
ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,মেমারিঃ বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেল প্রায় ১৭ জন শ্রমিক। মঙ্গলবার ভোরে ধান রোয়ার কাজে যাওয়ার সময় পূর্ব বর্ধমান জেলার মেমারি-মন্তেশ্বরের মাঝ বরাবর বাঁকা নদীতে উল্টে যায় যাত্রী বোঝাই একটি নৌকা।নৌকাটিতে ১১ জন পুরুষ সহ ৬ জন মহিলাও উঠেছিল। প্রত্যেকেই চাষের কাজে মেমারির বিভিন্ন গ্রাম থেকে মন্তেশ্বর যাচ্ছিল।
জানা গেছে, নৌকাটি ছাড়ার পরেই নীচ থেকে জল ঢুকতে দেখেন কয়েকজন যাত্রী। আর এরপরই হুড়োহুড়ি পড়ে যায় বাকিদের মধ্যে। এই সময় কয়েকজন নৌকা থেকে ঝাঁপ মেরে দেয় নদিতে। আর এই হুড়োহুড়িতেই উল্টে যায় নৌকা। যদিও স্থানীয় কয়েকজনের চেষ্টায় সকলকেই উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রুকাশপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান হাসমত মোল্লা।
তিনি জানিয়েছেন, নৌকাটি ডুবে যাওয়ায় সময় সেটিতে ১৬ থেকে ১৭ জন যাত্রী ছিল। প্রত্যেকেই ধান রোয়ার কাজে মেমারির বিভিন্ন গ্রাম থেকে মন্তেস্বর যাচ্ছিল। তবে নৌকা এবং প্রায় ৬ টি সাইকেল জলের তোরে ভেসে গেছে। সেগুলি উদ্ধারের কাজ চলছে। হাসমত মোল্লা জানিয়েছেন, আজকের ঘটনার পর নদী পারাপার সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নজরদারি চালানোর জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এদিকে,স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্জয় মণ্ডল, রাজকুমার মণ্ডলদের অভিযোগ, এদিন ভোর সারে ৫ টার নাগদ এই ঘটনা ঘটলেও সকাল ১০ টা পর্যন্ত প্রশাসনের কাউকেই দেখতে পাওয়া যায়নি। তারা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে বাঁকা নদীর উপর পাকা সেতুর দাবি করে আসছে এই এলাকার জনগন।কিন্তু বাম, ডান কোন সরকারের তরফ থেকে পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি আজও।
উল্লেখ্য, একদিকে মন্তেশ্বর ব্লকের জামনা অঞ্চলের মরাইপিড়ী গ্রাম অন্যদিকে মেমারি-২ ব্লকের বোহারা গ্রাম পঞ্চায়েতের রুকাশপুর গ্রাম। এই দুই গ্রাম পঞ্চায়েতের মাঝ বরাবর বাঁকা নদীটি প্রবাহমান। বর্ষায় জল বাড়ায় এমনিতেই নদী ফুঁসছে। স্কুল, বাজার, চাষবাস করতে হাজারো মানুষ প্রতিদিনই এই নদী পেরিয়ে যাতায়াত করেন। মঙ্গলবার বাঁকা নদীর যে অংশে নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটেছে তার থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে পাকা সেতু। একদিকে নাদনঘাটের বাগাডাঙ্গা ব্রিজ অন্যদিকে মেমারি-মালডাঙগা রোডে ঝিকরা ব্রিজ। দূরত্ব প্রায় ৩০ কিলোমিটার। তাই মেমারির রুকাশপুর ও মন্তেস্বরের জামনার মাঝে বাঁকা নদীতে দ্রুত পাকা সেতুর প্রয়োজন বলে দাবি উঠছে।
মন্তেশ্বরের বিধায়ক সৈকত পাঁজা জানিয়েছেন, নৌকা ডুবির ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।
