
জেলা রাজ্য
স্বাস্থ্য
বর্ধমানের গোদায় বেসরকারি হাসপাতালের ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু নির্মাণ শ্রমিকের
ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: বর্ধমানের গোদায় স্বাস্থ্য উপনগরির ভিতর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ছাদের নিচে কাঁচ পরিষ্কার করার সময় নিচে পড়ে গিয়ে বুধবার সকালে এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। মৃত শ্রমিকের নাম শেখ সিরাজউদ্দিন(৩৫)। বাড়ি কলকাতার পার্ক সার্কাস এলাকায়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত পাঁচ দিন ধরে সিরাজউদ্দিন ও তার তুই আত্মীয় মহম্মদ আমিন ও মহম্মদ ইব্রাহিম খান একটি এজেন্সির মাধ্যমে এই বেসরকারি হাসপাতালে কাঁচ পরিষ্কার করার কাজ করছিল। এই কাজ করার জন্য যেসমস্ত যন্ত্রপাতি ও সুরক্ষা নিয়ে কাজ করতে হয় সেই সবকিছুই তাদের সঙ্গে ছিল। তবে এদিন শেখ সিরাজউদ্দিন নামে ওই শ্রমিকের অন্যমস্কতায় ভয়ানক বিপদ ঘটে গেছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, যেহেতু হাসপাতালের বাইরের অংশ গুলো সবটাই মোটা কাঁচ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে, প্রায়ই কাঁচ পরিষ্কার করার প্রয়োজন হয়। একদম ছয় তলার ছাদ থেকে নিচে পর্যন্ত এই কাঁচ লাগানো আছে। ফলে উপর থেকে পরিষ্কার করতে করতে মিস্ত্রিরা নিচের দিকে নামছিল। আর সেই সময় ডিসেন্ডার মেসিন থেকে সেফটি বেল্ট খুলে যাওয়ায় ওই শ্রমিক সরাসরি নিচে এসে পড়ে। ঘটনাটি ঘটেছে সকাল প্রায় ৬টা নাগাদ। এই দুর্ঘটনার পরই ওই শ্রমিককে সঙ্গে সঙ্গে তুলে নিয়ে হসপিটালের ইমারজেন্সি তে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক সিরাজউদ্দিনের বুকে পাম্প করে শ্বাসপ্রশ্বাস সচল করানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু অনেক উপর থেকে নিচে পড়ার কারণেই ওই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়ে দেন চিকিৎসক।
মৃতের আত্মীয় মহ: ইব্রাহিম খান বলেন," আমিও একইসাথে এদিন কাজ করছিলাম, আমিন ও কাজ করছিল। আমদের তিনজনই ডিসেন্ডার মেসিন কাঁচের সঙ্গে লাগিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম। মনে হয় সিরাজউদ্দিন মেশিনের সঙ্গে সেফটি বেল্টের লক লাগাতে ভুলে গিয়েছিল। আমরা ওর নিচে ছিলাম। ও যখন উপর থেকে পড়ে যেতে থাকে আমিন ওর হাত টা ধরে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আটকে রাখতে পারেনি। চোখের সামনে জলজ্যান্ত ছেলেটা মরে গেল। কিছু ভাবতে পারছিনা।"
এদিকে এই দুর্ঘটনার খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে হাসপাতালের আধিকারিকদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তারা মিটিংয়ে ব্যস্ত বলে জানানো হয়। ফলে দুর্ঘটনার ঘটনায় হসপিটাল কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য জানা যায়নি।
এদিন সাত সকালে দুর্ঘটনা ঘটলেও মৃতের আত্মীয়দের অভিযোগ, তারা খবর শুনে কলকাতা থেকে বর্ধমান চলে আসলেও বেলা ১২টা বেজে গেলেও মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়নি হাসপাতাল থেকে। পরে দুপুরের দিকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয় মৃতদেহ।
প্রথম ছবি ইনটারনেট থেকে সংগৃহীত