Headlines
Loading...
পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষের পদত্যাগের ইচ্ছা ঘিরে তীব্র আলোড়ন দলে

পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষের পদত্যাগের ইচ্ছা ঘিরে তীব্র আলোড়ন দলে


ফোকাস বেঙ্গল ডেস্কপূর্ব বর্ধমান: এবার তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরেই ভাঙন স্পষ্ট হয়ে গেল পূর্ব বর্ধমান জেলায়। মঙ্গলবার রীতিমত সাংবাদিকদের ডেকে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের নারী ও শিশু এবং সমাজ কল্যাণ দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ মিঠু মাঝি তাঁর পদ থেকে পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। এদিন মিঠু মাঝি জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই তিনি অপমানিত হচ্ছিলেন এই সরকারী পদে থেকে। তাই বাধ্য হয়েই তিনি এই কর্মাধ্যক্ষের পদ থেকে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।মঙ্গলবার তিনি তাঁর পদত্যাগপত্র জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়ার কাছে পাঠিয়ে দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। 



মিঠু মাঝি জানিয়েছেন, তিনি পরপর দুবার জেলাপরিষদের জামালপুর আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। এর আগে তিনি বন ও ভূমি দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ হিসাবে কাজ করেছেন। কিন্তু শেষ পঞ্চায়েত নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করার পর তাঁকে নারী ও শিশু, সমাজকল্যাণ দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ করা হয়। কিন্তু তিনি দেখতে পাচ্ছেন, তাঁকে কোনো কিছু না জানিয়েই সবরকমের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। তাঁর দপ্তরের অধীন যে সমস্ত বিষয় সে সম্পর্কেও তাঁকে কিছু জানানো হচ্ছে না। সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরই তাঁকে জানানো হচ্ছে। প্রসঙ্গত, তিনি জানিয়েছেন, গতবছর সবলা মেলা তাঁকে না জানিয়েই গলসীতে করা হয়েছিল। এবছর সবলা মেলা করা হচ্ছে সাতগেছিয়ায়। কিন্তু এবিষয়েও তাঁকে কিছুই আগাম জানানো হয়নি। সবকিছু ঠিক করে তাঁকে জানানো হয়েছে। 

মিঠু মাঝি জানিয়েছেন, এভাবে দিনের পর দিন তিনি উপেক্ষার পাত্রী হয়ে থাকতে রাজী নন। মিঠু দাবী করেছেন, এব্যাপারে তিনি দলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ সহ জেলা নেতৃত্ব এমনকি খোদ সভাধিপতিকেও জানিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। এমনকি এব্যাপারে কথা তোলায় তাঁকে কার্যত অপমানিতও করা হয়। মিঠু জানিয়েছেন, তিনি ত্রাণ বিভাগেরও কর্মাধ্যক্ষ। সাম্প্রতিককালে আমফানে ক্ষতিগ্রস্থদের সাহায্যের জন্য তিনি প্রতিটি জেলা পরিষদ সদস্যকে ৫টি করে ত্রিপল দেবার দাবী জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে অপমান করা হয়। স্বাভাবিকভাবেই তিনি সরকারী অর্থ খরচ করে এরপর প্রতিদিন জেলা পরিষদে আসা তিনি মানতে পারছেন না। তাই বাধ্য হয়েই তিনি পদত্যাগ করছেন। 

যদিও তিনি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ পদ থেকে ইস্তফা দিলেও তিনি তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদিকা হিসাবে এবং জেলা পরিষদের সদস্য হিসাবেই কাজ করে যাবেন বলে এদিন জানিয়েছেন। এমনকি তিনি তৃণমূল ছেড়ে অন্য দলেও যাচ্ছেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। অপরদিকে, এই বিষয় সম্পর্কে খোদ সভাধিপতি শম্পা ধাড়া জানিয়েছেন, এখনও এব্যাপারে তাঁকে কিছু জানানো হয়নি। মিঠু মাঝির লিখিত পদত্যাগ পেলে সেইমত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মিঠু মাঝির ক্ষোভ সম্পর্কে তিনি জানিয়েছেন, জেলা পরিষদের অপরাপর সমস্ত কর্মাধ্যক্ষই নিজেদের সম্মান নিয়েই কাজ করছেন। কিন্তু কেন মিঠু মাঝি এই সিদ্ধান্ত নিলেন তা তিনি জানেন না। প্রয়োজনে তিনি তাঁর সঙ্গে কথাও বলবেন বলে জানিয়েছেন। পাশাপাশি জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি দেবু টুডু জানিয়েছেন, এটা কোনো বিষয় নয়, আলোচনার মাধ্যমে সবকিছুই মিটমাট হয়ে যাবে।

অন্যদিকে বিজেপির জেলা যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক শুভম নিয়োগী জানিয়েছেন, তৃণমূল দলের মধ্যে কাটমনির বখরা ঠিক মত বন্টন না হওয়ার কারণেই দিকে দিকে এই ধরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। মাঝখান থেকে সাধারণ মানুষ তাদের পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, বিজেপি ক্ষমতায় এসে সাধারণ মানুষের প্রাপ্য ঠিকঠাক বুঝিয়ে দেবেন।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});