
পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ প্রতিবেশী বিবাহিত যুবকের হাতে ধর্ষিতা হয়ে গর্ভবতী ও পরে সন্তানের জন্ম দেয় এক নাবালিকা। সেই সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষার পর প্রমাণিত হয় সেই ধর্ষক ই সন্তানের পিতা। সেই ঘটনায় প্রায় তিন বছর পর ধর্ষককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল আদালত। শনিবার বীরভূমের সিউড়ি জেলা আদালতের বিচারক পার্থ সারথী সেন এই রায় দান করেন। পাশাপাশি নির্যাতিতাকে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ এবং দোষীকে ২ লক্ষ টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, দোষী ব্যক্তির নাম প্রশান্ত বাগদি ।বর্তমানে বয়স ২২ বছর। ধর্ষণের ঘটনার সময় সে বিবাহিত ছিল এবং দুই সন্তানের পিতা । বীরভূমের রাজনগর থানায় ২০১৫ সালের ৫ আগস্ট একটি ধর্ষণের মামলা দায়ের হয়। ১৬ বছর বয়সী নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিষয়টি প্রথম বুঝতে পারে তার পরিবার । যদিও সেই সময় প্রশান্তর নামে অভিযোগ দায়ের হয়নি। ২ জন অজ্ঞাত ব্যক্তির নামে অভিযোগ হয়েছিল রাজনগর থানায়। অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার পর মেয়েটি মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে সরকারি হোমে পাঠানো হয়। সেখানে কাউন্সেলিং চলার পর ক্রমশ সুস্থ হয়ে ওঠে এবং তখনই প্রশান্ত তাকে ধর্ষণ করেছে বলে জানায়। পুলিশ প্রশান্তকে গ্রেপ্তার করে। ইতিমধ্যেই নাবালিকা সন্তানের জন্ম দেয়। সন্তানের জন্মের পর ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। প্রশান্ত এবং সেই সন্তানের ডিএনএ মিলে যায়।
প্রথমে পোসকো আদালতে মামলা শুরু হলেও বিচারক না থাকার জন্য মামলাতে দেরি হয়।অভিযুক্তের পরিবারের পক্ষ থেকে কলকাতা উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন করা হয়। মামলা শুরু করার আর্জি জানানো হয় কলকাতা উচ্চ আদালত। উচ্চ আদালত জেলা আদালতে সে মামলার নিষ্পত্তি করার আদেশ দেয়। এরপর সিউড়ির জেলা জজ ঘটনার বিচার প্রক্রিয়া শুরু করে। এই মামলায় ৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। গত শুক্রবার প্রশান্তকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। শনিবার তার সাজা ঘোষণা হয়।
সিউড়ি আদালতের ভারপ্রাপ্ত সহকারী আইনজীবী সৈয়দ শমিদুল আলম জানান, নির্যাতিতা ধর্ষনের জেরে গর্ভবতী হয়ে পড়ে। পরে সন্তানও প্রসব করে। ডিএনএ পরীক্ষা করে তা প্রমানিত হয়। এই মানলায় অভিজুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত। দীর্ঘদিন ধরে এই মামলা পক্সো আদালতে চলছিল। বিচারক না থাকায় জামিনের আর্জি জানিয়েছিল অভিজুক্ত। কলকাতা উচ্চ আদালতের নির্দেশে এই মামলা পক্সো আদালত থেকে জেলা আদালতে স্থানান্তরিত হয়। সেখানেই এই মামলার রায় ঘোষণা হল।
