Headlines
Loading...
বিষাক্ত নেশার জালে জড়িয়ে যুবসমাজের ভবিষ্যত বিপদে, উদাসীন প্রশাসন

বিষাক্ত নেশার জালে জড়িয়ে যুবসমাজের ভবিষ্যত বিপদে, উদাসীন প্রশাসন


ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,দক্ষিণ দিনাজপুরঃ জেলায় নেশা সামগ্রীর তালিকা ক্রমশ দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়েছে। কী নেই সেই তালিকায় কাশির সিরাপ, আঠা, ঘুমের ওষুধ, ব্যাথার ইঞ্জেকশন থেকে ব্রাউন সুগার! শহরে সন্ধে নামলেই নেশা খোরদের অবাধ বিচরণ ক্ষেত্র হয়ে উঠছে কিছু নির্জন জায়গা। সেই তালিকায় কলেজপড়ুয়া থেকে শিশু বাদ যচ্ছে না কেউ। প্রশাসনিক ঢিলেমিতে প্রতিনিয়ত বেড়ে চলছে নেশা আসক্তদের সংখ্যা। জেলা পুলিশের তৎপরতায়য় কার্যত চোলাই শূন্য হয়ে গিয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার অধিকাংশ এলাকা।বহু এলাকায় ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে চোলাইয়ের ঠেক। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে  ভাটিখানা। কিন্তু পিছু ছাড়ছে না,উইথড্রোল সিনড্রোম এর অভিশাপে বিপজ্জনকভাবে ঘুমের ওষুধ মরাফিনজাত কাশির সিরাপ,ব্রাউন সুগারের মতো এই সব  নেশা।

কিন্তু কোথায় চলে এই ঠেক? হুঁশ আছে কি প্রশাসনের ? 
স্কুল ,কলেজের মাঠে ,সিনেমা হল ,ফাঁকা নির্জন জায়গা পেলেই বসে এই  নেশার আসর। সেখানে নেশা হয় মূলত গাঁজা ও আঠার। দক্ষিন দিনাজপুরের হিলি, বালুরঘাট, গঙ্গারামপুর সহ বহু  জায়গায় দিনে দিনে বাড়ছে নেশাগ্রস্থ মানুষের সংখ্যা।বালুরঘাট শহরের বাসস্টপ, কলেজপাড়া নদীপাড়,শশ্মান এলাকা পার্ক, অন্যদিকে গঙ্গারামপুরের হাইস্কুল পাড়া,রবীন্দ্রভবন এলাকা,গলাকাটা কলোনি, গঙ্গারামপুর চৌমাথা মোড় সহ গ্রামেগঞ্জে বহু এলাকায় একদম  সস্তায় পাওয়া যাচ্ছে এই মাদক দ্রব্য।৫০০ টাকার বিনিময়ে মিলছে এক পুরিয়া ব্রাউন সুগার। 
পুলিশ গোয়েন্দাদের কাছে  এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য থাকা সত্বেও, শুধুমাত্র নজরদারির অভাবে সমানেই চলছে রমরমিয়ে ব্যবসা ।ওষুধের দোকানগুলিও ঘুমের ওষুধ ও কাশির সিরাপ বেচে লাভের অঙ্ক দিন দিন বাড়িয়ে নিচ্ছে। এলাকা চোলাই মদ শূন্য হলেও  নেশা কিন্তু  পিছু ছাড়ছে না যুব সমাজের। নেশায় এত পরিমাণে আসক্ত করে দিয়েছে যে ঘুম না এসে মাথা ঝিমঝিম করছে, ফলে একটু ঘুমের জন্য মানুষ ছুটছে ওষুধের দোকানে। কেউ ঘুমের ওষুধ চাইছেন,কেউ বা কাশির সিরাপ। ডাক্তার দেখানো সামর্থ্য নেই। প্রেসক্রিপশন ছাড়াই চলছে ওষুধ বিক্রি । ফলে  ওষুধ ও কাশির সিরাপ বিক্রি করেই সমানে লাভবান ঔষুধ বিক্রেতারা। পাশাপাশি বৃদ্ধি পাচ্ছে ব্রাউন সুগারের রমরমা ব্যাবসাও। 
তবে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বিপজ্জনক নেশার তালিকায় রয়েছে আঠা। আঠার নেশা আক্রান্তদের মধ্যে সব চেয়ে বেশি স্কুল,কলেজ পড়ুয়া যেমন আছে, শিশুরাও এই নেশায় চূড়ান্ত ভাবে আসক্ত হয়ে পড়ছে। 
একটি প্লাস্টিকের মধ্যে টিউব থেকে আঠা ঢেলে সেটা নিশ্বাসের সঙ্গে নাকমুখ দিয়ে টেনে আচ্ছন্ন থাকছে আসক্তরা। মুদিখানা থেকে পান সিগারেটের দোকান সর্বত্রই মেলে এই আঠা। নেশা আসক্তদের কথায়, ‘পকেটে ভরে কোথাও আড়ালে চলে এলেই হল। নেশা করার জন্য কোনও হ্যাপা নেই। চাই স্রেফ একটা প্লাস্টিকের প্যাকেট।' এই নেশার সঙ্গে চলছে বেশ কিছু কাফ সিরাপও। চায়ের দোকানে বসে, গোপনে দিব্যি চলছে সেই সব নেশার ঠেকও। 
অবৈধ ভাবে কাফ সিরাপ পাচারে জেলায় বহু বার অনেক পাচারকারীরাও ধরা পড়ছে পুলিশের জালে।তবুও দমানো যায়নি এই ব্যবসার বাড়বাড়ন্ত। 
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে,যে সমস্ত দোকানগুলি নেশার ওষুধ দিতে অস্বীকার করেছেন, সেই সমস্ত এলাকায় বেড়ে গিয়েছে ব্রাউন সুগারের বিক্রি। বিগত কয়েক মাসে ৯০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।গ্রেফতার হয়েছে ৮ জন ড্রাগ সেলারও। নেশাজাত দ্রব্যগুলি শহরে যাতে না ঢুকতে পারে সেদিকে আরও নজরদারি বাড়ানোর প্রয়োজন বলে দাবি করছে জেলার বাসিন্দারা।  
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});