পল মৈত্র, দক্ষিন দিনাজপুরঃ বন ভূমি এবং পক্ষীনিবাস এলাকা উন্নয়নের মধ্যে দিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার কাজ শুরু হচ্ছে সরকারি ভাবে। চারটি প্রকল্পের জন্য উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর থেকে বরাদ্দ মিলছে প্রায় ৯ কোটি টাকা। দীর্ঘদিনের দাবীতে থাকা জেলার পর্যটনশিল্প নিয়ে রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগে খুশি জেলাবাসী।
জানা গেছে, চারটি পর্যটনশিল্পের মধ্যে রয়েছে তিনটি বনাঞ্চল এবং একটি পক্ষীনিবাস এলাকা। যার মধ্যে কুমারগঞ্জ ব্লকের আঙিনা পাখিরালয়। প্রতিবছর লক্ষ-লক্ষ পরিযায়ী পাখির আবাসস্থল ওই এলাকা। বিগত ১৪ বছর ধরে এলাকার মানুষের দাবি ছিল ওই এলাকায় পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার।
বামেদের উদাসীনতা থাকলেও তৃণমূল সরকারের উদ্যোগে জমি হস্তান্তর সহ নানান প্রক্রিয়ার পর ওই এলাকাকে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার কাজে অবশেষে বরাদ্দ মিলল উত্তরবঙ্গ দফতর থেকে। সেখানে প্রথমেই দেওয়া হচ্ছে সীমানা প্রাচীর, সাজানো গ্রীল, গার্ড ওয়াল, কচ্ছপ সংরক্ষণের পুকুর, মীনাধার, ওয়াচ টাওয়ার, ট্যুরিজম সেন্টার, পাখীদের চিকিৎসা সেন্টার, প্রবেশদ্বার সহ অনেককিছু। এই কাজে বরাদ্দ হয়েছে ৭ কোটি ২৪ লক্ষ ৫৭ হাজার ৯৮৭ টাকা। অন্যদিকে বনভূমির মধ্যে থাকা কুশমন্ডি ব্লকের আয়রা ফরেস্টের ওয়েভ অয়্যার রঙিন ফেন্সিং, নিরপত্তা জনিত কারনে ট্যুরিস্ট ট্রেন্ট ও বার্ড রেসকিউ সেন্টার সহ একাধিক কাজ হবে বরাদ্দকৃত ৫১ লক্ষ ৯২৪ হাজার ২৫ টাকায়। পাশাপাশি বালুরঘাট পঞ্চায়েত সমিতি পরিচালিত আরণ্যক পার্ক ও বনাঞ্চলকে আরও অত্যাধুনিক করতে বরাদ্দ হয়েছে ৭৮ লক্ষ ৬৬ হাজার (প্রকল্পটি প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে) টাকা। এছাড়া বালুরঘাট শহর থেকে সাত কিলোমিটার দূরবর্তী অঞ্চলে অন্যতম বনাঞ্চল বা পিকনিক স্পট দোগাছি ফরেস্টে ফেন্সিং দিয়ে গড়া হবে প্রজাপ্রতি পার্ক। এই ফরেস্টটিতে বছর কয়েক আগে সামান্য বসার জায়গা বানানো হলেও রক্ষনাবেক্ষনের অভাব রয়েছে। সেগুলি নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে বলেই দপ্তর সূত্রে খবর।
পরিবেশপ্রেমী তথা আঙিনা বার্ডস এন্ড এনভাইরনমেন্ট প্রটেকশন সমিতির সম্পাদক বিশ্বজিৎ বসাক বলেন, জেলার প্রাচীন ইতিহাস, আঙিনা পাখিরালয়, বনাঞ্চল এবং অন্যান্য নানান সম্পদ মিলিয়ে পর্যটনকেন্দ্র গড়ার দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। তিনি নিজে এবং গ্রামবাসীরা ওই পাখিরালয়ের জন্য জমি দান করেছেন। কেন না পর্যটনের মধ্যে দিয়ে জেলাতে শিল্প গড়ে তোলা যায় তা তিনি আগেই তার দাবীতে রেখেছিলেন। অবশেষে রাজ্য সরকারের সদিচ্ছায় হল জেলাবাসীর স্বপ্নপূরন। মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্যই তাদের এই সফলতা বলে দাবি বিশ্বজিৎ বাবুর।
জেলা শাসক শরদ কুমার দ্বিবেদী জানান, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের বরাদ্দ অর্থে এই কাজগুলি হবে। কাজের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কাজগুলি দ্রুত তরান্বিত করতে সাংসদ অর্পিতা ঘোষ যথাযথ ভাবে সহায়তা করেছেন। খুব শীঘ্রই তারা জেলায় এই পর্যটনকেন্দ্রগুলি চালু করতে পারবেন বলেই আশা।