ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: বর্ধমান-কাটোয়া রেলপথ এখনই বন্ধ করে দেবার কোনও নির্দেশ তাঁর কাছে আসেনি বলে শনিবার জানালেন বর্ধমান স্টেশন ম্যানেজার স্বপন অধিকারী। বরং তিনি জানান,ব্যাণ্ডেল থেকে কাটোয়া হয়ে বর্ধমান এবং ব্যাণ্ডেলে পৌঁছানোর জন্য রেলদপ্তর একটি নতুন সার্কুলার রেলপথ তৈরীর কাজ শুরু করেছে। কিন্তু বর্ধমান-কাটোয়া সহ রাজ্যের ৮টি রেলপথকে অলাভজনক বলে তুলে দেবার যে বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে , সে ব্যাপারে কোনো নির্দেশ রেল দপ্তর থেকে তাঁর কাছে এসে পৌঁছয়নি বলেই স্বপন বাবু জানিয়েছেন।
এদিকে, বর্ধমান-কাটোয়া সহ গোটা রাজ্যের ৮টি রেলপথকে তুলে দেবার রেলমন্ত্রকের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বৃহত্তর আন্দোলন করার হুমকি দিলেন বলগোনা-বর্ধমান রেলওয়ে প্যাসেঞ্জার্স ওয়েলফেয়ার এ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা। শনিবার বর্ধমান ষ্টেশনের ৮নং প্ল্যাটফর্মে রেলমন্ত্রকের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মুখর হন তারা। সংগঠনের সভাপতি কৃষ্ণবিনোদ যশ এদিন জানান,২০১২ সালে বর্ধমান থেকে বলগোনা পর্যন্ত ব্রডগেজ চালু হয়। চলতি জানুয়ারী মাসে বলগোনা থেকে কাটোয়া পর্যন্ত রেলপথ চালু হয়েছে। ফলে এখনই এই রেলপথের লাভ লোকসান দেখার মত কোনো ঘটনাই ঘটেনি। শুরুতেই যদি এই রেলপথ বন্ধ করে দেওয়া হয় তাহলে তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন।
অন্যদিকে বর্ধমান-কাটোয়া রেলপথ চালুর সাথে সাথে তা বন্ধ করে দেবার সিদ্ধান্তে রীতিমত ক্ষুব্ধ এই রুটের সাধারণ যাত্রীরাও। ভাতারের বাসিন্দা লীনা হাজরা তাঁর মেয়ে অসীমা দত্তকে সঙ্গে নিয়ে এদিন বর্ধমানে এসেছিলেন। তাঁর মতে এটা খুবই খারাপ ব্যাপার। মানুষ বাসের চেয়ে রেলপথে যাতায়াত করতেই বেশী পছন্দ করেন। তবে টিকিট কাটার ব্যাপারেও সাধারণ যাত্রীদেরও একটু সচেতন হওয়া উচিত। রেলপথ বন্ধ করার বিষয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বর্ধমান এমবিসি ইনষ্টিটিউটের ইলেকট্রিক্যাল দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ভিক্টর ব্যানার্জ্জী, ইলেকট্রিক্যাল তৃতীয় বর্ষের ছাত্র বিশ্বজিৎ
শীল, মেকানিক্যাল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র দিবাকর দাস, সিভিলের প্রথম বর্ষের ছাত্র বিনয় সিংহ প্রমুখও। তাদের বক্তব্য, এতে অসুবিধায় পড়বেন এই রুটের ছাত্র-ছাত্রীরাও।
ষ্টেশন ম্যানেজার স্বপন অধিকারী জানান,রেলওয়ে স্ট্যাণ্ডিং কমিটির একটি রুটিন অডিট রিপোর্ট প্রতিবছরই রাজ্য সরকারগুলিকে পাঠানো হয়। এক্ষেত্রেও তাই করা হয়েছে। তিনি জানান, রেলওয়ে ইণ্টারন্যাল যে অডিট রিপোর্ট তথা পার্লামেণ্টারী অডিট রিপোর্ট যা রাজ্য সরকারকে দেওয়া হয়েছে তা ২০১৭ সালের। তাঁর মতে ,পুরোদমে কাটোয়া পর্যন্ত ট্রেন চালু হলে লোকসান তো নয়ই বরং লাভজনক হবে। তিনি জানিয়েছেন, ২৪৫ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয় করে রেলমন্ত্রক এই
ন্যারোগেজ রেলপথকে ব্রডগেজে পরিণত করেছেন। স্বাভাবিকভাবেই এই রেলপথকে বন্ধ করার কোনো প্রশ্নই নেই। তিনি জানান, প্রতিদিন গড়ে বর্ধমান থেকে বলগোনা পর্যন্ত ২৮৫টি টিকিট বিক্রি হচ্ছে। এই সঙ্গে রয়েছে মাসিক টিকিট বিক্রি এবং অন্যান্য ষ্টেশন থেকে টিকিট বিক্রিও। তিনি জানিয়েছেন, গড়ে প্রতিটি ট্রেনেই ৬০ শতাংশ যাত্রী থাকছেন। তাই এখনই এটাকে অলাভজনক বলা যাবে না।
ছবি - সুরজ প্রসাদ