Headlines
Loading...
বড়দিনের কেকের স্বাদ নেওয়ার অপেক্ষায় বর্ধমানের সব ধর্মের মানুষ।

বড়দিনের কেকের স্বাদ নেওয়ার অপেক্ষায় বর্ধমানের সব ধর্মের মানুষ।


মালা ঘোষ,বর্ধমান: 'বড়দিন' -শব্দটা উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গেই চোখের সামনে যে ছবিটা ভেসে ওঠে তা হলো মাতা মেরির কোলে ছোট্ট যীশু, গীর্জার ঘন্টাধ্বনি, ষ্টার আর কেক পেস্ট্রির মেলা। দোকানে দোকানে রঙিন ফিতের বন্ধনে লোভনীয় কেকের সম্ভার শুধু খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদেরই নয়,আপামর বাঙালিকেই অনুভব করায় ২৫ ডিসেম্বর মানে খুশির দিন-উৎসবের দিন। ঝলমলে আলোর রোশনাই আর চার্চে চার্চে মানুষের ভিড়ে উদযাপন হয় মানুষের পরিত্রাতা যীশুর জন্মদিন।

সারা পৃথিবীর পাশাপাশি এ রাজ্যের একটি ছোট্ট জেলার ছোট্ট শহর বর্ধমানও বড়দিনের উৎসবে মাতে একইরকমভাবে। আলোর মালায় সাজে শহরের চার্চ থেকে রাস্তাঘাট। কেকের কারখানাগুলিতে দেখা যায় চরম ব্যস্ততা। এ সময় নানাধরণের কেকের চাহিদা থাকে প্রচুর। তাই কারখানাগুলোতে কথা বলার সময় থাকে না কারোরই। তারই মাঝে কেক তৈরী নিয়ে কিছু প্রশ্নের উত্তর দিলেন শহরের উপকণ্ঠে খালের পুলের চকপুরোহিতের ডলফিন বেকারির মালিক শেখ সিকান্দার বাদশা। জানালেন,রোজ কম করে ২০০০ পিস্ কেক বানাতে হচ্ছে এখন। এই কেক যাচ্ছে বর্ধমান শহরের বিভিন্ন দোকানে তো বটেই, এমনকি শহর ছাড়িয়ে কেক যাচ্ছে আশেপাশের জেলাতেও। ৪০ জন কর্মী সকাল থেকে রাত পর্যন্ত একটানা পরিশ্রম করছেন এজন্য। নানা স্বাদের প্রতিটি কেকের ওজন ২৫০ থেকে ৫০০ গ্রাম। দাম ৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা অবধি।

তাদের তৈরী কেকের এত চাহিদা কেন? 
ডলফিনের মালিক জানালেন আমরা সর্বদা আন্তর্জাতিক মানের উপকরণ দিয়ে কেক বানাই। তাই এই কেকের স্বাদের পাশাপাশি গুনগত মানও খুব ভাল। গত ১৮ বছর ধরে কেক তৈরী করছি, এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি বরং চাহিদা বেড়েছে। এখন বেশিরভাগই অর্ডারের কেক বানাই।
বাজার ঘুরে দেখা গেল ডলফিনের তৈরী নানা নামের ও নানা ধরণের কেকের প্যাকেট দোকানের শো-কেস জুড়ে সাজানো রয়েছে।  বিক্রি বেশি ডিজায়ার চোকো, রয়্যাল, প্রিমিস এগলেস, বাটার চয়েস, কাজু পেস্ট, চোকো সিল্ক, আর ডলফিন সেলিব্রেশন- এর।  এর মধ্যে প্রিমিস এগলেসের দাম সবচেয়ে বেশি , জানালেন সিকান্দার সাহেব। ৫০ টাকা দামের জাম্বো কেকের চাহিদাও বেশ ভালো। এছাড়া কম দামের মধ্যে সুপার চয়েস ,গুড ডে, হাই ডেন প্রভৃতিও বিকোচ্ছে বেশ।


শেখ সিকান্দার জানালেন, সারা বছর এইসব কেকের চাহিদা থাকেনা। তাই বছরের অন্য সময় কেক বড় একটা বানানো হয়না। সে সময় তাদের কারখানায় বিস্কুট বা ব্রেড বানানোর কাজ চলে। কিন্তু বড়দিন বা ইংরেজি নববর্ষের সময় এলেই লেগে পড়তে হয় কেক তৈরিতে।  কাজের চাপ থাকে বলে কিছু বাড়তি শ্রমিকও নিয়োগ করতে হয়। এ সময় পরীক্ষা হয়ে যাওয়ায় অনেক ছেলেও আসে কেক তৈরির কাজ শিখতে। তারাও কেক বানানোর কাজ করে। বড়দিনের কেক বানানো হয় ডিসেম্বরের শুরু থেকে।
কেক কেটে প্রভু যীশুর আবির্ভাব ক্ষণটি পালনের অপেক্ষায় বিশ্বের খ্রিস্টান সমাজ। কিন্তু পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে যে কোনো উৎসবে ভেসে যেতে বাঙালির জুড়ি নেই। তাই বড়দিনের আনন্দের অপেক্ষায় সব ধর্মের বাঙালিও। তার সঙ্গে উৎসবে মাততে তৈরী বর্ধমানবাসীও। তৈরী ক্রিসমাসের কেকের স্বাদ নিতেও। 
                                                                                                                        ছবি - সুরজ প্রসাদ 



(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});