অংশ দখল করে রেখেছে। আগে বিদেশিরা ভারতবর্ষকে লুট করত। এখন জঙ্গি কার্যকলাপ চলছে। আমরা সকল দেশের সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক চাই। কিন্তু, সবসময় আমাদের পড়শিরা ভালো সম্পর্ক রাখতে চায় না। তাই আমাদের সচেতন হতে হবে। এখন আমাদের উপর আক্রমণ করা হচ্ছে। পাকিস্তান করেছে, চিন করেছে। আমরা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেছি।"
এরপরি দিলীপ ঘোষ অনুপ্রবেশ ও এনআরসি - এর গ্রহণযোগ্যতা তুলে ধরে বলেন, "সারা দেশে এখন শান্তি আছে। অশান্তি শুধু পশ্চিমবাংলায়। লাখ লাখ অনুপ্রবেশ হচ্ছে। বোমা, বন্দুক নিয়ে তারা প্রবেশ করছে এই রাজ্যে। প্রতিদিন রাজ্যে অস্ত্র কারখানার হদিশ মিলছে। বাইরে থেকে লোক ঢুকে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। দেশকে আবার বিভাজনের চেষ্টা করছে। তাই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি তৈরি হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের পড়ে যারা এদেশে এসেছে তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।"
এরপরই নাম না করে মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করে দিলীপ ঘোষ বলেন, "কেউ কেউ বলছেন দেশে অনুপ্রবেশকারীদের রাখতে হবে। কারণ কী, ভোট চাই। আগে যারা ছিল তারা ভোট নিয়েছে, এখন যারা আছে তারাও নিচ্ছে। যেদিন আমরা বলেছি অনুপ্রবেশকেরীদের এদেশে থাকতে দেব না, সেই থেকেই চিৎকার চেঁচামেচি শুরু হয়ে গেছে। কারণ, ভোট কমে যাবে। আমরা ভোট চাই না, আমরা দেশ চাই। এদেশে শান্তিতে থাকতে চাই। যারা অশান্তি করতে চায় তাদের এদেশে ঢুকতে দেব না। আর ঢুকলেও বের করে দেব। যারা সত্যিই দেশের নাগরিক তাদের তালিকা তৈরি হচ্ছে। যাদের কাছে দেশের নাগরিক হওয়ার প্রমাণ নেই তাদের নাগরিক সুবিধা থেকে বাদ দেওয়া হবে।"
দিলীপবাবু আরও বলেন, "শুধু অসম নয়, সারা দেশে যে কোটি কোটি অনুপ্রবেশকারী ঢুকেছে তাদের আমরা বের করে দেব। তবে পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশে যারা সংখ্যালঘু সেই হিন্দু, শিখ, পার্সি, জৈনদের উপর অত্যাচার হচ্ছে। তাই তারা পালিয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছে। আমরা তাদের শরণার্থী বলে আশ্রয় দেব। এবিষয়ে রাষ্ট্র সংঘের নির্দেশিকা রয়েছে।"