Headlines
Loading...
কালনা গঞ্জে মহিষমর্দিনী পুজো শুরু। আজ পঞ্চমী।

কালনা গঞ্জে মহিষমর্দিনী পুজো শুরু। আজ পঞ্চমী।

পল্লব ঘোষ,কালনা :  আজ থেকে পূর্ব বর্ধমানের কালনায় শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী মহিষমর্দ্দিনী পুজো। কালনা গঞ্জের এই পুজো বর্ধমান জেলার প্রাচীন পুজোগুলির একটি। কথিত আছে আনুমানিক ১৭৬৪ - ৬৮ সালে তৎকালীন রানাঘাটের ব্যাবসায়ী ঈশ্বর প্রসাদ পালচৌধুরীর উদ্যোগে শুরু হয়েছিল এই পুজো। বর্তমানে মহিষমর্দ্দিনী ঠাকুর মন্দিরের কাছে যে গঙ্গার ঘাটটি আছে সেটি তখন কালনা গঞ্জের ব্যাবসার প্রাণকেন্দ্র ছিল। বর্ধমান রাজ আমলে এই ঘাটটির নাম ছিলো হপ্তাঘাট। সেই কারনেই এখানে তৈরি হয়েছিলো হোরমিলার কোম্পানির স্টিমার ঘাট। এখানেই রানাঘাটের ব্যাবসায়ী ঈশ্বর প্রসাদ পালচৌধুরী ব্যাবসা শুরু করেন। তিনি ছিলেন সৎ ও ধর্মভীরু মানুষ। জনশ্রুতি আছে ঈশ্বরীপ্রসাদ একদিন স্বপ্নাদেশ পান। দেবী বলেন রানাঘাটের পালচৌধুরী বাড়িতে সে আর থাকবে না। আমার এখানে পুজোর আয়োজন কর। পরের দিন ঈশ্বরীপ্রসাদ গঙ্গায় স্নান করতে গিয়ে দেখেন হপ্তাঘাটের অশত্থ গাছের শিকড়ে আটকে আছে দেবীর পাটা। সময়টা ছিলো বর্ষা কাল।সেই সময় হোগলা পাতার ছাউনি দিয়ে প্রথম পুজো শুরু হয়।
আনুমানিক ১৭৬৪ - ৬৮ সালে ঠাকুরের মন্দির তৈরি হয়। সেই সময় ব্যাবসাদারদের থেকে অর্থ নিয়ে পুজো হত। মহিষমর্দিনী পুজো হয় তান্ত্রিক মতে। দেবী দূর্গার আদলে হলেও কিন্ত দূর্গা নয়। ঠাকুরের দুপাশে থাকেন জয়া বিজয়া ।কার্তিক ও গণেশ এখানে পুজো পান না।
কয়েক বছর এই ভাবেই পুজো চলার পর সময় পরিবর্তন করে শুরু হয় চৈত্র মাসে। এরপর টানা পুজো হওয়ার পর সকল ব্যাবসায়ীরা ঠিক করলেন ব্যাবসার আয় ব্যায়ের মাসে পুজো না করে মায়ের পুজো হোক শ্রাবনী পূর্ণিমা তিথিতে । তাদের যুক্তি ছিল এই সময় বর্ষাকাল। ব্যাবসাও থাকে মন্দ । তাই পন্ডিতদের বিধান মেনে আজও মা মহিষমর্দিনীর পুজো হয় শ্রাবন মাসের পূর্ণিমা তিথি ধরেই ।
এই পুজো কে কেন্দ্র করে আগামী ৭দিন ধুমধামের সীমা থাকেনা। প্রতিদিন বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পুজো কমিটি। যাত্রাপালা,নৃত্যানুষ্ঠান,লোকগীতি,বাউল,পুতুল নাচ আরও কত কি। শহরের বিশিষ্ট নাগরিকদের সৌজন্যে আয়োজন করা হয় অন্নকূট। বসে বিশাল মেলা। গঙ্গার এপার ওপর থেকে কাতারে কাতারে মানুষ প্রতিদিন ভিড় করেন ঠাকুর ও মেলা দেখতে। 
                                                                                                                                         ছবি:- শুভদীপ চ্যাটার্জী

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});