
পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বভারতীতে স্থায়ী উপাচার্য নেই। নেই স্থায়ী কর্মসচিব। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বহু উন্নয়নমূলক কাজ, মউ স্বাক্ষর, নিয়োগ, পদোন্নতি প্রভৃতি কাজ প্রায় স্তব্ধ। আর এরই মাঝে দিল্লিতে বিশ্বভারতীর স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে সাক্ষাৎকার পর্ব শুরু হতেই জোর জল্পনা তৈরি হয়েছে বিশ্বভারতীর অন্দরে। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি নিজেদের লোককে উপাচার্য করে পাঠাতে চাইছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাই এবার কে হবেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য, সেদিকেই নজর রয়েছে সকলের।
উল্লেখ্য, দু'বছরের বেশি সময় ধরে উপাচার্য, কর্মসচিবের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে ভারপ্রাপ্তরাই চালাচ্ছেন বিশ্বভারতী। ফলে বিশ্বভারতীর বহু কাজ আটকে পড়ে আছে। অনেক কর্মী, অধ্যাপক-অধ্যাপিকার পদোন্নতি আটকে রয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষরের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলিও বন্ধ হয়ে পড়েছে।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের সুপারিশের ভিত্তিতে ২০১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্বভারতীর উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্তকে বরখাস্ত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন পরিদর্শক তথা রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। এরপর থেকেই সহ-উপাচার্য স্বপন কুমার দত্ত সেই পদে অস্থায়ীভাবে দায়িত্ব নেন। তাঁর মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে বিশ্বভারতীর অধিকর্তা সবুজকলি সেনকে উপাচার্যের দায়িত্ব দেয় কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। একইভাবে বিশ্বভারতীর কর্মসচিব ডি গুণশেখরণ ইস্তফা দেওয়ার পর থেকে ওই পদে স্থায়ী কোনও কর্মসচিব নেই দীর্ঘদিন। বিশ্বভারতীর মতো একটি আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য ও কর্মসচিবের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ দুটি দুই বছরের বেশি সময় ধরে অস্থায়ী হিসাবেই পড়ে রয়েছে। এর ফলে চরম সমস্যায় পড়ছেন কর্মী থেকে শুরু করে বিশ্বভারতীর অধ্যাপক-অধ্যাপিকা, শিক্ষক-শিক্ষিকা, আধিকারিকরাও। অনেকেরই পদোন্নতি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে। এমনকী, বহু জায়গায় নিয়োগ প্রক্রিয়াও স্থগিত হয়ে আছে।
উল্লেখ্য, কোনও ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বা কর্মসচিব কারোর পদোন্নতি, নিয়োগ, চুক্তি স্বাক্ষর, কোনও বড় অঙ্কের আর্থিক বরাদ্দ, কোনও বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে আইন প্রণয়ন করতে পারেন না। তাই এই বিষয়গুলি বন্ধ হয়ে পড়েছে অনেক দিন ধরে। এক কথায় বিশ্বভারতীর উন্নয়নে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, এবার বিশ্বভারতীতে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে দিল্লিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশ্বভারতীর একাংশের বক্তব্য, ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে বিশ্বভারতীতে নিজেদের লোককে উপাচার্য করে পাঠাতে চাইছে বিজেপি। এদিকে, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও কয়েকজন অধ্যাপক, অধ্যাপিকা উপাচার্যের দৌড়ে রয়েছেন। রাজ্যের একমাত্র কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বভারতীতে কে হবেন উপাচার্য, এখন সকলের নজর সেদিকেই। যদিও, এই বিষয়ে এখনই কেউ কিছু বলতে নারাজ।
