ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান:প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য প্রচারাভিযান চালানো সত্ত্বেও পূর্ব বর্ধমানে এখনও সম্পূর্ণ বন্ধ হয়নি প্রসবের সময় দাইমাদের ব্যবহার। এখনও বাড়িতেই প্রসবের এই ভাবনা নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন জেলা প্রশাসন। সোমবার জেলা প্রশাসনের মাসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার পর জেলাশাসক এব্যাপারে বিশেষ নজরদারির নির্দেশ দিলেন বিডিওদের। একইসঙ্গে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান তথা গ্রাম সংসদের সদস্যদেরও এব্যাপারে এগিয়ে আসার জন্য বলা হয়েছে। বৈঠকে আলোচনা হয় ডেঙ্গু বা ম্যালেরিয়ার মত পতঙ্গবাহিত রোগপ্রতিরোধ নিয়েও।
জেলাশাসক এদিন জানান, পূর্ব বর্ধমানে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের হার ৯৯.৯ শতাংশ। এই হার ১০০ শতাংশ করার উদ্যোগ নিচ্ছে জেলা প্রশাসন। তিনি জানান,গত বছর গোটা জেলায় মোট ৬১ হাজার প্রসব হয়,যার মধ্যে অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রসবের সংখ্যা ৭১ টি। এসব ক্ষেত্রে দাইমাদের দিয়ে বাড়িতেই প্রসবের ঘটনা ঘটেছে। এই ধরনের ঘটনা ভাতার এলাকায় অনেক বেশি ঘটেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন,যার সংখ্যা ২৫- ২৬টি।
জেলাশাসক জানান,অপ্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের কারণ হিসাবে জেলা প্রশাসনের কাছে যে রিপোর্ট রয়েছে তাতে দেখা গেছে ,জরুরী ভিত্তিক যোগাযোগের অভাবের জন্যই এই ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন,কোথাও টেলিফোনের মাধ্যমে যোগাযোগের অভাব, আবার কোথাও মাতৃযান বা অন্য কোনো গাড়ির অভাবের জন্যই এই ঘটনা ঘটেছে। এই সমস্যা দূর করতে এলাকার আশা কর্মীদের আরো সচেতন হতে ও পাড়ায় পাড়ায় গর্ভবতী মহিলাদের ওপর তদারকি বাড়ানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক। অন্যদিকে ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়ার মত রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে গ্রামীণ স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যব্যবস্থা এবং পুষ্টি কমিটির সদস্যদেরও ব্যাপকভাবে গ্রামে প্রচারাভিযানে নামার নির্দেশ জারী করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
এবিষয়ে বর্ধমান জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ গার্গী নাহা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই গোটা পূর্ব বর্ধমান জেলায় এই সংক্রান্ত তদারকি কর্মিটির প্রায় ৯০শতাংশ গঠন করা হয়েছে। গত ২২ ফেব্রুয়ারী এই কমিটির সদস্যদের নিয়ে বিভিন্ন ধাপে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারী থেকে ব্লকগুলিতে এই প্রশিক্ষণও শুরু হচ্ছে, চলবে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত। তিনি জানান,ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, কালাজ্বর, জাপানী এনকেফেলাইটিস,চিকুনগুনিয়া, ফাইলেরিয়া প্রভৃতি রোগের প্রাদুর্ভাব কমাতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি এই কমিটির সদস্যদের ব্যাঙ্ক এ্যাকাউণ্ট রক্ষণাবেক্ষণ, নৈমিত্তিক হিসাব সংরক্ষণ, অর্থ খরচের বিবরণী প্রভৃতি বিষয়েও সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে কমিটিগুলি নাবালিকা বিয়ে রদ সহ প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের মত বিষয় গুলির দিকেও কড়া নজর দেবে বলে তিনি জানান।
ছবি - সুরজ প্রসাদ